রোববার   ২০ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৬ ১৪৩২   ২১ শাওয়াল ১৪৪৬

সর্বশেষ:
মার্কিন যুদ্ধবিমানের ওপর উপসাগরীয় দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধে মার্কিন কংগ্রেসে বিল উত্থাপন ইরান-ইয়েমেনের কাছাকাছি পারমাণবিক বোমারু বিমান মোতায়েন কফিতে মশগুল ব্রিটেনে পলাতক সাবেক মন্ত্রীরা! নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধে বাংলাদেশের ভুল চিত্র তুলে ধরেছে ভূমিকম্পে ১৭০ প্রিয়জন হারালেন এক ইমাম ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত ট্রাম্প কি আসলেই তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন লিবিয়ায় অপহৃত ২৩ বাংলাদেশি উদ্ধার দুদিনে নিহত ১৩, চট্টগ্রামের জাঙ্গালিয়া যেভাবে মরণফাঁদ হয়ে উঠলো বাংলাদেশের অর্থপাচার তদন্তে ব্রিটিশ এমপিদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা ভেনিজুয়েলার তেল-গ্যাস কিনলেই শুল্কারোপের হুমকি ট্রাম্পের সাভারে চলন্ত বাসে আবার ডাকাতি, চালক ও সহকারী আটক ছুটিতে এটিএম সেবা সবসময় চালু রাখার নির্দেশ উসকানিতে প্রভাবিত না হতে বললেন সেনাপ্রধান রেড ফ্ল্যাগ সতর্কতার আওতায় ২৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ এনসিপি নেতা হান্নানের পথসভায় হামলা, আহত ‘অর্ধশতাধিক’ নির্বাচনী ট্রেনে বাংলাদেশ বাংলাদেশ সোসাইটি অব ব্র্রঙ্কসের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত সাবওয়ে ট্রেনে সন্তান প্রসব নিউইয়র্কে আইস পুলিশের বিশাল অফিস উদ্বোধন মেয়রের মামলা প্রত্যাহারে প্রসিকিউটরের পদত্যাগ হাসিনা নিজেই হত্যার নির্দেশদাতা জন্ম নাগরিকত্ব বাতিল আদেশ আটকে দিল আদালতে নিউইয়র্কে ডিমের ডজন ১২ ডলার নিউইয়র্কে ভালোবাসা দিবস উৎযাপন আমেরিকান বাংলাদেশী টেক কোয়ালিশন’র আত্মপ্রকাশ জামালপুর সমিতির সভাপতি সিদ্দিক ও সম্পাদক জাস্টিস শেখ হাসিনার আমলে বছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বাংলাদেশিদের অস্ত্রোপচার বাতিলে কলকাতাজুড়ে হাসপাতালে হাহাকার দি‌ল্লি যাওয়া ছাড়াই পাওয়া যাবে মে‌ক্সি‌কান ভিসা বাজার থেকে উধাও বোতলজাত সয়াবিন কেউ আপনার স্ত্রীকে ‘হট’ বললে সেটা কি ভালো লাগে, প্রশ্ন সানার পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে এবাদুলের মিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হংকং-দুবাইয়ে পাচারকারীরা বেপরোয়া ছিল শেখ পরিবারের প্রশ্রয়ে সোনার দাম দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য কতটুকু সত্য? দিনে মাত্র একবেলা খাচ্ছে গাজার অনেক মানুষ পছন্দের লোক নিয়োগ দিতে বদলে দেয়া হয় মেট্রোরেলের নিয়োগবিধি যানজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে দৈনিক ১৩৯ কোটি টাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নজর চার খাতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে বড় পতন হাথুরুসিংহের অপকর্ম ধামাচাপা দেন পাপন ‘ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ আমেরিকার জন্য বিশাল হুমকি হবে’ নীরবে সরবে চাঁদাবাজি পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ছাড়াই গুগল ম্যাপ ব্যবহারের উপায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ বাইডেনের ভাড়া ফাঁকিবাজদের ধরতে চলছে সাঁড়াশি অভিযান সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরীকে গুলি করে মরদেহ নিয়ে গেল বিএসএফ ভিসা ফি ছাড়াই এবার পাকিস্তান যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফি আটক সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয়বহুল সফরে ২৬ ব্যাংক এমডি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ সাবেক সেনাপ্রধান ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা দিনের বেলায় মরুভূমির চেয়েও উত্তপ্ত চাঁদ ডেঙ্গুতে একদিনে ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৩২৭ ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে ২৬৭ প্রবাসী বাংলাদেশি অক্টোবরের মধ্যেই ‘আন্দোলনের ফসল’ ঘরে তুলতে চায় বিএনপি শর্তসাপেক্ষে নিউইয়র্কে মসজিদে আজানের অনুমতি বাংলাদেশ থেকে বিনা খরচে মালয়েশিয়া গেলেন ৩১ কর্মী খেলাপি ঋণ কমাতে কঠোর নির্দেশ জার্মানে পাঁচ বছর বাস করলেই পাওয়া যাবে নাগরিকত্ব বিএনপি-জাপা বৈঠক সিঙ্গাপুরে বাইডেন প্রশাসনকে হাসিনার কড়া বার্তা এবার হাসিনার পাশে রাশিয়া বঙ্গ সম্মেলনের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা স্টুডেন্ট লোন মওকুফ প্রস্তাব বাতিল বাংলাদেশিদের ওপর উপর্যুপরি হামলা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আগে নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা করা: শেখ হাসিনা তামিমের অবসর অভিযোগের তীর পাপনের দিকে নিউইয়র্কে এখন চোরের উপদ্রুব যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে হাতিরঝিলের ক্ষতি হবেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতি, পাঁচ দিনে নিহত ৩৫ যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটছে বাখমুত থেকে পিছু হটেছে সেনারা, স্বীকার করল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণ ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোন হবে না, দাবি আবহাওয়া অধিদপ্তরের সুদানে যুদ্ধে সাড়ে ৪ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত : জাতিসংঘ পারস্য উপসাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে সারা দেশে ভোগান্তি রুশ হামলা সামলে ফের বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে যাচ্ছে ইউক্রেন রিজার্ভ সংকট, খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারের দুর্বল নীতিও দায়ী পূজার ‘জিন’ একা দেখতে পারলেই মিলবে লাখ টাকা! সিরিয়ায় আর্টিলারি হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল বাইডেন না দাঁড়ালে প্রার্থী হবেন কে নাইজেরিয়ায় ৭৪ জনকে গুলি করে হত্যা ভারতে বাড়ছে করোনা, বিধিনিষেধ জারি তিন রাজ্যে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন লুলা যে কোনো দিন খুলবে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল দেশে করোনার নতুন ধরন, সতর্কতা বিএনপির সব পদ থেকে বহিষ্কার আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করবো: মাহিয়া মাহি মর্মান্তিক, মেয়েটিকে ১২ কিলোমিটার টেনে নিয়ে গেল ঘাতক গাড়ি! স্ট্যামফোর্ড-আশাসহ ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বর্ষবরণে বায়ু-শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যে ধাক্কা কোনো ভুল মানুষকে পাশে রাখতে চাই না বাসস্থানের চরম সংকটে নিউইয়র্কবাসী ট্রাকসেল লাইনে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত একাকার! ছুটি ৬ মাসের বেশি হলে কুয়েতের ভিসা বাতিল ১০ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত চুক্তিতে বিয়ে করে ইউরোপে পাড়ি আইফোন ১৪ প্রোর ক্যামেরায় নতুন দুই সমস্যা পায়ের কিছু অংশ কাটা হলো গায়ক আকবরের ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ডলার নারী ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম
২৬৬

ইতিকাফ: করুণাময়ের উত্তম উপহার

প্রকাশিত: ২৫ মে ২০১৯  

‘ইতিকাফ’ আরবি শব্দ। যার অর্থ হলো অবস্থান করা, আবদ্ধ করা বা আবদ্ধ রাখা। 

পরিভাষায় ইতিকাফ হলো ইবাদতের উদ্দেশ্যে ইতিকাফের নিয়তে নিজেকে নির্দিষ্ট জায়গায় নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আবদ্ধ রাখা। 

রমজানের শেষ দশক তথা ২০ রমজানের দিন সূর্যাস্তের আগে থেকে ঈদের চাঁদ তথা শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়া বা ৩০ রমজান পূর্ণ হয়ে ওই দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত (৯ দিন বা ১০ দিন) ইতিকাফ করা সুন্নাতে মুআক্কাদাহ।

ইতিকাফ পবিত্র রমজান মাসের শেষ দশকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ আমল। এটি রমজান মাসের সামগ্রিক কল্যাণ ও বরকত লাভের জন্য অপূর্ব বলিষ্ঠ সহায়ক শক্তি। রহমত ও মাগফিরাতের দিনগুলোতে কোনো কারণে যদি ইবাদতে মত্ত হওয়ার, চিত্ত-মানস বিশুদ্ধ করার, হৃদয়ে একাগ্রতা জাগরুক করার এবং আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করার ও তাঁর অনুকম্পায় সিক্ত হওয়ার সৌভাগ্য অর্জিত নাও হয়ে থাকে, সে অপূরণীয় ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার জন্য পরম করুণাময়ের পক্ষ থেকে উত্তম উপহার হলো ইতিকাফ।

 

বান্দা রমজানের শুরু থেকে রোজা পালন, কোরআন তেলাওয়াত, তারাবীহ আদায়, দান-সদকা ইত্যাদি বিভিন্ন পুণ্যময় কাজে নিমগ্ন থাকার পর আল্লাহ তায়ালার আরো অনুগ্রহ-অনুকম্পা, ক্ষমা ও করুণার এবং বিশেষ নৈকট্য ও সান্নিধ্য প্রাপ্তির লক্ষ্যে রমজানের শেষ ১০ দিন মনিবের দরবারে ধরনা দেয়। তাকওয়ার চূড়ান্ত মাত্রা অর্জনের মানসে বান্দা জাগতিক সবকিছু ত্যাগ করে আল্লাহর ঘরের অতিথি হয়।

আল্লামা ইবনু কায়্যিম জাওযি (রহ.) তার প্রশিদ্ধ গ্রন্থ ‘জাদুল মাআদ’-এ লিখেছেন, ‘ইতিকাফের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে- পার্থিব মোহের সমস্ত জাল ছিন্ন করে আল্লাহর সঙ্গে পরিপূর্ণ ও গভীর প্রেমময় সম্পর্ক স্থাপন করা। রমজানের পবিত্র মাসে আল্লাহর ঘরে নির্জনবাস ও ইতিকাফের মাধ্যমে হৃদয় এবং আত্মার এমন অভাবনীয় উৎকর্ষ সাধিত হয় যে, মানুষের হৃদয়ে তখন আল্লাহর স্মরণ ও তাঁর প্রতি গভীর প্রেম-ভালোবাসা ছাড়া দ্বিতীয় অন্যটি আর স্থান পায় না। মহান প্রতিপালকের ধ্যান-চিন্তা ছাড়া অন্য কোনো চিন্তাভাবনায় সে উৎসাহবোধ করে না। তার হৃদয়ের সব অনুভূতি তখন আল্লাহর নৈকট্য ও সান্নিধ্য লাভের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এবং সহায়ক হয়ে থাকে। মাখলুকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ও আন্তরিকতার পরিবর্তে আল্লাহর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা এবং ঐকান্তিকতা সৃষ্টি হয়। কবরের নিঃসঙ্গ অন্ধকারে যেখানে কোনো বন্ধু ও সাহায্যকারী থাকবে না, সেখানে এ সম্পর্কটি এক মহামূল্যবান পাথেয় রুপে কাজে আসবে। এ হলো ইতিকাফের উদ্দেশ্য এবং রমজানুল মোবারকের শেষ ১০ দিনের সঙ্গে একে সম্পৃক্ত করার গভীর তাৎপর্য ও রহস্য।’ (জাদুল মায়াদ, পৃষ্ঠা : ১৮৭)

 

ইতিকাফের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে উপমহাদেশের প্রখ্যাত বুযূর্গ আলেমেদ্বীন ও মহান পূর্বসূরি শাহ্ ওয়ালী উল্লাহ মোহাদ্দেসে দেহলভী (রহ.) লিখেন, ‘মসজিদের ইতিকাফ হচ্ছে আত্মার প্রশান্তি, হৃদয়ের পবিত্রতা-নিষ্কলুষতা। চিন্তার পরিচ্ছন্নতা ও বিশুদ্ধতা, ফেরেশতাদের গুণাবলি অর্জন এবং লাইলাতুল কদরের সৌভাগ্য ও কল্যাণ লাভসহ সব ধরনের ইবাদতের সুযোগ লাভের এক সর্বোত্তম উপায়। এজন্য রাসূল (সা.) মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ইতিকাফ পালন করেছেন এবং তাঁর পুণ্যবতী স্ত্রীগণসহ সাহাবায়ে কেরামের অনেকেই এ সুন্নতের ওপর মৃত্যু পর্যন্ত আমল করেছেন।’ (হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা : ২/৪২)

ইতিকাফ একটি শরঈ আমল হওয়ার ব্যাপারে পবিত্র কোরআনের ইরশাদ রয়েছে- وَأَنْتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ ‘এ অবস্থায় যে তোমরা মসজিদে ইতিকাফরত’। (সূরা আল বাকারা:১৮৭)

ইতিকাফ সম্পর্কে সহীহ বুখারীতে বর্ণিত এক দীর্ঘ হাদীসের শেষাংশে রয়েছে-

مَنْ كَانَ اعْتَكَفَ مَعِي فَلْيَعْتَكِفْ الْعَشْرَ الْأَوَاخِرَ فَقَدْ أُرِيْتُ هَذِهِ اللَّيْلَةَ ثُمَّ أُنْسِيْتُهَا

 

‘যে আমার সঙ্গে ইতিকাফ করতে চায় সে যেন শেষ দশকে ইতিকাফ করে, কেননা এই রাত (লাইলাতুল কদর) আমাকে দেখানো হয়েছিল, পরে আমাকে তা ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। (বুখারী)

তাই যার শক্তি সামর্থ্য আছে তার উচিত হবে ইতিকাফে বসে শেষ দশকের রাতগুলো যাপন করা। ইতিকাফকারী নিজকে দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর আনুগত্য, দোয়া-মুনাজাত, জিকির ইত্যাদির জন্য সে নিজকে মসজিদে আঁটকে ফেলে। দুনিয়াবী সকল দৌড়-ঝাঁপ থেকে মুক্ত হয়ে সে মসজিদের পবিত্র আবহে নিজেকে আবদ্ধ করে ফেলে। মন ও শরীর উভয়টাকেই সে নিরঙ্কুশভাবে রাব্বুল আলামীনের দরবারে সঁপে দেয়। যা কিছু আল্লাহকে সন্তষ্ট করে শুধু তাতেই নিজকে সংশ্লিষ্ট করে নেয়। আর এভাবে সে শুধুই আল্লাহর জন্য হয়ে যায়। যা করলে আল্লাহ রাজি হন শুধু তাতেই নিজকে নিয়োজিত করে।

ইতিকাফের তাৎপর্য হলো, সৃষ্টজীব থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য সুনির্দিষ্ট বলয়ের মধ্যে নিজকে আবদ্ধ করে নেয়া। আর আল্লাহ সম্পর্কে বান্দার জ্ঞান যত বাড়বে, আল্লাহর মহব্বত হৃদয়ে যত পোক্ত হবে, আল্লাহর ডাকে সাড়া দিতে যতটুকু অগ্রসর হবে, দুনিয়ার প্রতি প্রেম ভালোবাসা ততই অর্ন্তহিত হবে।

 

ইতিকাফের ফজিলত: রমজানের শেষ দশকের রাতগুলোর যে কোনো একটিতে শবে কদর রয়েছে। আর শবে কদরের ইবাদত তিরাশি বছর চার মাস ইবাদত করার চেয়েও উত্তম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শবে কদর প্রাপ্তির আশা নিয়েই ইতিকাফ করতেন। তিনি প্রথম দশকেও ইতিকাফ করেছেন, মধ্য দশকেও করেছেন, এরপর শেষ দশকে। এ ব্যাপারে তিনি বলেন: ‘আমি প্রথম দশকে ইতিকাফ করেছি, এরপর মধ্য দশকে, এরপর আমাকে দেয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে, তা শেষ দশকে। অতএব তোমাদের মধ্যে যার ইতিকাফ করা পছন্দ হয় সে যেন ইতিকাফ করে (মুসলিম)।

রাসূলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইতিকাফ করা কখনো বাদ দেননি। তিনি প্রতি বছর দশ দিন ইতিকাফ করতেন। আর যে বছর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওফাত ফরমান, সে বছর তিনি বিশ দিন ইতিকাফ করেন। উপরন্তু যখন তাঁর স্ত্রীগণ ইতিকাফ করতে প্রতিযোগিতা শুরু করলেন, তিনি ইতিকাফ করা ছেড়ে দিলেন এবং তা শাওয়ালের প্রথম দশকে কাজা করে নিলেন (বুখারী)।

ইতিকাফ অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন বিষয় থেকে নিজকে দূরে রেখেছেন, যা তার জন্য বৈধ ছিল। যেমন স্ত্রীসঙ্গ ও নিদ্রাগমন। রমজানের শেষ দশকে কঠোর মেহনতি হওয়া এবং লুঙ্গি বেঁধে নেয়ার ব্যাপারে আয়েশা (রাযি.) থেকে যে বর্ণনা পাওয়া যায়, তার অর্থ এটাই।

ইতিকাফের কিছু আহকাম ও জরুরি মাসাইল:
(১) রাসূল্ল্লুাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শের অনুসরণ করে ইতিকাফের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করা।

(২) নিয়ত করে ইতিকাফ শুরু করে দেয়ার পর ইতিকাফ পূর্ণ করা জরুরি নয়।

(৩) কমক্ষে কত দিন ইতিকাফ করলে ইতিকাফ হিসেবে ধরা হবে, বিষয়টি অনির্দিষ্ট। তবে ইতিকাফকারী যেদিন থেকে ইতিকাফ শুরু করতে ইচ্ছুক, সেদিন সূর্যাস্তের পূর্বেই তাকে নিজ ইতিকাফের জায়গায় পৌঁছে যেতে হবে।

(৪) নিজের জন্য একটা জায়গা বেছে নেয়া জরুরি, যেখানে নীরবে আল্লাহর জিকির-আযকার করতে পারবে। প্রয়োজনের সময় আরাম করতে পরবে। কাপড় পরিবর্তন করতে পারবে। পরিবারের কেউ এলে তার সঙ্গে সাক্ষৎ করতে পারবে।

 

(৫) ইতিকাফকারী মসজিদের বিভিন্ন প্রান্তে নফল নামাজ আদায় করতে পারবে। তবে ইতিকাফকারীর জন্য উত্তম হলো অধিক নড়াচড়া ও নফল নামাজ না পড়া। এর প্রথম কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, নিজকে লুকিয়ে রাখা যায়, মসজিদের অভ্যন্তরে এমন একটি জায়গা তৈরি করে নিতেন। আর দ্বিতীয় কারণ যখন কেউ নামাজ পড়ার জায়গায় বসে থাকে তখন ফেরেশতারা তার প্রতি রহমত বর্ষণের দোয়া করতে থাকে (বুখারী)।

(৬) ইতিকাফ অবস্থায় স্বামী-স্ত্রী মিলিত হওয়া, চুম্বন,স্পর্শ নিষেধ। যেমন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন, 

وَلَا تُبَاشِرُوهُنَّ وَأَنْتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِد

‘তোমরা মসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় স্ত্রীদের সঙ্গে মিলিত হবে না’ (সূরা আল-বাকারা : ১৮৭)।

ইতিকাফ অবস্থায় মসজিদ থেকে বের হওয়া না হওয়ার ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলোর প্রতি নজর দিতে হবে।

(এক) মানবীয় প্রয়োজনে বের হওয়ার অনুমতি আছে। যেমন পায়খানা, প্রস্রাব, পানাহার – যদি তা মসজিদে পৌঁছে দেয়ার মত কেউ না থাকে। অনুরূপভাবে যে মসজিদে ইতিকাফ করা হচ্ছে তাতে যদি জুমার নামাজ না হয়, তাহলে জুমা আদায়ের জন্য অন্য মসজিদে যাওয়ার অনুমতি আছে।

(দুই) এমন সব নেক-আমল বা ইবাদত-বন্দেগীর জন্য বের হওয়া যাবে না, যা ইতিকাফকারীর জন্য অপরিহার্য নয়। যেমন রোগীর সেবা করা, জানযায় অংশ নেয়া ইত্যাদি। তবে যদি ইতকিাফের শুরুতে এ জাতীয় কোনো শর্ত করে নেয়া হলে ভিন্ন কথা। তবে এ ক্ষেত্রে সুন্নত ইতিকাফ আদায় হবে না।

(তিন) এমন সকল কাজের জন্য মসজিদ থেকে বের হওয়া যাবে না যা ইতিকাফ বিরোধী। যেমন ক্রয়-বিক্রয়, চাষাবাদ ইত্যাদি। ইতিকাফ অবস্থায় এ সকল কাজের জন্য মসজিদ থেকে বের হলে ইতিকাফ বাতিল হয়ে যাবে।

মহান রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে মাহে রমজানের এই শেষ দশকে শবে কদর লাভে ধন্য করুন এবং তাঁর ইবাদতে পূর্ণ নিমগ্ন হয়ে সৌভাগ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার তাওফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।

সাপ্তাহিক আজকাল
সাপ্তাহিক আজকাল
এই বিভাগের আরো খবর