বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৯ ১৪৩২   ২৪ শাওয়াল ১৪৪৬

সর্বশেষ:
মার্কিন যুদ্ধবিমানের ওপর উপসাগরীয় দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধে মার্কিন কংগ্রেসে বিল উত্থাপন ইরান-ইয়েমেনের কাছাকাছি পারমাণবিক বোমারু বিমান মোতায়েন কফিতে মশগুল ব্রিটেনে পলাতক সাবেক মন্ত্রীরা! নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধে বাংলাদেশের ভুল চিত্র তুলে ধরেছে ভূমিকম্পে ১৭০ প্রিয়জন হারালেন এক ইমাম ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত ট্রাম্প কি আসলেই তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন লিবিয়ায় অপহৃত ২৩ বাংলাদেশি উদ্ধার দুদিনে নিহত ১৩, চট্টগ্রামের জাঙ্গালিয়া যেভাবে মরণফাঁদ হয়ে উঠলো বাংলাদেশের অর্থপাচার তদন্তে ব্রিটিশ এমপিদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা ভেনিজুয়েলার তেল-গ্যাস কিনলেই শুল্কারোপের হুমকি ট্রাম্পের সাভারে চলন্ত বাসে আবার ডাকাতি, চালক ও সহকারী আটক ছুটিতে এটিএম সেবা সবসময় চালু রাখার নির্দেশ উসকানিতে প্রভাবিত না হতে বললেন সেনাপ্রধান রেড ফ্ল্যাগ সতর্কতার আওতায় ২৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ এনসিপি নেতা হান্নানের পথসভায় হামলা, আহত ‘অর্ধশতাধিক’ নির্বাচনী ট্রেনে বাংলাদেশ বাংলাদেশ সোসাইটি অব ব্র্রঙ্কসের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত সাবওয়ে ট্রেনে সন্তান প্রসব নিউইয়র্কে আইস পুলিশের বিশাল অফিস উদ্বোধন মেয়রের মামলা প্রত্যাহারে প্রসিকিউটরের পদত্যাগ হাসিনা নিজেই হত্যার নির্দেশদাতা জন্ম নাগরিকত্ব বাতিল আদেশ আটকে দিল আদালতে নিউইয়র্কে ডিমের ডজন ১২ ডলার নিউইয়র্কে ভালোবাসা দিবস উৎযাপন আমেরিকান বাংলাদেশী টেক কোয়ালিশন’র আত্মপ্রকাশ জামালপুর সমিতির সভাপতি সিদ্দিক ও সম্পাদক জাস্টিস শেখ হাসিনার আমলে বছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বাংলাদেশিদের অস্ত্রোপচার বাতিলে কলকাতাজুড়ে হাসপাতালে হাহাকার দি‌ল্লি যাওয়া ছাড়াই পাওয়া যাবে মে‌ক্সি‌কান ভিসা বাজার থেকে উধাও বোতলজাত সয়াবিন কেউ আপনার স্ত্রীকে ‘হট’ বললে সেটা কি ভালো লাগে, প্রশ্ন সানার পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে এবাদুলের মিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হংকং-দুবাইয়ে পাচারকারীরা বেপরোয়া ছিল শেখ পরিবারের প্রশ্রয়ে সোনার দাম দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য কতটুকু সত্য? দিনে মাত্র একবেলা খাচ্ছে গাজার অনেক মানুষ পছন্দের লোক নিয়োগ দিতে বদলে দেয়া হয় মেট্রোরেলের নিয়োগবিধি যানজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে দৈনিক ১৩৯ কোটি টাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নজর চার খাতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে বড় পতন হাথুরুসিংহের অপকর্ম ধামাচাপা দেন পাপন ‘ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ আমেরিকার জন্য বিশাল হুমকি হবে’ নীরবে সরবে চাঁদাবাজি পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ছাড়াই গুগল ম্যাপ ব্যবহারের উপায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ বাইডেনের ভাড়া ফাঁকিবাজদের ধরতে চলছে সাঁড়াশি অভিযান সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরীকে গুলি করে মরদেহ নিয়ে গেল বিএসএফ ভিসা ফি ছাড়াই এবার পাকিস্তান যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফি আটক সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয়বহুল সফরে ২৬ ব্যাংক এমডি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ সাবেক সেনাপ্রধান ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা দিনের বেলায় মরুভূমির চেয়েও উত্তপ্ত চাঁদ ডেঙ্গুতে একদিনে ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৩২৭ ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে ২৬৭ প্রবাসী বাংলাদেশি অক্টোবরের মধ্যেই ‘আন্দোলনের ফসল’ ঘরে তুলতে চায় বিএনপি শর্তসাপেক্ষে নিউইয়র্কে মসজিদে আজানের অনুমতি বাংলাদেশ থেকে বিনা খরচে মালয়েশিয়া গেলেন ৩১ কর্মী খেলাপি ঋণ কমাতে কঠোর নির্দেশ জার্মানে পাঁচ বছর বাস করলেই পাওয়া যাবে নাগরিকত্ব বিএনপি-জাপা বৈঠক সিঙ্গাপুরে বাইডেন প্রশাসনকে হাসিনার কড়া বার্তা এবার হাসিনার পাশে রাশিয়া বঙ্গ সম্মেলনের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা স্টুডেন্ট লোন মওকুফ প্রস্তাব বাতিল বাংলাদেশিদের ওপর উপর্যুপরি হামলা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আগে নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা করা: শেখ হাসিনা তামিমের অবসর অভিযোগের তীর পাপনের দিকে নিউইয়র্কে এখন চোরের উপদ্রুব যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে হাতিরঝিলের ক্ষতি হবেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতি, পাঁচ দিনে নিহত ৩৫ যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটছে বাখমুত থেকে পিছু হটেছে সেনারা, স্বীকার করল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণ ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোন হবে না, দাবি আবহাওয়া অধিদপ্তরের সুদানে যুদ্ধে সাড়ে ৪ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত : জাতিসংঘ পারস্য উপসাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে সারা দেশে ভোগান্তি রুশ হামলা সামলে ফের বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে যাচ্ছে ইউক্রেন রিজার্ভ সংকট, খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারের দুর্বল নীতিও দায়ী পূজার ‘জিন’ একা দেখতে পারলেই মিলবে লাখ টাকা! সিরিয়ায় আর্টিলারি হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল বাইডেন না দাঁড়ালে প্রার্থী হবেন কে নাইজেরিয়ায় ৭৪ জনকে গুলি করে হত্যা ভারতে বাড়ছে করোনা, বিধিনিষেধ জারি তিন রাজ্যে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন লুলা যে কোনো দিন খুলবে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল দেশে করোনার নতুন ধরন, সতর্কতা বিএনপির সব পদ থেকে বহিষ্কার আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করবো: মাহিয়া মাহি মর্মান্তিক, মেয়েটিকে ১২ কিলোমিটার টেনে নিয়ে গেল ঘাতক গাড়ি! স্ট্যামফোর্ড-আশাসহ ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বর্ষবরণে বায়ু-শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যে ধাক্কা কোনো ভুল মানুষকে পাশে রাখতে চাই না বাসস্থানের চরম সংকটে নিউইয়র্কবাসী ট্রাকসেল লাইনে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত একাকার! ছুটি ৬ মাসের বেশি হলে কুয়েতের ভিসা বাতিল ১০ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত চুক্তিতে বিয়ে করে ইউরোপে পাড়ি আইফোন ১৪ প্রোর ক্যামেরায় নতুন দুই সমস্যা পায়ের কিছু অংশ কাটা হলো গায়ক আকবরের ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ডলার নারী ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম
৩৭০

ইসলামে দাওয়াত দেয়া ও গ্রহণের নীতিমালা (পর্ব- ১)

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৬ জানুয়ারি ২০১৯  

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

‘তোমাদের মধ্য থেকে কাউকে দাওয়াত করা হলে কবুল করা উচিত। রোজাদার হলে নিমন্ত্রণকারীর জন্য দোয়া দোয়া করবে। অর্থাৎ তার ঘরে গিয়ে তার জন্য দোয়া করবে। রোজাদার না হলে একসঙ্গে খানা খাবে।’ (মুসলিম, হাদীস নং-২৫৮৪, আবু দাউদ, হাদীস নং-২১০৪)

একজন মুসলমানের দাওয়াত কবুল করার প্রতি আলোচ্য হাদিসে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। দাওয়াত কবুল করা মুসলমানের হক হিসাবে অভিহিত করা হয়েছে। অপর হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

 

حق المسلم على المسلم خمس، رد السلام، تشميت العاطس، اجابة ا لدعوة ، اتباع الجنائز، وعيادة المريض

‘এক মুসলমানের জন্য অপর মুসলমানের পাঁচটি হক রয়েছে। এক. সালামের উত্তর দেয়া। দুই. হাঁচি দিয়ে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ পড়লে তার জবাবে يرحمك الله বলা। তিন. কোনো মুসলমান মারা গেলে তার জানাযার পেছনে পেছনে যাওয়া। চার. অসুস্থ হলে তাকে দেখতে যাওয়া। পাঁচ. দাওয়াত দিলে কবুল করা। (বুখারী, হাদীস নং-১১৬৪, মুসলিম, হাদীস নং-৪০২২)

এ হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়াসাল্লাম দাওয়াত কবুল করাকে একজন মুসলমানের হক হিসাবে সাব্যস্ত করেছেন।

দাওয়াত কবুল করার উদ্দেশ্য:

আমার ভাই দাওয়াত দিয়েছে, আমাকে মহব্বত করে বিধায় আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সুতরাং তার মহব্বতের কদর করা চাই। দাওয়াত কবুল করা সুন্নত এবং সওয়াবের কাজ। এ ধরণের নিয়ত করে দাওয়াত কবুল করবে। আয়োজন ভালো হলে কবুল করবে অন্যথায় নয়; এরূপ যেন না হয়। মুসলমানের অন্তর খুশি করার নিমিত্তে দাওয়াত কবুল করা চাই। হাদিস শরীফে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

واو دعيت إلى كراع لقبلت

‘বকরির পায়ার জন্যও যদি আমি নিমন্ত্রিত হই, কবুল করে নেব।’ (বুখারি, হাদিস নং-২৩৮০, তিরমিযী, হাদীস নং- ১২৫৭)

বর্তমানে যদিও পায়া খাওয়ার নিমন্ত্রনকে উন্নত দাওয়াত মনে করা হয়; কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়াসাল্লামের যুগে এটি ছিলো নিতান্ত এক মামুলি বিষয়। অতএব নিমন্ত্রণকারী একজন গরিব মুসলমান হলেও এ নিয়তে কবুল করবে যে, সে আমার ভাই। তার অন্তরকে আনন্দিত করা চাই। ধনী-গরীবে ভেদাভেদ করা কখনো উচিত নয়। বরং গরীব মানুষই অধিক অগ্রাধিকার পাওয়ার যোগ্য।

ডাল ও সুকনো খাবারে নূরের জ্যোতি:

শফি (রহ.) একটি ঘটনা বর্ণনা করেন। দেওবন্দে একজন ঘাস বিক্রেতা ছিলেন। ঘাস কেটে বাজারে বিক্রি করতেন, এর মাধ্যমেই জীবিকা নির্বাহ করতেন। এক সপ্তাহে তিনি ছয় পয়সা কামাতেন। সংসারে তিনি একাই ছিলেন। তাই ওই ছয় পয়সাকে ভাগ করতেন এভাবে- দুই পয়সা দিয়ে নিজের জন্য খাবার কিনতেন। দুই পয়সা দান করে দিতেন। অবশিষ্ট দুই পয়সা নিজের কাছে জমা রাখতেন। এক মাস পর যখন কিছু পয়সা জমা হত, তখন দারুল উলূম দেওবন্দের যেসব বুযুর্গ ছিলেন তাদের দাওয়াত করতেন। দাওয়াতে সাধারণ আতপ চাল রান্না করতেন এবং ডাল পাকাতেন। এ দিয়েই পরিবেশন চলত। দারুল উলূম দেওবন্দ এর সমকালীন মুহতামিম মাওলানা ইয়াকুব নানুতবী (রহ.) বলতেন, পুরো মাস আমরা এই লোকের দাওয়াতের অপেক্ষায় থাকতাম। কারণ এ লোকের সাধারণ আতপ চাল এবং পাতলা ডালের মধ্যে যে নূর অনুভব করতাম, সে নূর পোলাও-বিরানীর শানদার দাওয়াতেও অনুভব হত না।

দাওয়াতের হাকিকত ও ভালোবাসার বহি:প্রকাশ:

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়াসাল্লাম ধনী-গরীব সবার দাওয়াতই কবুল করতেন। এমনকি একজন সাধারণ মানুষের দাওয়াতে কয়েক মাইল পর্যন্ত সফর করেছেন। এজন্য ইখলাসের সঙ্গে দাওয়াত দেবে। ইখলাসের সঙ্গে দাওয়াত কবুল করবে। ইখলাসের আমল নূর ও বরকতপূর্ণ হবে। সুন্নত ও সওয়াবের উসিলা হবে।

দাওয়াত না দুশমনি:

বর্তমানে আমাদের দাওয়াত নিছক প্রথায় পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন রুসমকে উপলক্ষ্য করে আমরা দাওয়াত করে থাকি। ফলে দাওয়াত গ্রহণ করাও মসিবত, না করা আরেক মসিবত। তাই হজরত থানভী (রহ.) বলেছেন, হতে হবে দাওয়াত; দুশমনি নয়। দাওয়াত যেন আপদে পরিণত না হয়। যেমন, আমাদের মধ্যে অনেকে এরূপ করে থাকেন যে, অমুককে দাওয়াত দিতেই হবে। এ প্রবণতায় তিনি চালিত হন। সেই ‘অমুকে’র হাতে সময় আছে কি নেই এটা যেন এক গৌণ বিষয়। দাওয়াত কবুল করার জন্য খুব পীড়াপীড়ি করা হয়। যেন দাওয়াতে আসতেই হবে, মসিবতের ঝড় বয়ে গেলেও কবুল করতেই হবে। মূলত: এটা দাওয়াত নয়; বরং শত্রুতা। যদি দাওয়াতের মাধ্যমে মহব্বত প্রকাশ করতে চাও, তাহলে তার আরামেরও খেয়াল রাখতে হবে। তার সময় ও সুযোগের অপেক্ষা করতে হবে। অন্যথায় ‘দাওয়াত’ মসিবতে পরিণত হবে।

সর্বোত্তম দাওয়াত:

হাকীমুল উম্মত হজরত আশরাফ আলী থানভী (রহ.) বলতেন, দাওয়াত তিন প্রকার। সর্বোত্তম দাওয়াত, মধ্যম দাওয়াত এবং নিম্নস্তরের দাওয়াত। চলমান পরিবেশের জন্য প্রযোজ্য সর্বোত্তম দাওয়াত হলো, যাকে দাওয়াত দেয়া হবে, সোজা তার কাছে চলে যাবে এবং নগদ কিছু হাদিয়া দিয়ে দেবে। নগদ হাদিয়া পেশ করার পর তাকে অধিকার দেবে যে, ইচ্ছা করলে তিনি হাদিয়াটা যেমনিভাবে খানার জন্য ব্যয় করতে পারেন, তেমনিভাবে অন্য প্রয়োজনেও ব্যয় করতে পারেন। এতে তার ফায়দা বেশি হবে। চিন্তা ও বিড়ম্বনা থেকে তিনি নিশ্চিন্ত থাকবেন। আসতে চাইলে প্রশান্ত মনে আসতে পারবেন। বিধায় এ দাওয়াতই হলো সর্বোত্তম দাওয়াত।

মধ্যস্তরের দাওয়াত:

খানা পাকিয়ে ঘরে পাঠিয়ে দেয়া হলো মধ্যম স্তরের দাওয়াত। এটি প্রথম স্তরভুক্ত এজন্য নয় যে, যেহেতু এ দাওয়াতে শুধু খানার বিষয় বর্তমান। এছাড়া অন্য কোনো অধিকার বর্তমান নেই। তবে খানা ঘরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে এবং দাওয়াত গ্রহণকারী ব্যক্তি যাওয়ার কষ্ট থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছে। তাই এটি মধ্যম স্তরের দাওয়াত।

নিম্নমানের দাওয়াত:

ঘরে ডেকে খানা খাওয়ানো হলো নিম্নমানের দাওয়াত। বর্তমানে মানুষ খুবই ব্যস্ত। ব্যস্ত শহর এবং ব্যস্ত জীবন। এ ক্ষেত্রে দূরত্ব যদি অধিক হয়, তাহলে দাওয়াত খাওয়ার জন্য একজন মানুষকে দু’চার ঘণ্টা ব্যয় করতে হয়। তাহলে আমন্ত্রিত ব্যক্তির জন্য এটা এক প্রকার বিড়ম্বনা নয় কি? স্বাচ্ছন্দবোধের পরিবর্তে তিনি কষ্ট ওঠালেন। অথচ দাওয়াতের উদ্দেশ্য তো কষ্ট দেয়া নয়, বিধায় এটি সবচে’ নিম্নমানের দাওয়াত।

দাওয়াতের একটি চমৎকার ঘটনা:

হজরত মাওলানা ইদরীস কান্ধলবী (রহ.) একজন বুযুর্গ ছিলেন। (‘আল্লাহ তায়ালা তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দিন। আমীন।’) তিনি লাহোর থাকতেন। একবার করাচিতে প্রোগ্রাম করলেন। সে সুবাদে দারুল উলূম কাওরাঙ্গিতে মুফতি শফি (রহ.) এর সঙ্গে সাক্ষাত করতে এলেন। তিনি খুবই খুশি হলেন। সকাল দশটার দিকেই তিনি দারুল উলূম পৌঁছে গিয়েছিলেন। মুফতি শফি (রহ.) জিজ্ঞেস করলেন, আজকে আপনার বিশ্রাম কোথায়? তিনি উত্তর দিলেন, আগ্রা কলোনিতে এক ভদ্রলোকের বাসায়। আব্বাজান বললেন, সেখান থেকে কখন ফিরবেন? উত্তর দিলেন, আগামীকাল ‘ইনশাআল্লাহ’ লাহোরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যাব।

যা হোক, সাক্ষাত ও আলাপ-আলোচনা পর্ব শেষ হবার পর যখন তিনি ফিরতে চাইলেন, তখন মুফতি শফি (রহ.) বললেন, ভাই মৌলভী ইদরীস সাহেব! আপনি অনেক দিন পর আমার এখানে এসেছেন। মন চাচ্ছে আপনাকে একটু দাওয়াত করি। কিন্তু ভাবলাম, আজকে আপনার বিশ্রাম আগ্রা তাজ কলোনীতে, আর আমি থাকি কাওরঙ্গিতে। এখন যদি বলি, অমুক সময়ে আমার এখানে এসে খানা খাবেন, তাহলে আপনি মহা বিপাকে পড়ে যাবেন। কারণ আগামীকাল আবার আপনাকে চলে যেতে হবে। হয়ত অনেক কাজ আছে। তাই মন চাচ্ছে না, আপনাকে দ্বিতীয়বার এখানে টেনে এনে কষ্ট দেব। সুতরাং দাওয়াতের পরিবর্তে আমার থেকে এই একশ’ রূপি হাদিয়া গ্রহণ করুন। মাওলানা ইদরীস কান্ধলবী (রহ.) ওই একশ’ রূপির নোটটি নিজের মাথার উপর রাখলেন এবং বললেন, আপনি তো আমাকে বিরাট নেয়ামত দান করেছেন। দাওয়াতের ফজিলতও লাভ করলেন; অথচ কোনো কষ্ট ভোগ করতে হলো না। এরপর অনুমতি নিয়ে বিদায় নিলেন।

আরামের প্রতি লক্ষ্য রাখা ভালোবাসার দাবি:

এটাকেই বলে সাদাসিধে জীবন এবং মেহমানের আরামের প্রতি বিশেষভাবে দৃষ্টিদান। হজরত মুফতী শফি সাহেবের স্থলে অন্য কেউ হলে বলত, ‘আরে.... আপনি লাহের থেকে করাচি এসেছেন। আর আমার বাসায় দাওয়াত খাবেন না। এটা হতে পারে না। যত কষ্টই হোক আমার এখানে চারটা ডাল-ভাত হলেও খেয়ে যাবেন।’ আর ইদরীস সাহেব (রহ.) এর স্থলে অন্য কেউ হলে বলত, ‘আমি কি তোমার দাওয়াতের কাঙ্গাল? পয়সা দিচ্ছ কেন, আমি কি ফকির?’ মনে রাখবেন, মহব্বতের দাবি হলো, প্রিয়জনকে কষ্ট না দেয়া এবং তার আরামের প্রতি খেয়াল রাখা। এ বিষয়ে মরহুম যকী কাইফী চমৎকার কবিতা লিখেছেন। তার নিম্নোক্ত কবিতাটি অত্যন্ত চমৎকার :

ميرى محبوب ميرى ايسى وفا سى توبه جو تيرى دل كى كدورت كا سبب بن جائى

‘প্রিয়তম আমার! এমন আপ্যায়ন থেকে তাওবা করছি, যা আপনার কোনো কষ্টের ‘কারণ’ হয়।’

দাওয়াত করাও একটি বিদ্যা:

দাওয়াত যেন মসিবত না হয়, এ দিকে লক্ষ রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত, দাওয়াতের উদ্দেশ্য হলো, মহব্বত প্রকাশ করা। অতএব মহব্বতের অনুকূল পথ ও পদ্ধতি মতে চলতে হবে। রুসম ও সামাজিক প্রথার সঙ্গে দাওয়াতের কোনো সম্পর্ক নেই বিধায় প্রথাগত প্রবণতা বর্জন করতে হবে। দাওয়াত হতে হবে স্বত:স্ফূর্ত ও শর্তমুক্ত। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তরিকামুক্ত দাওয়াত কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। অনুরূপভাবে যাকে দাওয়াত দেয়া হয়েছে, তার জন্য সুন্নত হলো দাওয়াত কবুল করা। এর মাধ্যমে একজন মুসলমাননের মহব্বতের মূল্যায়ন হয়।

সুতরাং কাজটি সুন্নত মনে করেই করতে হবে। দাওয়াতে না গেলে নাক কাটা যাবে, মানুষ কী ভাববে এ ধরনের ভাবনা মোটেও উচিত নয়। এরূপ ভাবনার উদয় হওয়ার অর্থ ‘সুন্নত’ থেকে নিজেকে বিরত করা।

সাপ্তাহিক আজকাল
সাপ্তাহিক আজকাল
এই বিভাগের আরো খবর