সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সর্বশেষ:
কেউ আপনার স্ত্রীকে ‘হট’ বললে সেটা কি ভালো লাগে, প্রশ্ন সানার পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে এবাদুলের মিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হংকং-দুবাইয়ে পাচারকারীরা বেপরোয়া ছিল শেখ পরিবারের প্রশ্রয়ে সোনার দাম দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য কতটুকু সত্য? দিনে মাত্র একবেলা খাচ্ছে গাজার অনেক মানুষ পছন্দের লোক নিয়োগ দিতে বদলে দেয়া হয় মেট্রোরেলের নিয়োগবিধি যানজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে দৈনিক ১৩৯ কোটি টাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নজর চার খাতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে বড় পতন হাথুরুসিংহের অপকর্ম ধামাচাপা দেন পাপন ‘ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ আমেরিকার জন্য বিশাল হুমকি হবে’ নীরবে সরবে চাঁদাবাজি পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ছাড়াই গুগল ম্যাপ ব্যবহারের উপায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ বাইডেনের ভাড়া ফাঁকিবাজদের ধরতে চলছে সাঁড়াশি অভিযান সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরীকে গুলি করে মরদেহ নিয়ে গেল বিএসএফ ভিসা ফি ছাড়াই এবার পাকিস্তান যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফি আটক সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয়বহুল সফরে ২৬ ব্যাংক এমডি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ সাবেক সেনাপ্রধান ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা দিনের বেলায় মরুভূমির চেয়েও উত্তপ্ত চাঁদ ডেঙ্গুতে একদিনে ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৩২৭ ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে ২৬৭ প্রবাসী বাংলাদেশি অক্টোবরের মধ্যেই ‘আন্দোলনের ফসল’ ঘরে তুলতে চায় বিএনপি শর্তসাপেক্ষে নিউইয়র্কে মসজিদে আজানের অনুমতি বাংলাদেশ থেকে বিনা খরচে মালয়েশিয়া গেলেন ৩১ কর্মী খেলাপি ঋণ কমাতে কঠোর নির্দেশ জার্মানে পাঁচ বছর বাস করলেই পাওয়া যাবে নাগরিকত্ব বিএনপি-জাপা বৈঠক সিঙ্গাপুরে বাইডেন প্রশাসনকে হাসিনার কড়া বার্তা এবার হাসিনার পাশে রাশিয়া বঙ্গ সম্মেলনের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা স্টুডেন্ট লোন মওকুফ প্রস্তাব বাতিল বাংলাদেশিদের ওপর উপর্যুপরি হামলা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আগে নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা করা: শেখ হাসিনা তামিমের অবসর অভিযোগের তীর পাপনের দিকে নিউইয়র্কে এখন চোরের উপদ্রুব যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে হাতিরঝিলের ক্ষতি হবেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতি, পাঁচ দিনে নিহত ৩৫ যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটছে বাখমুত থেকে পিছু হটেছে সেনারা, স্বীকার করল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণ ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোন হবে না, দাবি আবহাওয়া অধিদপ্তরের সুদানে যুদ্ধে সাড়ে ৪ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত : জাতিসংঘ পারস্য উপসাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে সারা দেশে ভোগান্তি রুশ হামলা সামলে ফের বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে যাচ্ছে ইউক্রেন রিজার্ভ সংকট, খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারের দুর্বল নীতিও দায়ী পূজার ‘জিন’ একা দেখতে পারলেই মিলবে লাখ টাকা! সিরিয়ায় আর্টিলারি হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল বাইডেন না দাঁড়ালে প্রার্থী হবেন কে নাইজেরিয়ায় ৭৪ জনকে গুলি করে হত্যা ভারতে বাড়ছে করোনা, বিধিনিষেধ জারি তিন রাজ্যে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন লুলা যে কোনো দিন খুলবে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল দেশে করোনার নতুন ধরন, সতর্কতা বিএনপির সব পদ থেকে বহিষ্কার আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করবো: মাহিয়া মাহি মর্মান্তিক, মেয়েটিকে ১২ কিলোমিটার টেনে নিয়ে গেল ঘাতক গাড়ি! স্ট্যামফোর্ড-আশাসহ ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বর্ষবরণে বায়ু-শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যে ধাক্কা কোনো ভুল মানুষকে পাশে রাখতে চাই না বাসস্থানের চরম সংকটে নিউইয়র্কবাসী ট্রাকসেল লাইনে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত একাকার! ছুটি ৬ মাসের বেশি হলে কুয়েতের ভিসা বাতিল ১০ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত চুক্তিতে বিয়ে করে ইউরোপে পাড়ি আইফোন ১৪ প্রোর ক্যামেরায় নতুন দুই সমস্যা পায়ের কিছু অংশ কাটা হলো গায়ক আকবরের ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ডলার নারী ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম
৭৩৩

ডেঙ্গু: দেরিতে হাসপাতালে নেওয়ায় বাড়ছে মৃত্যু

প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর ২০২২  

অতীতের যেকোনও বছরের তুলনায় চলতি বছর ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু দেখলো বাংলাদেশ। এডিস মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১৮২ জন, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়। এ বছরের ৮ নভেম্বর পর্যন্ত ১৮২ জনের মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব মতে, বছরের প্রায় দুই মাস বাকি থাকতেই ২০১৯ সালের সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে। তবে, আক্রান্তের সংখ্যা ২০১৯ সালের তুলনায় কম। ওই বছর আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন।

২০১৯ সালের তুলনায় আক্রান্ত কম হলেও বেশি মৃত্যুর কারণ কী? এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও চিকিৎসকরা বলছেন, মূলত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা দেরিতে হাসপাতালে আসছেন। তারা আক্রান্ত হলেও বুঝতে পারছেন না বা সাধারণ জ্বর মনে করে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। সে কারণে সুস্থ হয়ে ওঠার পরিবর্তে হাসপাতালের ভর্তির ৩-৪ দিনের মধ্যে অনেকে মারা যাচ্ছেন। পরিসংখ্যান বলছে, এ বছর মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই হাসপাতালে ভর্তির ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মারা গেছেন। এদের হার মোট মৃত্যুর ৮১ শতাংশ।

চলতি বছর ডেঙ্গুতে ঢাকায় বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। তবে মৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই ঢাকা বিভাগের বাইরের। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছর মৃতদের মধ্যে ১৭ শতাংশ ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। বাকি ৮৩ শতাংশ ঢাকা বিভাগের বাইরের। এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মোট ৪৪ হাজার ৮০২ জনের মধ্যে ২৮ শতাংশই তরুণ-যুবক। মৃতদের মধ্যেও ৪৮ শতাংশই এ বয়সী।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে প্রথম ডেঙ্গুরোগীর দেখা পাওয়া যায় ২০১৬ সালে। পুরো ২০১৬ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ৬০ জন। ২০১৭ সালে ২ হাজার ৮৮৫ জন, ২০১৮ সালে এক লাফে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ হাজার ১৬২ জন। ২০১৯ সাল ছিল ডেঙ্গুর জন্য ভয়াবহ বছর। সেবছর মোট আক্রান্ত হন ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন এবং মারা যান ১৭৯ জন।

২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে ডেঙ্গু তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। পুরো বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন মাত্র ১ হাজার ৪০৫ জন। গত বছর ২০২১ সালে আবারও ডেঙ্গু মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এবছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৫ জন। আর ২০২২ সালে (৮ নভেম্বর) পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ হাজার ৮০২ জন এবং মারা গেছেন ১৮২ জন। এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু ঘটেছে অক্টোবর মাসের ১৩ তারিখে। এদিন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮ জন।

চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃতদের মধ্যে তরুণদের সংখ্যাই বেশি। মোট মৃতের ৪৮ শতাংশই তরুণ ও যুবক। আর মোট আক্রান্তের মধ্যেও ২৮ শতাংশই তরুণ। তবে মৃতদের মধ্যে ঢাকার বাইরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা বেশি। মূলত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হবার পরও না জানা ও অসচেতনতার কারণে দেরিতে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে যাওয়ায় বেশিরভাগ রোগী মারা যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এদিকে, ২০১৯ সালের পর আবারও এবছর দেশে ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রকোপ ও মৃত্যু বাড়ার ফলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ‘ব্যর্থ’ হওয়ায় চরম সমালোচনার মুখে পড়েন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র।

২০২২ সালের শুরুতে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। তবে সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় তারা কথার ধরন পাল্টেছেন। স্বাস্থ্য সম্পর্কিত দুটি প্রতিষ্ঠান এবং রাজধানীর দুই সিটি মেয়র দাবি করেন, অসময়ে ঘন ঘন বৃষ্টি এবং নগরবাসীর অসচেতনতার কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামও এতে সুর মিলিয়েছেন।

রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র মশার লার্ভা ধ্বংসে জনগণকে সচেতনতার কথা বলছেন। বাসাবাড়ির মধ্যে বা আশপাশে জমে থাকা পানি ফেলে দিতে উদ্বুদ্ধ করছেন। মশক নিধনের অভিযান চালাচ্ছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা ও মামলা করছেন। কিন্তু কিছুতেই কমছে না ডেঙ্গুর সর্বনাশা সংক্রমণ ও মৃত্যু।

গত ১৮ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত এডিস মশা নিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম করেছে ঢাকা উত্তর সিটি। এ সময়ে যাদের বাড়িতে বা স্থাপনায় এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে, তাদের জরিমানা বা জেল দেওয়া হয়েছে। মশা নিধনে ওষুধেও পরিবর্তন আনে সংস্থাটি।

অপরদিকে, উত্তর সিটির মতো দক্ষিণ সিটি ক্রাশ প্রোগ্রাম না নিলেও তারাও মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়ি ও আশপাশে অভিযান চালিয়ে মশার লার্ভা ধ্বংস করছে। সংস্থাটিও মশার ওষুধে বদল এনেছে।

তবে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উত্তর সিটিতে বেশিরভাগ এলাকায় ডেঙ্গু বিস্তারের এমন পরিস্থিতিতে ফগিং, সচেতনতামূলক কার্যক্রম ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হলেও সেভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে না দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। যদিও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, উত্তরের তুলনায় দক্ষিণের বাসিন্দারা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন ডেঙ্গুতে। নগরবাসীর দাবি, সাধারণ মানুষের সচেতনতার পাশাপাশি সিটি করপোরেশনকেও মশা দমনের দায়িত্ব কাঁধে নিতে হবে। এভাবে অভিযান ও প্রচার চালিয়ে দায় এড়ানো যাবে না।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক, কীটতত্ত্ববিদ, গবেষক ড. কবিরুল বাশার বলেন, অক্টোবর-নভেম্বরে ডেঙ্গুর এই ভয়াবহ পরিস্থিতি বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের একটি বড় প্রভাব রয়েছে। কেবল বাংলাদেশেই যে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তা নয়। বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশ যেমন ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, ব্রাজিল, ভিয়েতনামে এই সময় ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৃষ্টিপাতের ধরন পরিবর্তিত হয়েছে। অক্টোবরেও থেমে থেমে বৃষ্টি, উপযোগী তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা এডিস মশার ঘনত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে এবং ডেঙ্গু ছড়ানোর উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করেছে।

এই গবেষক জানিয়েছেন, মে মাসে যখন ডেঙ্গুর মৌসুম শুরু হলো তখন সঠিকভাবে এডিস মশা এবং ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনা করতে না পারার কারণে এটি জ্যামিতিক হারে বেড়ে বর্তমানে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে এডিস মশার প্রজনন স্থল তৈরি হয়েছে। ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সর্বোত্তম পন্থা হচ্ছে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ। মশা নিয়ন্ত্রণের কাজটি করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো।

ডেঙ্গু রোগী ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা ও ডেঙ্গু ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে সাধারণ জনগণেরও রয়েছে। সকলে যার যার অবস্থান থেকে নিজের দায়িত্বটুকু যদি সঠিকভাবে পালন করতে পারেন, তাহলে এই রোগ সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে মনে করেন ড. কবিরুল বাশার।

ডেঙ্গু সংক্রমণ ও মৃত্যু বিষয়ে তার অভিমত জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, বৃষ্টিপাত, আর্দ্রতা, তাপমাত্রা, এডিস মশার ঘনত্ব এবং ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা- এই কয়টি বিষয় মাল্টিভেরিয়েট অ্যানালাইসিস করে যে ফোরকাস্টিং মডেল তৈরি করেছি, তাতে দেখা যাচ্ছে খুব সহসাই ডেঙ্গু পরিস্থিতির উন্নতি হবে হবে না। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে তবে তা অন্যান্য বছরের মতো কমবে না। ঢাকা শহরে ডেঙ্গু সারাবছরই বিদ্যমান থাকবে। কারণ ঢাকাতে এডিস মশার প্রজননের জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা সারা বছরই বিদ্যমান।

গবেষণার ফলাফল বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা মাঠ পর্যায়ে গবেষণা করতে গিয়ে ঢাকা শহরে কিছু কিছু প্রজনন স্থল, বিশেষ করে নির্মাণাধীন ভবনের বেজমেন্টে জমা পানি, বড় ভবনগুলোর নিচে পার্কিং-এ গাড়ি ধোয়ার স্থান, প্রতিটি বাড়িতে ওয়াসার মিটার সংরক্ষণের জন্য তৈরি করা চৌবাচ্চায় জমে থাকা পানি, এবং পানির স্বল্পতার কারণে ড্রাম এবং বালতিতে জমিয়ে রাখা পানিতে আমরা সারা বছরই এডিস মশা পাচ্ছি। যার যার অবস্থান থেকে নগরবাসী যদি এই পাত্রগুলো সঠিকভাবে পরিষ্কার করতে পারে তাহলে ডেঙ্গু অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

করণীয় এবং সতর্কতা বিষয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. ফরহাদ মঞ্জুর বলেন, কোনো বাড়িতে বা হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী থাকলে তাকে অবশ্যই মশারির ভেতরে রাখতে হবে- যেন তার মাধ্যমে অন্য কোনো ব্যক্তি আক্রান্ত না হয়। যার যার অবস্থান থেকে বাসায়, অফিসে জমানো পরিষ্কার পানি নিজ নিজ দায়িত্বে নিয়মিত পরিষ্কার করলে এবং জ্বর হলেই নিজেরা ওষুধ না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে ডেঙ্গু সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি সম্ভব।

সাপ্তাহিক আজকাল
সাপ্তাহিক আজকাল
এই বিভাগের আরো খবর