বুধবার   ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫   মাঘ ২৩ ১৪৩১   ০৬ শা'বান ১৪৪৬

সর্বশেষ:
শেখ হাসিনার আমলে বছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বাংলাদেশিদের অস্ত্রোপচার বাতিলে কলকাতাজুড়ে হাসপাতালে হাহাকার দি‌ল্লি যাওয়া ছাড়াই পাওয়া যাবে মে‌ক্সি‌কান ভিসা বাজার থেকে উধাও বোতলজাত সয়াবিন কেউ আপনার স্ত্রীকে ‘হট’ বললে সেটা কি ভালো লাগে, প্রশ্ন সানার পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে এবাদুলের মিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হংকং-দুবাইয়ে পাচারকারীরা বেপরোয়া ছিল শেখ পরিবারের প্রশ্রয়ে সোনার দাম দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য কতটুকু সত্য? দিনে মাত্র একবেলা খাচ্ছে গাজার অনেক মানুষ পছন্দের লোক নিয়োগ দিতে বদলে দেয়া হয় মেট্রোরেলের নিয়োগবিধি যানজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে দৈনিক ১৩৯ কোটি টাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নজর চার খাতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে বড় পতন হাথুরুসিংহের অপকর্ম ধামাচাপা দেন পাপন ‘ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ আমেরিকার জন্য বিশাল হুমকি হবে’ নীরবে সরবে চাঁদাবাজি পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ছাড়াই গুগল ম্যাপ ব্যবহারের উপায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ বাইডেনের ভাড়া ফাঁকিবাজদের ধরতে চলছে সাঁড়াশি অভিযান সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরীকে গুলি করে মরদেহ নিয়ে গেল বিএসএফ ভিসা ফি ছাড়াই এবার পাকিস্তান যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফি আটক সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয়বহুল সফরে ২৬ ব্যাংক এমডি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ সাবেক সেনাপ্রধান ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা দিনের বেলায় মরুভূমির চেয়েও উত্তপ্ত চাঁদ ডেঙ্গুতে একদিনে ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৩২৭ ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে ২৬৭ প্রবাসী বাংলাদেশি অক্টোবরের মধ্যেই ‘আন্দোলনের ফসল’ ঘরে তুলতে চায় বিএনপি শর্তসাপেক্ষে নিউইয়র্কে মসজিদে আজানের অনুমতি বাংলাদেশ থেকে বিনা খরচে মালয়েশিয়া গেলেন ৩১ কর্মী খেলাপি ঋণ কমাতে কঠোর নির্দেশ জার্মানে পাঁচ বছর বাস করলেই পাওয়া যাবে নাগরিকত্ব বিএনপি-জাপা বৈঠক সিঙ্গাপুরে বাইডেন প্রশাসনকে হাসিনার কড়া বার্তা এবার হাসিনার পাশে রাশিয়া বঙ্গ সম্মেলনের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা স্টুডেন্ট লোন মওকুফ প্রস্তাব বাতিল বাংলাদেশিদের ওপর উপর্যুপরি হামলা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আগে নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা করা: শেখ হাসিনা তামিমের অবসর অভিযোগের তীর পাপনের দিকে নিউইয়র্কে এখন চোরের উপদ্রুব যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে হাতিরঝিলের ক্ষতি হবেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতি, পাঁচ দিনে নিহত ৩৫ যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটছে বাখমুত থেকে পিছু হটেছে সেনারা, স্বীকার করল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণ ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোন হবে না, দাবি আবহাওয়া অধিদপ্তরের সুদানে যুদ্ধে সাড়ে ৪ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত : জাতিসংঘ পারস্য উপসাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে সারা দেশে ভোগান্তি রুশ হামলা সামলে ফের বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে যাচ্ছে ইউক্রেন রিজার্ভ সংকট, খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারের দুর্বল নীতিও দায়ী পূজার ‘জিন’ একা দেখতে পারলেই মিলবে লাখ টাকা! সিরিয়ায় আর্টিলারি হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল বাইডেন না দাঁড়ালে প্রার্থী হবেন কে নাইজেরিয়ায় ৭৪ জনকে গুলি করে হত্যা ভারতে বাড়ছে করোনা, বিধিনিষেধ জারি তিন রাজ্যে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন লুলা যে কোনো দিন খুলবে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল দেশে করোনার নতুন ধরন, সতর্কতা বিএনপির সব পদ থেকে বহিষ্কার আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করবো: মাহিয়া মাহি মর্মান্তিক, মেয়েটিকে ১২ কিলোমিটার টেনে নিয়ে গেল ঘাতক গাড়ি! স্ট্যামফোর্ড-আশাসহ ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বর্ষবরণে বায়ু-শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যে ধাক্কা কোনো ভুল মানুষকে পাশে রাখতে চাই না বাসস্থানের চরম সংকটে নিউইয়র্কবাসী ট্রাকসেল লাইনে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত একাকার! ছুটি ৬ মাসের বেশি হলে কুয়েতের ভিসা বাতিল ১০ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত চুক্তিতে বিয়ে করে ইউরোপে পাড়ি আইফোন ১৪ প্রোর ক্যামেরায় নতুন দুই সমস্যা পায়ের কিছু অংশ কাটা হলো গায়ক আকবরের ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ডলার নারী ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম
৮৩

নো ওয়ান কিলড তিন্নি!

প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫  

  এ সপ্তাহে সংবাদপত্রের প্রথম পাতা বেশ রমরমা ছিল। প্রচুর নতুন নতুন খবর। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের জ্বালাময়ী ভাষণ কিংবা হুমকি, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র, শতাধিক পণ্যের ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি, শুল্ক বাড়ার পরও মানুষের কষ্ট তেমন হবে না বলে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের জাদুকরি উক্তি, চারটি সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট পেশ—এই সবই গুরুত্বপূর্ণ খবর। দেশ ও জাতির জন্য এতসব গুরুত্বপূর্ণ খবরের বাইরে গিয়ে ভিন্ন একটা খবর নিয়ে আমি আজ আলোচনা করতে চাই। দুদিন আগে খবরটা জানার পর থেকে আমি আসলে ঠিক স্বস্তি পাচ্ছিলাম না। বিষয়টি হচ্ছে—তিন্নি হত্যা মামলার রায়।

আজকের প্রজন্মের কাছে ‘তিন্নি’ নামটি সম্ভবত তেমন কোনো গুরুত্ব বহন করে না। কারণ, তিনি মারা গেছেন আজ থেকে ২২ বছর আগে। সেই সময়ে আমাদের বয়সও বর্তমানের চেয়ে ২২ বছর কম ছিল। ফলে সেই বয়সে সুন্দরী নারীর মুখ আমাদের হৃদয়কে কিছুটা হলেও বিচলিত করত। কিন্তু এত বছর পরে এসে দুদিন আগে তিন্নিসংক্রান্ত যে খবরটি পড়লাম, তাতে একজন বয়স্ক নাগরিক হিসেবে আমি যেন আরও অনেক বেশি বিচলিত হলাম।

তিন্নি মডেল ছিলেন। সেই সময়ের খুবই আলোচিত মডেল। এই জগতে পা রাখার পর খুব অল্প সময়েই অনেক বেশি আলোচিত হয়েছিলেন তিনি। বলা হয়ে থাকে, তাঁর এই সাফল্যের পেছনে তাঁর স্বামীর বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তিন বছরের সংসার তাঁদের, একটি কন্যাসন্তানও ছিল। সাফল্যের ঢেউয়ে ভাসতে থাকার সময়ে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় সেই সময়ের আলোচিত ব্যক্তি গোলাম ফারুক অভির। অভি ছাত্রনেতা ছিলেন, রাজনীতিবিদ ছিলেন, সাবেক এমপি ছিলেন। ছাত্রনেতা থাকাকালে তাঁর খুব সুনাম ছিল না। এরশাদবিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা অভি গোপনে এরশাদের সঙ্গে আঁতাত করে সাধারণ ছাত্রদের কাছ থেকে প্রচুর ঘৃণা অর্জন করেছিলেন। তারপর এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে একবার সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হয়েছিলেন।

২০০২ সালে এই ঘটনা যখন ঘটে, অভি তখন আর সংসদ সদস্য নন। তখন তিনি ব্যবসায়ী, শিল্প-সংস্কৃতির জগতে তাঁর অবাধ যাতায়াত। এ রকম এক সময়েই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় মডেল তিন্নির। বলা হয়ে থাকে, এই সময়ে তিন্নি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন অভির সঙ্গে। এবং অভির প্ররোচনায় তিন্নি তাঁর স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কও ছিন্ন করেন। স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে তিনি গিয়ে ওঠেন অভির ফ্ল্যাটে। তিন্নি হয়তো ভেবেছিলেন, অভি তাঁকে বিয়ে করবেন। কিন্তু সেটা হয়নি। নভেম্বরের ৬ তারিখে স্বামীকে ডিভোর্স দেন তিন্নি, এর ঠিক চার দিন পর তাঁর লাশ মেলে বুড়িগঙ্গায় চীন মৈত্রী সেতুর নিচে। ছয় বছর তদন্ত করে পুলিশ অভিকে আসামি করে চার্জশিট দেয়। এরপর নানা নাটকীয়তা, নানা আইনি মারপ্যাঁচ, দীর্ঘ বিলম্ব। অবশেষে দুদিন আগে বিচারিক আদালত থেকে পাওয়া গেল রায়। রায়ে বলা হলো—গোলাম ফারুক অভি নির্দোষ। খালাস দেওয়া হলো তাঁকে।

তাহলে তিন্নিকে মারল কে? তাঁকে কি কেউ হত্যা করেনি? অথবা তিন্নি কি আসলেই মারা গেছেন? যে মেয়েটির লাশ পাওয়া গেল সেতুর নিচে একটা পিলারের ওপর, সেটি কি আসলেই তিন্নির ছিল? তাঁর পরিবারের লোকেরা তো লাশ শনাক্ত করেছেন। তাহলে অভির মতো গুরুত্বপূর্ণ লোককে ফাঁসাতে সবাই মিলে ওই নাটকটা করেছে? তিন্নি যদি না মারা গিয়ে থাকে, তাহলে সে এখন কোথায়? সে কি তাহলে অন্য নামে মডেলিং করে? আমি জানি, আমার এতসব প্রশ্নকে আপনারা হাস্যকর বিবেচনা করছেন। কিন্তু আমি যদি বলি, আমার এই প্রশ্নগুলো যদি হাস্যকর হয়, তাহলে অভির খালাসপ্রাপ্তিকে আপনারা কী বলবেন?

ইদানীং আমাদের দেশের বিচারালয়গুলোতে ‘খালাস’ কিংবা ‘সকল আসামি খালাস’ এই শব্দগুলো বেশ উচ্চারিত হচ্ছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, খালেদা জিয়া কিংবা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আনা সব মামলা—এ রকম আরও অনেক মামলায় সবাই যেন আরামদায়ক ভঙ্গিতে খালাস পেয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে কিছু কিছু যে আমার কাছে খুবই যুক্তিগ্রাহ্য মনে হয়নি, তা-ও নয়। আবার কিছু কিছু রায় নিয়ে ভিন্ন ধরনের পাবলিক পারসেপশনও দেখা গেছে। মানুষ কী মনে করে, তা দিয়ে অবশ্যই বিচারের রায়কে কিংবা বিচারব্যবস্থাকে বিচার করা যাবে না। সে বিবেচনায় পাবলিক পারসেপশন মোটামুটি অর্থহীন। কিন্তু পুঞ্জীভূত ‘পাবলিক পারসেপশন’ অনেক সময় পুরো ব্যবস্থাকেই উল্টে-পাল্টে দিতে পারে।

আমি বলছি না, অন্যসব রাজনৈতিক মামলার সঙ্গে অভির এই খালাসপ্রাপ্তির দারুণ কিছু মিল রয়েছে। আমি কেবল সময় এবং হুজুগের কথাটা উচ্চারণ করলাম। এসবের বিপরীতে আমার মূল প্রশ্নটা আসলে সুবিচার প্রাপ্তি নিয়ে। একটা বিচার অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। সাক্ষ্য-প্রমাণ, আলামত, আইনজীবীর যুক্তিতর্ক—এ রকম অনেক কিছুই লাগে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি যদি দরিদ্র হয়, তাহলে সে মামলা চালাতে গিয়ে হিমশিম খায়। অপরাধী যদি ক্ষমতাধর বা অর্থবান হয়, তাহলে সে জাঁদরেল আইনজীবী ভাড়া করে যে বাদীপক্ষকে নাকানি-চুবানি খাওয়াতে পারে, এ সবই আমরা জানি। কিন্তু এতকিছুর পরও প্রশ্ন থাকে, তাহলে কি রাষ্ট্রের কোনো দায়িত্ব থাকে না তার নাগরিককে সুবিচার প্রদানে? ঘাটতিটা কোথায়? বিচার বিভাগের দুর্বলতায়, নাকি রাষ্ট্রের সদিচ্ছায়? এ প্রশ্নগুলো সম্ভবত আগামী দিনেও উঠতে থাকবে।

শেষ করি আবার সেই তিন্নির প্রসঙ্গটি দিয়েই। এত চিন্তার মধ্যেও আমি ভাবছিলাম তিন্নির কন্যাটিকে নিয়ে। যত দূর জানি তিনি তাঁর পিতার সঙ্গে এখন বিদেশে অবস্থান করছেন। তিন্নির মৃত্যুর কিছুদিনের মধ্যেই কন্যাকে নিয়ে বিদেশে চলে যান তাঁর স্বামী। সেই কন্যা এখন নিশ্চয়ই ২৪ বছর বয়স্ক পরিণত মানুষ। কী চলছে এখন তাঁর মনে? তাঁর হৃদয়ের রক্তক্ষরণ কি আমাদের এই রাষ্ট্র উপলব্ধি করতে পারে? তাঁর অনুভূতি কি রাষ্ট্রকে বিচলিত করে?

মাসুদ কামাল, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

 

 

 

সাপ্তাহিক আজকাল
সাপ্তাহিক আজকাল
এই বিভাগের আরো খবর