সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সর্বশেষ:
কেউ আপনার স্ত্রীকে ‘হট’ বললে সেটা কি ভালো লাগে, প্রশ্ন সানার পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে এবাদুলের মিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হংকং-দুবাইয়ে পাচারকারীরা বেপরোয়া ছিল শেখ পরিবারের প্রশ্রয়ে সোনার দাম দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য কতটুকু সত্য? দিনে মাত্র একবেলা খাচ্ছে গাজার অনেক মানুষ পছন্দের লোক নিয়োগ দিতে বদলে দেয়া হয় মেট্রোরেলের নিয়োগবিধি যানজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে দৈনিক ১৩৯ কোটি টাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নজর চার খাতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে বড় পতন হাথুরুসিংহের অপকর্ম ধামাচাপা দেন পাপন ‘ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ আমেরিকার জন্য বিশাল হুমকি হবে’ নীরবে সরবে চাঁদাবাজি পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ছাড়াই গুগল ম্যাপ ব্যবহারের উপায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ বাইডেনের ভাড়া ফাঁকিবাজদের ধরতে চলছে সাঁড়াশি অভিযান সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরীকে গুলি করে মরদেহ নিয়ে গেল বিএসএফ ভিসা ফি ছাড়াই এবার পাকিস্তান যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফি আটক সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয়বহুল সফরে ২৬ ব্যাংক এমডি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ সাবেক সেনাপ্রধান ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা দিনের বেলায় মরুভূমির চেয়েও উত্তপ্ত চাঁদ ডেঙ্গুতে একদিনে ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৩২৭ ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে ২৬৭ প্রবাসী বাংলাদেশি অক্টোবরের মধ্যেই ‘আন্দোলনের ফসল’ ঘরে তুলতে চায় বিএনপি শর্তসাপেক্ষে নিউইয়র্কে মসজিদে আজানের অনুমতি বাংলাদেশ থেকে বিনা খরচে মালয়েশিয়া গেলেন ৩১ কর্মী খেলাপি ঋণ কমাতে কঠোর নির্দেশ জার্মানে পাঁচ বছর বাস করলেই পাওয়া যাবে নাগরিকত্ব বিএনপি-জাপা বৈঠক সিঙ্গাপুরে বাইডেন প্রশাসনকে হাসিনার কড়া বার্তা এবার হাসিনার পাশে রাশিয়া বঙ্গ সম্মেলনের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা স্টুডেন্ট লোন মওকুফ প্রস্তাব বাতিল বাংলাদেশিদের ওপর উপর্যুপরি হামলা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আগে নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা করা: শেখ হাসিনা তামিমের অবসর অভিযোগের তীর পাপনের দিকে নিউইয়র্কে এখন চোরের উপদ্রুব যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে হাতিরঝিলের ক্ষতি হবেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতি, পাঁচ দিনে নিহত ৩৫ যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটছে বাখমুত থেকে পিছু হটেছে সেনারা, স্বীকার করল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণ ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোন হবে না, দাবি আবহাওয়া অধিদপ্তরের সুদানে যুদ্ধে সাড়ে ৪ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত : জাতিসংঘ পারস্য উপসাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে সারা দেশে ভোগান্তি রুশ হামলা সামলে ফের বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে যাচ্ছে ইউক্রেন রিজার্ভ সংকট, খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারের দুর্বল নীতিও দায়ী পূজার ‘জিন’ একা দেখতে পারলেই মিলবে লাখ টাকা! সিরিয়ায় আর্টিলারি হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল বাইডেন না দাঁড়ালে প্রার্থী হবেন কে নাইজেরিয়ায় ৭৪ জনকে গুলি করে হত্যা ভারতে বাড়ছে করোনা, বিধিনিষেধ জারি তিন রাজ্যে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন লুলা যে কোনো দিন খুলবে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল দেশে করোনার নতুন ধরন, সতর্কতা বিএনপির সব পদ থেকে বহিষ্কার আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করবো: মাহিয়া মাহি মর্মান্তিক, মেয়েটিকে ১২ কিলোমিটার টেনে নিয়ে গেল ঘাতক গাড়ি! স্ট্যামফোর্ড-আশাসহ ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বর্ষবরণে বায়ু-শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যে ধাক্কা কোনো ভুল মানুষকে পাশে রাখতে চাই না বাসস্থানের চরম সংকটে নিউইয়র্কবাসী ট্রাকসেল লাইনে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত একাকার! ছুটি ৬ মাসের বেশি হলে কুয়েতের ভিসা বাতিল ১০ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত চুক্তিতে বিয়ে করে ইউরোপে পাড়ি আইফোন ১৪ প্রোর ক্যামেরায় নতুন দুই সমস্যা পায়ের কিছু অংশ কাটা হলো গায়ক আকবরের ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ডলার নারী ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম
১৯৬

সত্তর হাজার ফেরেশতার দোয়া লাভ হয় যে আমলে

প্রকাশিত: ১ মার্চ ২০১৯  

হজরত বারা ইবনে আযেব (রা.) বর্ণনা করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সাতটি জিনিসের নির্দেশ প্রদান করেছেন। 

এক. রোগগ্রস্ত ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়া। 

দুই. জানাযার পেছনে পেছনে যাওয়া। 

তিন. কেউ হাঁচি দিয়ে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বললে তার জবাবে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলা। 

চার. দুর্বলকে সাহায্য-সহযোগিতা করা। 

পাঁচ. মযলূমের সহযোগিতা করা।

ছয়. সালামের ব্যাপক প্রচলন ঘটানো। 

সাত. কসমকারীর কসম পূর্ণ করার ব্যাপারে সহযোগিতা করা। (বুখারী, হাদীস নং- ৫৭৬৬)

 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ হাদীসে উল্লেখিত সাতটি বিষয়ের নির্দেশ দিয়েছেন। সুতরাং এগুলো পালন করা আবশ্যক। এ বিষয়গুলো মুসলমানের জীবনের জন্য মর্যাদা, গৌরব ও সভ্যতার প্রতীক।

রোগীকে দেখতে যাওয়া একটি ইবাদত:
উল্লিখিত সাতটি বিষয়ের মধ্যে সর্বপ্রথম বিষয়টি হলো, রুগ্ন ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়া। অসুস্থ ব্যক্তির প্রতি যত্ন নেয়া একজন মুসলমানের অধিকারও বটে। এ আমল আমরা সকলেই করি। দুনিয়াতে এমন লোকের সংখ্যা নিতান্তই অল্প, যেকোনো রোগীকে অন্তত দেখতে যাই না।

 

তবে এক হলো প্রথা পালন। অমুক ব্যক্তি অসুস্থ, তাই দেখতে না গেলে মানুষ কী বলবে এমন চিন্তায় তাড়িত হয়ে আমরা অসুস্থ ব্যক্তির খোঁজ-খবর নিই। তখন এটা পরিণত হয় ইখলাসবিহীন আমলে, যার মধ্যে আন্তরিক প্রশান্তি লাভ হয় না।

অপরটি হলো, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদেশ পালন। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হয়, আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা। ইখলাসের নিয়তে, সওয়াবের আশায় রোগীর সেবা করলে আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্ট হন। বিভিন্ন হাদীসে রোগী দেখার সওয়াব হিসাবে যেসব ফযীলত বর্ণিত হয়েছে, সেগুলো তখনই পাওয়া যাবে, যখন ইখলাসপূর্ণ থাকবে।

সুন্নতের নিয়ত করে রোগীর সঙ্গে দেখা করবে:
যেমন এক ব্যক্তি কোনো রোগীকে এ আশায় দেখতে যাচ্ছে যে, আমি অসুস্থ হলে সেও আমাকে দেখতে আসবে। যদি আমার অসুস্থতার সময় সে আমাকে দেখতে না আসে, তাহলে ভবিষ্যতে আমিও তাকে দেখতে যাবো না। তাহলে এটা তো ‘বদলা’ এবং ‘প্রথা’ হয়ে গেলো। এর জন্য সওয়াব থেকেও বিরত হবে। পক্ষান্তরে এর মধ্যে যদি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্য থাকে, ‘বিনিময়’ কিংবা ‘রুসম’-এর নিয়ত না থাকে, তখন সওয়াব পাওয়া যাবে। আর তখনই বুঝা যাবে যে, এটি ইখলাসপূর্ণ হয়েছে এবং সুন্নতের ওপর আমল করার সদিচ্ছায় হয়েছে।

 

শয়তানি কৌশল:
শয়তান আমাদের ঘোরতর দুশমন। আমাদের ইবাদতগুলোর মাঝে সে আমল নষ্টের বেলায় খুবই দক্ষতা দেখায়। যেসব ইবাদত সহীহ নিয়তে করতে পারলে আল্লাহ অনেক সওয়াব দান করেন এবং আখেরাতে খুবই কাজে আসবে, শয়তান সেগুলোতে বিঘ্ন ঘটায়। শয়তান চায় না, আমাদের আখেরাতের জগত সুখময় হোক। ইবাদত-বন্দেগীতে আমাদের নিয়ত বিশুদ্ধ হোক। এটাও তার সহ্য হয় না। যেমন বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাত করা, তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা, তাদের হাদিয়া-তোহফা দেয়া এগুলো সবই অনেক সাওয়াবের কাজ এবং দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত। এসবের মাধ্যমে আল্লাহ খুশি হন এবং প্রতিদানও দেন। কিন্তু যে বিঘ্ন ঘটায় তারই নাম শয়তান।

সে নিয়তের মধ্যে খাদ প্রবেশ করিয়ে দেয়। যার ফলে মানুষ কুচিন্তায় মরে। মানুষ চিন্তা করে, ‘আমি শুধু ওই লোকের সঙ্গে সদাচারণ করবো, যে আমার সঙ্গে সদাচারণ করে। কেবল ওই লোককে হাদিয়া দিবো, যে আমাকে হাদিয়া দেয়। বদলা যেখানে নেই, সেখানে আমিও নেই। তার বিয়েতে আমি উপহার দিতে যাব কেন, সে কী আমাকে উপহার দিয়েছে?’ এ জাতীয় চিন্তার অনুপ্রবেশ শয়তান ঘটায়। এর কারণেই আজ সমাজে হাদিয়ার প্রচলন কমে গেছে। অথচ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এক মহামূল্যবান সুন্নত হলো এক মুসলমান অপর মুসলমানকে হাদিয়া দিবে। শয়তানের এসব চক্রান্ত আমাদেরকে বুঝতে হবে। মুক্তা মাটি করে দেয়ার কুমন্ত্র সে জানে, তাই তার ষড়যন্ত্র ছিন্ন করে দিতে হবে। হাদিয়া যেন নিছক রুসমে পরিণত না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

 

রোগী দেখার ফযীলত:
হাদীস শরীফে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন: ‘এক মুসলমান অসুস্থ হলে অপর মুসলমান যখন তাকে দেখতে যায়, তখন যতক্ষণ পর্যন্ত সে সেখানে অবস্থান করে, ততক্ষণ পর্যন্ত যেন সে জান্নাতের বাগিচায় অবস্থান করে।’ (মুসলিম, হাদীস নং- ৪৬৫৯, তিরমিযী, হাদীস নং- ৮৯০)

অপর হাদীসে আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘কোনো মুসলমান অপর অসুস্থ মুসলমানকে সকাল বেলা দেখতে গেলে সন্ধ্যা পর্যন্ত সত্তর হাজার ফেরেশতা তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনার দুআ করতে থাকে। সন্ধ্যায় দেখতে গেলে সকাল পর্যন্ত সত্তর হাজার ফেরেশতা তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে। আর আল্লাহ তায়ারা তার জন্য বেহেশতের একটি বাগান বরাদ্দ করে দেন।’

সত্তর হাজার ফেরেশতার দোয়া লাভ করুন:
সামান্য কথা নয়। সত্তর হাজার ফেরেশতার দোয়া লাভ নিশ্চয় অনেক বড় বিষয়। পাশের বাসার অসুস্থ লোকটিকে মাত্র পাঁচ মিনিটের জন্য দেখতে গেলে এত বিশাল সওয়াবের মালিক হওয়া যায়। এরপরেও কী ‘প্রতিদানের’ প্রতি তাকিয়ে থাকবেন? সে আমাকে দেখে কীনা, আমার অসুস্থাতায় তার কোনো দরদ তো আমি দেখি না এ জতীয় অভিযোগ-অনুযোগ উত্থাপন করার অর্থ হলো, সত্তর হাজার ফেরেশতার দোয়া থেকে, বেহেশতের বাগান থেকে সর্বোপরি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এক মহান সুন্নত থেকে আপনি বিমুখ হচ্ছেন।

অসুস্থ ব্যক্তি যদি ক্ষোভের পাত্র হয় তাহলে:
যদি রাগ থাকে, তবে কার ওপর রাগ? অসুস্থ ব্যক্তির ওপর? তবুও যান। সওয়াবের নিয়তে তাকে দেখতে যান। সত্তর হাজার ফেরেশতার দোয়া লাভের আশায় যান। জান্নাতে বাগান লাভের জন্য যান। ‘ইনশাআল্লাহ’ এর কারণে অনেক সওয়াবের অধিকারী হবেন। আপনার অন্তরে অসুস্থ ভাইয়ের ব্যাপারে যে অভিযোগ আছে, তা দরদের জোয়াবে যাবে। আল্লাহর ওয়াস্তে এটাকে রুসম মনে করে এর তাৎপর্য বিলুপ্ত করে দিবেন না। অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখা সামাজিক প্রথা নয়, বরং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত। এর জন্য আল্লাহ অনেক সওয়াব রেখেছেন।

অল্প সময় অবস্থান করবে:
অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখার বিষয়ে কিছু আদব আছে। যেগুলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে দিয়েছেন। আসলে জীবনের প্রতিটি বিষয় সম্পর্কেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দিক-নির্দেশনা আছে। অথচ আমরা তা আজ ভুলে যাচ্ছি। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশিত শিষ্টাচার নিজের জীবন থেকে আমরা বের করে দিয়েছি। যার ফলে জীবন আজ পরিণত হয়েছে আযাবে। তাঁর নির্দেশিত পথ আঁকড়ে ধরলে এখনো সম্ভব যে, জীবনটাকে জান্নাতে পরিণত করা যাবে। অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়ার আদব কী? এ সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

من عاد منكم فليخفف

অর্থাৎ অসুস্থ ব্যক্তিকে যখন দেখতে যাবে, তখন অল্প সময়ের মধ্যে কাজ সেরে নিবে। এমন যেন না হয় যে, তুমি তাকে দেখতে গেলে অথচ মূহুর্তটি তার উপযোগী নয়। দরদের কারণে তার কাছে গেলে অথচ পরিবেশটা দেখার উপযুক্ত। তোমার দরদ যেন রোগীর কষ্টের কারণ না হয়। তোমার দরদের বহিঃপ্রকাশ যেন তার জন্য কষ্টের উপকরণ না হয়। বরং দেখবে, এখন তার সঙ্গে সাক্ষাত করা যাবে কী না, তার পরিবার-পরিজন তার সঙ্গে এ মূহূর্তে আছে কী না, তোমার যাওয়ার কারণে পর্দার ব্যবস্থা করা লাগবে, এটা তার জন্য এ মূহূর্তে  সম্ভব কী না, এখন তার আরামের সময় কী না। এসব বিষয় লক্ষ্য রেখে তারপর সবকিছু অনুকূলে হলে তাকে দেখতে যাবে। এটা অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ আদব। এ আদবের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।

এটা সুন্নত পরিপন্থী:
রোগীকে দেখতে গেলে সেখানে আঁঠার মতো বসে থাকবে না। এতে রোগী বিরক্ত হতে পারে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানব-প্রকৃতি সম্পর্কে ছিলেন। এ ব্যাপারে তাঁর চেয়ে প্রাজ্ঞ আর কে হতে পারে? দেখুন! সাধারণত যেকোনো অসুস্থ লোক নিজস্বতা বজায় রেখে একটু আরামে থাকতে চায়। প্রতিটি কাজ সে নিজের মতো করতে চায়। কিন্তু মেহমানের সামনে তা সম্ভব হয়ে উঠে না। যেমন অসুস্থ ব্যক্তি চাচ্ছে একটু পা ছড়িয়ে বসতে। সে সময়ে যদি এমন কোনো মেহমান আসে যে তার কাছে সম্মানের পাত্র, তাহলে পা ছড়িয়ে বসাটা তার কাছে ভালো লাগবে না অথবা ইচ্ছা করছে নিজ ঘরের লোককে কিছু বলবে, কিন্তু মেহমানের সামানে হয়ত তা সম্ভব নয়, এই যে বাধা, প্রতিবন্ধকতা এবং বিরক্তি এটা তো মেহমানের কারণেই হচ্ছে। মেহমান গিয়েছে অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখার জন্য, অথচ এর মাধ্যমে নিজের অজান্তেই তাকে কষ্ট দেয়া হচ্ছে। তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তুমি মেহমান। রোগী দেখার উদ্দেশ্যে গিয়েছ। সওয়াব লাভের উদ্দেশ্যে গিয়েছ। লক্ষ্য রাখবে, এটা যেন রোগীর কাছে বিরক্তিকর না হয়। অন্যথায় সুন্নত পালনের পরিবর্তে তা শাস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

 

হজরতআবদুল্লাহ ইবনে মুবারক (রহ.) এর ঘটনা:
মহান সাধক হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মুবারক (রহ.) অনেক বড় মুহাদ্দিস ও ফকীহ ছিলেন। অনেক বৈশিষ্ট্যের সমাহার আল্লাহ তার মাঝে ঘটিয়েছিলেন। একবার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। এ মহান ব্যক্তির ভক্ত-অনুরক্তের সংখ্যাও তো আর কম নয়। তাই দর্শনার্থীরা তার বাড়িতে ভিড় জমালো। একের পর এক আসছিলো আর তার খোঁজ-খবর নিচ্ছিলো। ইত্যবসরে এক লোক এলো, খোঁজ-খবর জিজ্ঞেস করলো, তারপর সেখানে বসে পড়ল। বসলো তো বসলোই, আর যেন উঠার নাম নেই। আবদুল্লাহ ইবনে মুবারক (রহ.) চাচ্ছিলেন, এ ব্যক্তি যেন বিদায় হয়। কিন্তু লোকটি যেন এটা বুঝতেই চাইছে না। সে এদিক সেদিক কথা বলেই যাচ্ছিল। এ অবস্থা দেখে আবদুল্লাহ ইবনে মুবারক (রহ.) অভিযোগের সুরে বললেন, ভাই! এমনিতে অসুস্থতার কারণে কষ্ট পাচ্ছি। তার চেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছি যারা দেখতে আসে তাদের পক্ষ থেকে। সময় বোঝে না, পরিবেশ বোঝে না। আসে তো আসেই। আর যেতে চায় না।

লোকটি উত্তর দিলো, ‘হজরত! এসব লোকের কারণে নিশ্চয় আপনি কষ্ট পাচ্ছেন, তাই আপনার অনুমতি হলে দরজাটা বন্ধ করে আসতে পারি। তখন আর কেউ আসার সুযোগ পাবে না। আপনি আরাম করতে পারবেন।’ আল্লাহ এ বান্দা এতই বোকা যে, এরপরেও তার বোধোদয় হয় না। অবশেষে নিরূপায় হয়ে আবদুল্লাহ ইবনে মুবারক (রহ.) বললেন, ‘হ্যাঁ, তাহলে দরজাটা বন্ধ করে দাও। তবে বাইরে গিয়ে বন্ধ করে দাও।’ কিছু মানুষের অনুভূতিশক্তি একটু কম। তাদেরকে অনেক ক্ষেত্রে এভাবেই তাড়াতে হয়।

সাপ্তাহিক আজকাল
সাপ্তাহিক আজকাল
এই বিভাগের আরো খবর