সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নিউজিল্যান্ডের মসজিদে হত্যাকাণ্ড নিয়ে যা বলেছে খুনি ও পরিবার

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০২:৩৭ পিএম, ২২ মার্চ ২০১৯ শুক্রবার

৫ মার্চ, শুক্রবার। রক্তাক্ত এক কালো অধ্যায় জন্ম নিলো শান্তির দেশ নিউজিল্যান্ডে। এ দিন দেশটির ক্রাইস্টচার্চের আল-নূর ও লিনউড মসজিদে অর্ধশতাধিক নির্দোষ মুসল্লিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

 

কট্টর শেতাঙ্গ বর্ণবাদী ২৮ বছরের ব্রেন্টন ট্যারেন্ট এ হত্যাযজ্ঞ চালায়। সে ছিল কট্টর মুসলমান ও অভিবাসী বিদ্বেষী। হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে খুনি জানায়, ‘২০১৭ সালে সুইডেনের স্টকহোমে সন্ত্রাসী হামলায় ১১ বছর বয়সী শিশু এব্বা অকারলান্ডের নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই তার এ হামলা।

 

এদিকে হত্যাকারী ব্রেন্টনের চাচা ও দাদির খোঁজ পাওয়া গেছে। ব্রেন্টনের পরিবার ক্রাইস্টচার্চের হত্যাকাণ্ডকে অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে উল্লেখ করে তারা এই ঘটনার হতাহতদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন এবং গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন। সিডনির মনিং হেরাল্ড পত্রিকায় অস্ট্রেলীয় টিভি চ্যানেল নাইনের বরাতে এ তথ্য প্রকাশ করে।

অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলীয় শহর গ্রাফটনে তাদের বসবাস। সেখানেই ব্রেন্টন ও তার বোনের বেড়ে ওঠা। ২০১০ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ব্রেন্টনের বাবা মারা যায়। মা কোথায় আছে সে ব্যাপারে কোনো তথ্য জানা যায়নি।

তবে দাদী ও এক চাচার সাক্ষাৎকার নিয়েছে নিউজ নাইন। তার দাদী জানায়, ছোট বেলা থেকে ব্রেন্টন ও তার এক বোনকে কোলে-পিঠে করে বড় করেছেন তিনি।

৮১ বছর বয়সী দাদী ম্যারি ফিটজেরাল্ড বলেন, ছোট বেলা কম্পিউটার নিয়ে বসে থাকা সাধারণ বালক ব্রেন্টন ট্যারেন্ট। শুক্রবার সে যে সহিংসতা ঘটিয়েছে তাতে আমরা বিস্মিত। ছোট বেলা থেকে যে ছেলেটিকে আমরা চিনতাম, এ সে নয়। সে পুরোপুরি বদলে গেছে।

ট্যারেন্টের চাচা টেরি ফিটজেরাল্ড বলেন, হতাহত ও তাদের পরিবারের দুঃখগুলো ছাড়া আর কিছু আমার মাথায় আসছে না। এই ঘটনার জন্য পরিবারগুলোর কাছে আমরা দুঃখিত।

উল্লেখ্য যে, তদন্তকারীদের ধারণা- অন্তত দুই বছর আগ থেকে ব্রেন্টন ট্যারেন্ট এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করছিলো। ফেসবুক লাইভে গিয়ে হত্যাকাণ্ড পরিচালনা এবং অনলাইনে ইশতেহার ছড়িয়ে দেয়াই তা প্রমাণ করে।

প্রথমেই সে আল-নূর মসজিদে হামলা চালায় তারপর লিনউড মসজিদে ছুটে গিয়ে সেখানেও গুলি চালায়। দুই মসজিদে অর্ধশতাধিক মানুষকে হত্যা করে তারপর সে পালিয়ে যায়। এর মধ্যে বাংলাদেশি ৫ জন এ হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।

শান্তি, নিরাপদ ও সুন্দরের দেশ নিউজিল্যান্ডে এমন বর্বর হত্যাকাণ্ড সারাবিশ্বকেই বিস্মিত করে দিয়েছে। ব্রেন্টন ট্যারেন্ট কেন বা কী উদ্দেশ্যে এ জঘন্য ঘটনায় জড়িত হলো তার কোনো উত্তর দিতে পারেনি তার পরিবার।