ঢালিউডে প্রিয়দর্শিনীর ২৬!
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৬:২৯ পিএম, ২৫ মার্চ ২০১৯ সোমবার
আজকের এই দিনে রুপালি পর্দায় আর্বিভাব হয়েছিল প্রিয়দর্শিনী মৌসুমীর। আজকের এই দিনে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবিতে প্রথম দেখা মেলে এই চিত্রনায়িকাকে। এ ছবিতেই আগমন ঘটে ঢাকাই চলচ্চিত্রের ক্ষণজন্মা নায়ক সালমান শাহর। ১৯৯২ সালের ৩ আগস্ট বিএফডিসিতে ছবিটির মহরত অনুষ্ঠিত হয়। আর ১৯৯৩ সালের ২৫ মার্চ ঈদুল ফিতরে ছবি মুক্তি পায়। মুক্তির দিন থেকে ছবিটি দেখতে দর্শকদের ঢল নামে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে ব্যবসা সফল ছবি হিসেবে সেরা চারটি ছবির একটি হিসেবে এটি তখন আট কোটি বিশ লাখ টাকা আয় করে।
‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবির দৃশ্যে সালমান শাহ এবং মৌসুমী
ছবিটি আমির খান-জুহি চাওলা জুটির সুপারহিট হিন্দি চলচ্চিত্র ‘কেয়ামত সে কেয়ামত’ এর অফিসিয়াল পুনঃনির্মাণ। হিন্দি চলচ্চিত্রের কাহিনী লিখেছেন নাসির হোসেন খান, যার বাংলা চিত্রনাট্য লিখেছেন সোহানুর রহমান সোহান ও সংলাপ লিখেছেন আশীষ কুমার লোহ। চলচ্চিত্রটির প্রযোজক সুকুমার রঞ্জন ঘোষ এবং প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আনন্দমেলা সিনেমা লিমিটেড। এতে মৌসুমী-সালমান শাহ ছাড়াও আরো অভিনয় করেন রাজিব, আহমেদ শরীফ, আবুল হায়াত প্রমুখ। এটি মৌসুমী ও সালমান শাহ অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র। এই ছবিতে আরো অভিষেক হয় কণ্ঠশিল্পী আগুনের।
সিনেমাটির গল্পে দেখা গেছে, মির্জা ও খান পরিবার একই গ্রামে দুটি প্রভাবশালী পরিবার। খান পরিবারের ছেলে খান বাহাদুর কবির উদ্দিন মির্জা পরিবারের মেয়ে ডিম্পলের সঙ্গে অবৈধ মেলামেশা থেকে ডিম্পল গর্ভবতী হয় পরে। জানাজানি হয়ে গেলে বড় মির্জা খান বাহাদুর রইস উদ্দিনের কাছে তাদের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায়। কিন্তু কবিরউদ্দিন ভয়ে মিথ্যা বলে। বড় মির্জা ক্ষুদ্ধ হয় ফিরে আসে। কবিরউদ্দিন ডিম্পলকে অস্বীকার করেছে জানার পর ডিম্পল আত্মহত্যা করে। মির্জা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ডিম্পলের মৃতদেহ নিয়ে খান বাড়িতে যায় এবং সে কবির উদ্দিনকে খুন করে। সালাউদ্দিনের জেল হয়ে যায়। আর বড় মির্জা সবাইকে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। বিশ বছর পর সালাউদ্দিন জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তার ছেলে রাজের কলেজে গিয়ে তাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে। সালাউদ্দিন রাজকে গ্রামে একটি কাজের জন্য পাঠায়। সেখানে তার রেশমির সঙ্গে দেখা হয়। পরে শহরে এসে তাদের আবার দেখা সাক্ষাৎ হতে থাকে এবং সেই থেকে প্রেম। তাদের প্রেমের বিষয় জানাজানি হয়ে গেলে রেশমির বাবা খান বাহাদুর নাজিমউদ্দিন ও রাজের বাবা মির্জা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন তাদের সামর্থ্যের মধ্যে যা কিছু করতে পারে করবে বলে একে অপরকে শাসায়। কিন্তু রাজ রেশমি একে অপরকে খুব ভালোবাসে এবং তাদের সেই সম্পর্ক ঠিকিয়ে রাখার জন্য বিয়ের আসর থেকে রাজ রেশমিকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
চলচ্চিত্রটির সঙ্গীত পরিচালনা করেন আনন্দ চিত্রগুপ্ত-মিলিন্দ চিত্রগুপ্ত ও আলম খান। গীতিকার ছিলেন মনিরুজ্জামান মনির। গানে কণ্ঠ দেন রুনা লায়লা ও খান আসিফ আগুন। গানের রেকর্ডিং হয় অনুপম রেকর্ডিং স্টুডিওতে।
এই নিজেদের মেধার জানান দেন মৌসুমী। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি ঢালিউডে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন। তারপর দুই দশকের বেশি সময় ধরে ঢালিউডে মেধার দ্যুতি ছড়াচ্ছেন মৌসুমী। প্রায় দুই শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। নারগিস আক্তার পরিচালিত ‘মেঘলা আকাশ’ও চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘দেবদাস’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। সালমান শাহের সঙ্গে জুটি বেঁধে ক্যারিয়ার শুরু করা মৌসুমী সফল হয়েছেন ওমর সানী, ইলিয়াস কাঞ্চন, রুবেল, রিয়াজ, ফেরদৌস ও মান্নার সঙ্গে জুটি বেঁধে।