সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আল্লাহর কালাম শুনলে যাদের চোখ ভিজে যায়

ডেস্ক রিপোর্ট

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৫:২৯ পিএম, ২৮ মার্চ ২০১৯ বৃহস্পতিবার

এরা তারাই, যাদের ওপর আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন। এরা হলো আদমের বংশের নবী। আর নুহের সঙ্গে নৌকায় যাদের আরোহণ করিয়েছিলাম তাদের বংশধর, ইবরাহিম ও ইসরাইলের [ইয়াকুব (আ.)] বংশধর এবং যাদের আমি সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছিলাম ও মনোনীত করে নিয়েছিলাম, তাদের বংশধর। যখন করুণাময়ের আয়াত তাদের শোনানো হয় তখন তারা কান্নারত অবস্থায় সিজদায় লুটিয়ে পড়ে। (সুরা : মারিয়াম, আয়াত : ৫৮) 

তাফসির : আগের কয়েকটি আয়াতে কয়েকজন নবীর কথা সংক্ষিপ্তভাবে উল্লেখ করা হয়েছিল। মহান আল্লাহ তাঁদের প্রতি বিশেষ অনুগ্রহ করেছেন। তাঁদের নবী হিসেবে মনোনীত করেছেন। তাঁদের পথই সরল, সঠিক পথ। এসব নবী আদম (আ.), নুহ (আ.), ইবরাহিম (আ.)-এর বংশধর ছিলেন। নবীদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, তাঁরা একাগ্রচিত্তে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগি করতেন। তাঁরা আল্লাহর সামনে সেজদাবনত হতেন। সেজদারত অবস্থায় তাঁদের চোখ ভিজে যেত।

পবিত্র কোরআন পাঠের আদব হলো, পাঠের সময় ক্রন্দন করা। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “নবী করিম (সা.) আমাকে বলেছেন, ‘আমাকে তুমি তিলাওয়াত করে শোনাও।’ বললাম, ‘আমি আপনাকে তিলাওয়াত শোনাব, অথচ আপনার ওপরই এটি অবতীর্ণ হয়েছে?’ তিনি বলেন, ‘আমি অন্যের তিলাওয়াত শুনতে পছন্দ করি।’ অতঃপর আমি তাঁকে সুরা নিসা পড়ে শোনাতে লাগলাম। যখন আমি সুরা নিসার ৪১ নম্বর আয়াত তিলাওয়াত করলাম, তিনি বললেন, ‘ব্যস, যথেষ্ট হয়েছে।’ আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখলাম তাঁর চোখ থেকে অঝোর ধারায় অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছে।” (বুখারি, হাদিস : ৫০৫০; মুসলিম : ১৯০৩)

আয়াতটি হলো, ‘যখন আমি প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকে উপস্থিত করব তাদের ওপর সাক্ষীরূপে, তখন কী অবস্থা হবে?’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৪১)

কাসিম (রহ.) একবার আয়েশা (রা.)-এর কাছ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। তিনি দেখেন, আয়েশা (রা.) একটি আয়াত বারবার আবৃত্তি করছেন আর কেঁদে কেঁদে দোয়া করছেন। আয়াতটি হলো, ‘অতঃপর আল্লাহ আমাদের প্রতি দয়া করেছেন এবং আগুনের আজাব থেকে আমাদের রক্ষা করেছেন।’ (সুরা আত-তুর, আয়াত : ২৭)

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) যখন এ আয়াত তিলাওয়াত করেন, ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করেন। আয়াতটি হলো, ‘আর মৃত্যুর যন্ত্রণা অবশ্যই আসবে, যা থেকে তুমি পলায়ন করতে চাইতে।’ (সুরা ক্বফ, আয়াত : ১৯)

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) যখন এ আয়াত পড়তেন তখনই তিনি কান্নাকাটি করতেন। আয়াতটি হলো, ‘...আর তোমাদের মনে যা আছে, তা যদি তোমরা প্রকাশ করো অথবা গোপন করো, আল্লাহ সে বিষয়ে তোমাদের হিসাব নেবেন...।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৮৪)

মূলকথা হলো, কোরআন তিলাওয়াতের সময় কান্নাকাটি করা এবং চোখে পানি আসা ঈমানের আলামত। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোরআনের পাঠকদের মধ্যে ওই ব্যক্তির কণ্ঠ সর্বোত্তম, যার তিলাওয়াত কেউ শুনলে মনে হয় যে সে কাঁদছে।’ (ইবনে মাজা, হাদিস : ১৩৩৯)