যেভাবে ইসলাম এসেছে নিউজিল্যান্ডে
ডেস্ক রিপোর্ট
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৫:৩০ পিএম, ২৮ মার্চ ২০১৯ বৃহস্পতিবার
প্রায় ৭০০ বছর আগে পলিনেশীয় বিভিন্ন জাতি নিউজিল্যান্ড আবিষ্কার করে এবং এখানে বসতি স্থাপন করে। এরা ধীরে ধীরে গড়ে তোলে একটি স্বতন্ত্র মাওরি সংস্কৃতি। ১৬৪২ সালে প্রথম ইউরোপীয় অভিযাত্রী, ওলন্দাজ আবেল তাসমান নিউজিল্যান্ডে নোঙর ফেলেন। কিন্তু মাউরিরা তাদের শক্ত হাতে দমন করায় তারা ব্যর্থ হয়ে ফিরে যায়।
এরপর আঠারো শতকের শেষ দিক থেকে অভিযাত্রী, নাবিক, মিশনারি ও বণিকরা নিয়মিত এখানে আসতে থাকে। ১৮৪০ সালে ব্রিটিশদের কাছে পরাস্ত হয়ে অবশেষে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ও নিউজিল্যান্ডের মাওরি গোত্রগুলো চুক্তি স্বাক্ষর করে এবং এর ফলে নিউজিল্যান্ড ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনে আসে। মাওরিদের ব্রিটিশ নাগরিকদের সমান মর্যাদা দেওয়া হয়। এ সময় নিউজিল্যান্ডে ব্যাপকভাবে ইউরোপীয়দের বসতি স্থাপন শুরু হয়। ইউরোপীয় অর্থনৈতিক ও বিচারব্যবস্থা আরোপের ফলে মাওরিরা তাদের বেশির ভাগ জমিজমা ইউরোপীয়দের কাছে হারিয়ে দরিদ্র হয়ে পড়ে।
জাতি-গোষ্ঠী
নিউজিল্যান্ডে বিভিন্ন জাতির বসবাস। ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠার পর ইউরোপ, এশিয়া, মিডলইস্ট, আফ্রিকাসহ নানা দেশের বহু মানুষ এখানে এসে বসতি স্থাপন করে। যার বর্তমান সংখ্যা : ইউরোপীয় ৭১.২ শতাংশ, মাওরি ১৪.১ শতাংশ, এশিয়ান ১১.৩ শতাংশ, প্যাসিফিক ৭.৬ শতাংশ, মধ্যম পূর্ব লাতিন আমেরিকান, আফ্রিকান ১.১ শতাংশ, অন্যান্য ১.৬ শতাংশ অথবা বলা যায় ৫.৪ শতাংশ নাগরিকের পরিচয়ই অজ্ঞাত।
ভাষা
যেহেতু এখানে হরেক রকম জাতি-গোষ্ঠীর সমাগম, তাই নিউজিল্যান্ডে বেশ কয়েকটি ভাষার প্রচলন রয়েছে। যার মধ্যে ইংরেজি (কার্যত সরকারি) ৮৯.৮ শতাংশ, মাওরি ৩.৫ শতাংশ, সামোয়ান ২ শতাংশ, হিন্দি ১.৬ শতাংশ, ফরাসি ১.২ শতাংশ, উত্তর চীনা ১.২ শতাংশ, ইউ ১ শতাংশ।
ধর্ম
খ্রিস্টান ৪৪.৩ শতাংশ, হিন্দু ২.১ শতাংশ, বৌদ্ধ ১.৪ শতাংশ, খ্রিস্টান মাওরি ১.৩ শতাংশ, ইসলাম ১.১ শতাংশ, অন্যান্য ধর্ম ১.৪ শতাংশ, অজ্ঞাতপরিচয় ৮.২ শতাংশ।
আয়তন : দুই লাখ ৬৭ হাজার ৭১০ বর্গকিলোমিটার।
মুসলিমদের অবস্থা
নিউজিল্যান্ড যেহেতু ধর্ম প্রচার ও অর্থ আয়ের দিক দিয়ে সমৃদ্ধ ও উর্বর একটি ভূমি, তাই মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের মুসলিমরা এখানে বসতি গড়ে তুলেছে। যার সংখ্যা এক লাখের কাছাকাছি হবে। যাদের মধ্যে অনেক যোগ্য ও অভিজ্ঞ আলেমও রয়েছেন। যাঁদের অনেকেই হিন্দুস্তান বা তত্সংলগ্ন অঞ্চল থেকে শিক্ষা অর্জন করেছেন। যাঁরা প্রতিনিয়তই নিউজিল্যান্ডে ইসলাম প্রচার ও সেখানকার মুসলিমদের ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করার পেছনে দিন-রাত শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন।
নিউজিল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে মুসলিম বসতি ঘেঁষে গড়ে উঠেছে মসজিদ। ব্যবস্থা করা হয়েছে শিশুদের ধর্মীয় প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা, হেফজখানা ইত্যাদি। কোনো কোনো মসজিদের উদ্যোগে সেখানে প্রতিষ্ঠা করেছে সানডে স্কুল। যেখানে ছুটির দিন বাচ্চাদের দিনব্যাপী ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হয়। এ শিক্ষা আরো উন্নত করার লক্ষ্যে সেখানে দিন দিন গড়ে উঠছে আরো অনেক আধুনিক মাদরাসা।
আলহামদুলিল্লাহ! মুসলিমরা সংখ্যায় কম হলেও সেখানকার মুসলিমদের একান্ত আন্তরিকতা ও ধর্মভীরুতার দরুন সেখানে ইসলামের প্রচার ও প্রসারের কাজ জোরেশোরেই চলছে।