সোমবার   ১৮ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৪ ১৪৩১   ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিতর্কিত রাখীর গণমাধ্যমে বক্তব্যগুলো সাহসী না বোকামি?

বিনোদন ডেস্ক:

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১২:৩৫ পিএম, ৪ এপ্রিল ২০১৯ বৃহস্পতিবার

রাখী সাওয়ান্ত। সমস্ত বিতর্কের উর্ধে এই নারী। তাকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার মত কিছুই নেই। আর যারা তাকে চেনেন, তারা তাকে ভুলে যাওয়ারও কোন অবকাশ নেই। কারণ তিনি আপনাকে চাইলেও ভুলতে দিবেন না। কারণ তিনি হচ্ছেন বলিউডের বিতর্কিত রাণী।

নিত্য নতুন বিতর্কে জড়ানো আর স্যোশাল মিডিয়ায় অদ্ভুদ ও বিচিত্র সব কাণ্ডকীর্তি ঘটানোর সুবাদে তিনি প্রায় রোজই মুখরোচক সব খবরের জন্ম দেন ভারতীয় গণমাধ্যমে। তাকে নিয়ে পশ্চিমা গণমাধ্যমে এমন কোন দিন নেই যে খবর প্রচার হয় না। মন্দ হোক অপমানজনক হোক সব ধরণের নিছক কথাবার্তা বলে আলোচনায় থাকতে তিনি বেশ পছন্দ করেন।
 
আজ ডেইলি বাংলাদেশের পাঠকদের জন্য থাকছে এই বিতর্কিত নারীকে নিয়ে আলোকপাত, যেখানে আলোচনা করা হবে কে এই রাখী? কেন এত সংবাদের শিরোনাম হন তিনি? 

রাখী সাওয়ান্ত কে? রাখীর আসল নাম নিরু ভেদা। জন্ম ১৯৭৮ সালের ২৫ নভেম্বর। তিনি জয়া ভেদার প্রথম ঘরের (প্রথম স্বামীর) সন্তান। পরে জয়া বিয়ে করেন আনন্দ সাওয়ান্তকে। যিনি ছিলেন ওরলি পুলিশ স্টেশনের কনস্টেবল।

রাখীর বাবা (দ্বিতীয় বাবা) নিরুর (রাখীর) বিনোদন জগতে নাম লেখানোর চূড়ান্ত বিরোধী ছিলেন। যদিও নিরুর পরিবারের আরো দুই সদস্য বিনোদন জগতের সদস্য ছিলেন। তার ভাই রাকেশ সাওয়ান্ত হলেন পরিচালক, আর বোন উষা সাওয়ান্ত হলেন সাবেক অভিনেত্রী। বর্তমান রাখীর বলিউডে অভিষেক হয় আইটেম গার্ল হিসেবে। সেটা ২০০০ সালের ঘটনা। গোবিন্দর সাথে একটা আইটেম গানে ‘জরু কা গোলাম’ সিনেমায় দেখা যায় তাকে। তখন অবশ্য রাখীর নাম ছিল রুহি সাওয়ান্ত।

এদিকে, প্রথম তাকে ২০১৬ সালে ‘এক কাহানি জুলি কি’ নামের একটি হিন্দি সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে দেখা যায়। যদিও থ্রিলারধর্মী এই সিনেমাটি একদমই ব্যবসা করতে পারেনি। পরবর্তীতে রাখী হিন্দি ছাড়াও কান্নাড়া, তামিল, তেলেগু, মারাঠি ও ওড়িয়া সিনেমাতেও কাজ করেছেন। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, পর্দায় নয় তার বাইরের ঘটনাই তাকে খবরের শিরোনাম করেছে বারবার।

বলিউডে আসার আগে রাখী কি করতেন, কেমন ছিলেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে চমকে উঠবেন যে কেউই। কারণ তাকে এর আগে দেখা গিয়েছিল বলিউডের এক কালের নায়িকা টিনা মুনিম ও ব্যবসায়ী অনিল আম্বানির বিয়েতে। যেখানে তিনি খাবার পরিবেশনকারী দলের একজন ছিলেন।

মোদ্দাকথা, বাস্তব জীবনে রাখী সব কিছুই করেছেন। বলিউডের আইটেম গানে যেমন নেচেছেন, তেমনি রিয়েলিটি শো করেছেন, অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন, এমনকি গান গেয়েছেন আর সাধারণ মানুষের কাজও তিনি করেছেন। এরপর ২০০৭ সালে বের হয় তার একক অ্যালবাম ‘সুপারগার্ল’। তাছাড়া ২০০৯ সালে এসে ইমাজিন টিভিতে ‘রাখী কা সয়াম্বার’ নামে একটি রিয়েলিটি শো-তে দেখা যায় তাকে। সেখানে নিজের জন্য সঙ্গী হিসেবে তিনি বেছে নেন কানাডিয়ান ব্যবসায়ী ইলেশ পারুজানওয়ালাকে। যদিও পরে তার সাথে রাখীর ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।

গল্প এখানেই শেষ নয়। রাখী পরে নিজে একটা রাজনৈতিক দলও গঠন করেছিলেন। জয় শাহকে প্রধান করে সেই দলের নাম ছিল ‘রাষ্ট্রীয় আম পার্টি’। এই রাজনৈতিক দল ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনও করে। যদিও নির্বাচনের পর রাখী রিপাবলিকান পার্টি অব ইন্ডিয়াতে (আরপিআই) যোগ দেন।

মিডিয়া জগতে রাখী তার ‘সাহসী’ বক্তব্যের জন্য বেশ জনপ্রিয়। যদিও তার বক্তব্যগুলো আদৌ সাহসী না বোকামি, সেটা নির্ধারণের দায়িত্ব পাঠক-দর্শকদের ওপরই দেয়া ভালো। একবার খবর বের হল, সানি লিওনের সাথে কাজ করতে আগ্রহী আমির খান’! এর প্রেক্ষিতে রাখী বলেন, আমির খান সানি লিওনের সাথে কাজ করবেন? শোনো, একটা ভাল খবর আমার কাছেও আছে। তোমাদের রাখী সাওয়ান্ত খুব দ্রুতই পর্নস্টার হতে যাচ্ছেন। আমি সত্যি পর্নস্টার হতে চাই! এটা অন্য কারোর কথা নয়, এটা রাখীর মুখের কথা ছিল।

যদিও পরে নিজের বক্তব্যের বিরোধীতা নিজেই করেছিলেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সানি লিওনের সাথে প্রতিযোগীতা করার জন্য আমি পর্নস্টার হতে চাই না! আসলে রাখী তার মিডিয়া জীবনে এমন ‘লাগামহীন’ কথা বার্তার জন্য বরংবার সমালোচিত হয়েছেন। এছাড়া রাখী সিলিং ফ্যানের গুরুতর বিরোধী। কারণ তার দাবী সিলিং ফ্যানই মেয়েদের আত্মহত্যার বড় কারণ। একবার বলেছিলেন, ‘যদি আপনার মেয়েকে ভালবেসে থাকেন, তাহলে ঘরে সিলিং ফ্যান রাখবেন না, পরিবর্তে এসি বা টেবিল ফ্যান রাখুন। রাখীর কথা কেউ শুনুক বা না শুনুক তিনি এমনই থাকতে বেশ পছন্দ করেন।

রাখী মুখে নিয়ে শরীরের ব্যাবহার করেও বেশ আলোচনায় এসেছিলেন। একবার তার জন্মদিনের পার্টিতে তাকে জোর করে চুমু খেয়েছিলেন গায়ক মিকা সিং। সে নিয়ে অনেক জল ঘোলাও হয়। অনেকে দাবী করেন এর পুরোটাই ছিল রাখীর সাজানো নাটক। এর পেছনে অবশ্য তার একটা পুরনো কথাই দায়ী। রাখী একসময় বলেছিলেন, কঙ্গনা রনৌত অনেক বেশি প্রচারণা চায়। ওর উচিত জনপ্রিয়তা পাওয়ার জন্য মিকাকে চুম খাওয়া। তাহলে ওইদিন থেকে তাকে সবাই চিনবে। কঙ্গনা জনপ্রিয় হয়ে যাবে! এরপর থেকে প্রশ্ন উঠেছিল, তাহলে কী রাখী জনপ্রিয়তা পেতে মিকাকে চুমু খেতে বলেছিল?