‘বিশ্ব সন্ত্রাসবাদের আসল হোতা যুক্তরাষ্ট্র’
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৭:১২ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০১৯ বৃহস্পতিবার
ইরানের ‘এলিট ফোর্স’ হিসেবে পরিচিত রেভ্যুলেশনারি গার্ডকে (আইআরজিসি) ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’হিসেবে তালিকাভুক্ত করায় যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ক্ষিপ্ত বাগদাদ সরকার। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা করেছেন প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বক্তব্যে রুহানি বলেন, বিশ্ব সন্ত্রাসবাদের আসল হোতা যুক্তরাষ্ট্র।
এসময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘রেভল্যুশনারি গার্ডকে সন্ত্রাসী তকমা দেওয়ার তুমি কে?’
ইরানের জাতীয় পারমাণবিক প্রযুক্তি দিবস উপলক্ষে রাজধানী তেহরানে এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন রুহানি। তিনি তার ভাষণে রেভল্যুশনারি গার্ডের পক্ষে জোরালো অবস্থান ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত এই ফোর্স সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছে।
এসময় মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ তুলে রুহানি বলেন, এ বাহিনী প্রত্যক্ষভাবে বা পরোক্ষভাবে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বা সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সব সময়ই জড়িত।
যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তোমরা এই অঞ্চলের দেশগুলোর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাও। তোমরাই বিশ্ব সন্ত্রাসবাদের নেতা।’
রুহানি প্রশ্ন রাখেন, বর্তমান বিশ্বে কে সন্ত্রাসবাদ প্রচার ও উৎসাহিত করছে? কে আইএসকে একটি টুল হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছে?
ইরানের প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, উগ্রবাদী জিহাদি সংগঠনগুলোর নেতাদের পুষছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি তারা এখন আইএসের নেতাদের লুকিয়ে রাখছে। আইএসের নেতারা কোথায় লুকিয়ে আছেন, তা আঞ্চলিক সরকারগুলোকে বলতে প্রস্তুত নয় যুক্তরাষ্ট্র।
এর আগে এক বিবৃতিতে মার্কিন সরকারকে ‘সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক’হিসেবে ঘোষণা করেছিলো ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ (এসএনএসসি)।
তাদের অভিযোগ ছিলো, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘অবৈধ ও হঠকারী’ সিদ্ধান্তের কারণে আইআরজিসিকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। মার্কিন সরকারের এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানানোর পাশাপাশি আইআরজিসি’র বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেও প্রত্যাখ্যান করেছে ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ।
গত সোমবার ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডকে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ কর্মসূচির নির্দেশদাতা ও বাস্তবায়নকারী হিসেবে ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবারই প্রথম কোনো বিদেশি সরকারের একটি অংশকে সন্ত্রাসের তকমা দিল ওয়াশিংটন।
ওইদিন এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে এই নজিরবিহীন পদক্ষেপ এমন বাস্তবতাকেই স্বীকৃতি দেয় যে, ইরান কেবল রাষ্ট্র হিসেবেই সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক নয়, তাদের আইআরজিসি শাসকদের যন্ত্র হিসেবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছে এবং অর্থায়ন ও পৃষ্ঠপোষকতা করছে।’
আইআরজিসির সঙ্গে লেনদেন বন্ধ করতে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়ে ট্রাম্প আরো বলেন, কেউ যদি আইআরজিসির সঙ্গে লেনদেন করে, তবে সে সন্ত্রাসে অর্থায়ন করছে বলেই ধরা হবে।