সেলিমকে নির্মমভাবে হত্যার বিবরণ দিল ফয়সাল
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৮:৩৩ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০১৯ বৃহস্পতিবার
সেলিমকে নির্মমভাবে হত্যার বিবরণ দিল ফয়সাল। টাকা ফেরত চাওয়ায় খুন হতে হয়েছে ফতুল্লার বক্তাবলী ইউনিয়নের কানাইনগর এলাকার বাসিন্দা ঝুট ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান চৌধুরী ওরফে সেলিম চৌধুরী (৫২)।
ব্যবসায়ের সুবাদে আরেক ঝুট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলীকে ২ লাখ টাকা ধার দিয়েছিলো। আর ঐ টাকা ফেরত নিতে গিয়ে নির্মমভাবে খুন হয় ব্যবসায়ী সেলিম। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফয়সাল পুলিশকে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে।
ফয়সাল জানায়, ব্যবসায়ের সুবাদে সেলিম চৌধুরী প্রায়ই মোহাম্মদ আলীকে আর্থিকভাবে সহায়তা করতো। গত ৩১ মার্চ দুপুরে ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী সেলিমকে টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে গোডাউনে ডাকে। সেলিমকে মোহাম্মদ আলী তার কথা মত ২ লাখ ৬ হাজার টাকা দেয়।
টাকা দেয়ার সময় কর্মচারী, শ্রমিক আলী ও আরো একজন উপস্থিত ছিলো। সেলিম টাকা নিয়ে বের হওয়ার সময় আলী তার ঘাড়ে রড দিয়ে সজোরে আঘাত করে। আঘাতের পরপরই সেলিম মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার মুখ, হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। পরে আহত অবস্থায় ৩১ মার্চ রাতেই মোহাম্মদ আলীর নির্দেশে গোডাউনের একপাশে সেলিমকে বস্তাবন্দি করে মাটি চাপা দিয়ে পুঁতে রাখা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, নিহত সেলিম চৌধুরী বক্তাবলীর কানাইনগর এলাকার মৃত শামসুল হক চৌধুরীর ছেলে। সেলিম চৌধুরী শিবু মার্কেট এলাকায় ভাড়া বাসায় স্ত্রী ও এক সন্তান নিয়ে বসবাস করতো। গত ৩১ মার্চ সকালে বাসা হতে ব্যবসার কাজের উদ্দেশ্যে বাহির হয়।
ঐদিন বেলা ১১টার দিকে সেলিম চৌধুরীর স্ত্রী রেহানা মোবাইল ফোনে তার স্বামীর অবস্থান জানতে চাইলে সেলিম চৌধুরী জানিয়েছিল সে ফতুল্লার পঞ্চবটি মোড়ে ইস্টার্ন ব্যাংকে রয়েছে। এরপর দুপুর ২টায় খাবার খাওয়ার জন্য ফোন করলে সেলিম চৌধুরীর ব্যবহৃত মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। সেলিম চৌধুরীকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে না পেয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরী করে তার স্ত্রী যার নং-(১৩৯ তারিখ-০৬-০৪-২০১৯ইং)।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন বলেন, গত ৩১ মার্চ থেকেই ব্যবসায়ী সেলিম নিখোঁজ ছিলো। এ ঘটনায় জিডি করা হলে তদন্ত শুরু হয়। মোবাইল ট্রেকিং করে ব্যবসায়ী সেলিমের সর্বশেষ ঝুটের গোডাউনে তার অবস্থান নিশ্চিত করা হয়।
বুধবার দুপুরে ঐ ঝুটের গোডাউনে অভিযান চালিয়ে কর্মচারী ফয়সালকে আটক করা হলে তার দেওয়া স্বীকারোক্তিতে মাটি খুঁড়ে বক্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আর্থিক লেনদেনের জেরেই এ হত্যাকাণ্ড। তবে আর কোনো কারণ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।