মিডিয়ায় আসার আগে তাদের অতীত যেমন ছিল
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ১১:০১ এএম, ১৩ এপ্রিল ২০১৯ শনিবার
এরা সবাই একেক জন বলিউডের জাঁদরেল তারকা। এদেরকে চেনেন না এমন মানুষ খুব কমই আছেন। তবে এরা জাঁদরেল হওয়ার আগে ছিলেন একেবারে সাধারণ। এই অবস্থায় আসার জন্য তাদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। একদিনে কিন্তু তাদের কেউই প্রতিষ্ঠিত হতে পারেননি। এই জায়গায় আসতে তাদের সবার অনেক যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে।
মূলত মিদিয়ায় পদচারণার আগে তাদের জীবনে অনেক নীল কষ্ট ছিল, যা আমরা অনেকেই জানি না। অনেক ধাপ উপধাপ পেরিয়ে তারা এখন প্রত্যেকে বলিউডে রাজত্ব করছেন। চলুন জেনে নেয়া যাক, তাদের গল্পটা।
তাদের আরেকটি অজানা বিষয় আগে থেকে জানিয়ে রাখি, সেটি হলো, এই অবস্থায় আসার জন্য তাদের অনেকেই আবার ঘর ছেড়েছেন, কেউ নিজ বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছেন আবার কেউ স্বামী সংসারের ভালোবাসাই ত্যাগ করেছেন আবার অনেকে নিজেদের প্রেমিক ছেড়েছেন। এসব করেছেন শুধুমাত্র বলিউডে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য।
আসুন আজ তাদের সম্পর্কে একটু আমরা জানি-
কঙ্গনা রনৌত
কঙ্গনা রনৌত। তার জীবনের কষ্টের যেন শেষ নেই। বহু সময় গণমাধ্যমে তার কিছু কিছুর খবর পাওয়া গেছে। তিনি প্রথম ‘গ্যাংস্টার’ ছবি দিয়ে ২০০৬ সালে বলিউডে অভিষিক্ত হন। এর আগে, কঙ্গনা অভিনয়ের স্কুলে যাওয়ার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া ছেড়ে দেন। অনেকে বলেন সেই সময় নিজের সিদ্ধান্তের জন্য বাবার হাতে অনেক মারধরের ঘটনা ঘটেছে তাকে নিয়ে। তাই বাধ্য হয়ে অভিনয় করতে বাড়ি ছেড়ে দেন কঙ্গনা। বলিউডে ক্যারিয়ার গড়ার আগে দিল্লীতে স্টেজ শোও করতেন তিনি। এছাড়া বহু পরিচালক ও প্রযোজকের রাতের খোরাক ছিলেন নাকি এই নায়িকা, সব কিছু তিনি করেছেন স্টার হওয়ার জন্য।
নাসিরুদ্দিন শাহ
নাসিরুদ্দিন শাহ। বলিউডের বর্তমান সুপারস্টারদের একজন এই অভিনেতা। আগের জীবন সম্পর্কে তিনি তার আত্মজীবনী ‘দ্য ওনডে ডে’তে লিখেছেন, অভিনয় করা তার শৈশব থেকেই স্বপ্ন ছিল। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি এই কারণে বাড়ি ছেড়ে দেন। সিনেমায় এক্সট্রা’র কাজও করেছেন এই সুদক্ষ অভিনেতা। ‘আমান’ ও ‘সাপ্নো কি সওদাগর’ ছবিতে এক্সট্রার কাজ করেন তিনি। ১৯৭৫ সালে গিয়ে সেই স্টেজ-এর কাজ তিনি ছেড়ে দেন, কাজ করেন ‘নিশান্ত’ সিনেমায়।
মল্লিকা শেরাওয়াত
মল্লিকা শেরাওয়াত। এমন কোনো দর্শক কি আছেন, যিনি তাকে চেনেন না। তিনি অধিক জনপ্রিয় নয় কিন্তু। তবে বোল্ড দৃশ্য অভিনয় করে তিনি অনেক দর্শকের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। তিনি একদা শৈশব সম্পর্কে জানান, ওই সময় (শৈশব) তিনি নাকি স্বপ্নের পেছনে ছুটতে গিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। তিনি নিজের মুখেই স্বীকার করেন যে, তার বাবা তাকে পারিবারিক পদবী ব্যবহার করতেও বারণ করেছেন, মিডিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হতে চাওয়ার কারণে। ২০০৩ সালে ‘খওয়াহিশ’ সিনেমায় তার অভিষেক হয়। তবে বোল্ড দৃশ্য করে তিনি প্রথম জনপ্রিয়তা পান ‘মার্ডার’ সিনেমায়। এরপর থেকে বলিউডে তিনি বেশ জনপ্রিয়।
চিত্রাঙ্গদা সিং
বলিউড অভিনেত্রী চিত্রাঙ্গদা সিং। তার জীবনের নীল কষ্ট আরো বিশাল। কারণ বলিউডে আসার আগেই ২০০১ সালে তিনি বিয়ে করেন। তার স্বামী রান্ধাওয়ার জ্যোতি সিং। পরে এই প্ল্যাটফর্মে প্রতিষ্ঠিত হতে নিজের স্বামীকে ছেড়ে দিয়ে মুম্বাই চলে আসেন চিত্রাঙ্গদা। ওই সময় সম্পর্ক ভালো না হওয়ায় ২০১৪ সালে তাদের ডিভোর্স হয়। এরপর ২০০৩ সালে ‘হাজারো খওয়াহিশে অ্যায়সি’ সিনেমা দিয়ে বলিউডে আগমন হয় এ অভিনেত্রীর। চিত্রাঙ্গদা সিং বলিউডে অভিনয় করতে আরো অনেক বাধার সম্মুখীন হয়েছেন, যা পরবর্তীতে অন্য আলোচনায় পাঠকদের জানানোর চেষ্টা করবো।
বিনা রায়
বিনা রায়। বলিউডের ৫০-৬০’ দশকের নায়িকা তিনি। তবে এই লাইনে আসার জন্য তাকেও অনেক কষ্ট মাথা পেতে নিতে হয়েছে। বলিউডে আসতে তার বড় বাঁধা ছিল বাবা-মা। তাকে তারা সিনেমা করতে দিতে চাননি। তবে বিনা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন আগেই। তাই নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দেন তিনি। এরপর বাধ্য হয়ে বাবা-মা রাজি হন। পরবর্তীতে ‘আনারকলি’ সিনেমার জন্য বিখ্যাত হন এই নায়িকা। একসময় বেশ পরিচিতিও পান তিনি।
নারগিস ফাকরি
নারগিস ফাকরি। এক ‘রকস্টার’ সিনেমা দিয়ে তাকে অনেকেই চিনেছেন। তবে এই মিডিয়ায় আসার জন্য তিনিও অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তিনি কেবল নিজের বাড়িই ছাড়েননি, প্রেমিকের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি করেছেন। তবে ২০১১ সালে তিনি প্রথম মুম্বাই আসেন। এরপর রণবীর কাপুরের সঙ্গে তার ব্লগবাস্টার সিনেমা ‘রকস্টার’ মুক্তি পায়। এরপর থেকে বলিউডে তিনি অধিক জনপ্রিয়।
অদিতি রাও হায়দারী
অদিতি রাও হায়দারী। এই নায়িকারও বলিউডে আসার আগেই বিয়ে হয়। মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি গাঁটছড়া বাঁধেন। পরে সিনেমা নিয়ে তার স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তিনি মিডিয়া না ছেড়ে স্বামীকে ছেড়ে দেন। এরপর ২০১১ সালে বলিউডে অভিষেক হয় ‘ইয়েহ সালি জিন্দেগী’ সিনেমা দিয়ে। ২০১৩ সালে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আগের জীবনের ব্যাপারে নিজেই এইসব বিষয় জানিয়েছেন।