রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

উপদেশ দিতে মনে রাখুন ছয়টি বিষয়

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৪:৫০ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০১৯ বুধবার

উপদেশ দেওয়া, উপদেশ গ্রহণ করা খুবই কল্যাণকর বিষয়। কখনো একটি সফল সুন্দর জীবনের পেছনের গল্পে সবচে কার্যকরী ভূমিকাটি থাকে মোক্ষম সময়ে কারো সুন্দর কিছু পদেশের। পবিত্র কুরআনে এই উপদেশকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,

 

وَالْعَصْرِ . إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ . إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ    

“কসম সময়ের। নিশ্চয়ই সমস্ত মানুষ ক্ষতির মাঝে রয়েছে। তবে তারা ব্যতীত, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে উপদেশ দেয় সত্যের এবং উপদেশ দেয় সবরের।” –সূরা আসর, আয়াত : ১-৩   

অতএব, মানুষকে কল্যাণের উপদেশ দেওয়া মুমিনের জন্য ঈমানী দায়িত্বও বটে। আপনার দেওয়া উপদেশকে উদ্দিষ্ট ব্যক্তির জন্য যথোপযুক্ত ও আরও অধিক কার্যকরী করতে নিম্নোক্ত পাঁচটি বিষয় লক্ষ্য রাখুন।  

এক. সুন্দর এবং ভদ্রভাবে কথাগুলো উপস্থাপন করুন। যখন আপনি নিজেই হতাশ অথবা রাগান্বিত তখন কাউকে উপদেশ না দেয়াই ভালো।

দুই. যাকে উপদেশ দিচ্ছেন তার ব্যাপারে ধৈর্য্যশীল হোন। ধৈর্য এক্ষেত্রে একান্ত প্রয়োজনীয়। যাকে পরামর্শ দিচ্ছেন সে হয়তো একটা খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে আর আপনি এরমাঝে নতুন আরেকটি ব্যাপার নিয়ে আসলেন যা তাদের মনকে আরো ছোট করে দেয়। অথবা হতে পারে সে এই মুহূর্তে আপনার উপদেশ মেনে চলার জন্য প্রস্তুত না। তাই আপনার মতামত দেয়ার পরে ব্যাপারটা তার উপর ছেড়ে দিন। ধীরে ধীরে সে হয়তো আপনার কথাগুলো নিয়ে ভাববে এবং নিজের মাঝে একটা পরিবর্তন আনার চেষ্টা করবে।

তিন. গোপনীয়তা রক্ষা করুন এবং ব্যাপারটি নিয়ে অন্য কারো সাথে আলোচনা করবেন না। এই পয়েন্টটি উল্লেখ না করলেও হতো কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় কোন ব্যাপারই শেষ পর্যন্ত গোপন থাকে না। আমরা অনেক সময় অন্যের কাছে পরামর্শ চাইতে দ্বিধাবোধ করার অন্যতম কারণ হলো আলোচনা টা অন্যকারো কাছে কোনভাবে পৌছে যেতে পারে এই ভয়।

চার. কোন সমস্যার সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করার আগে আপনার যুক্তিগুলো সরাসরি তুলে ধরুন। কখনো অনুমাননির্ভর কোন কথা বলবেন না এবং যে বিষয়ে আপনার ধারনা নেই সে বিষয়ে উপদেশ দিবেন না।

পাঁচ. সময় বুঝে কথা বলুন। যখন আমরা কোন মুসলিম ভাইকে উপদেশ দেই তখন দেখা যায় বিষয়টির সাথে সম্পর্কিত নয় এমন অনেক অপ্রয়োজনীয় কথাও বলা হয়ে যায়। আমাদের উচিত নিজেদের যুক্তিগুলোকে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্যভাবে তুলে ধরা। 

ছয়. যে ব্যাপারে প্রচার করছেন তা নিজে অনুশীলন করুন। এ ব্যাপারটি আবশ্যকীয় হওয়া সত্ত্বেও সবচাইতে কম অনুসরণ করা হয়। যা আপনি নিজে পালন করেন না তা করার জন্য অন্যকে উপদেশ দিবেন না। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন,

أَتَأْمُرُونَ النَّاسَ بِالْبِرِّ وَتَنسَوْنَ أَنفُسَكُمْ وَأَنتُمْ تَتْلُونَ الْكِتَابَ أَفَلاَ تَعْقِلُونَ

“তোমরা কিভাবে মানুষকে সৎকর্মের ব্যাপারে নির্দেশ দাও আর নিজেদের ব্যাপারে ভুলে যাও। অথচ তোমরা তো কিতাব পাঠ করো। তবুও কি তোমরা চিন্তা করো না?” –সূরা আল বাকারা, আয়াত : ৪৪