রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভালোবেসে নামাজ আদায়

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৩:৫৭ পিএম, ২২ এপ্রিল ২০১৯ সোমবার

নবী (সা.) এর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা মেরাজ। মেরাজের মাধ্যমেই আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন।

 

নামাজ পূর্ববর্তী উম্মতদের জন্যও ফরজ ছিলো। পবিত্র কোরআনেও এ ব্যাপারে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘আর স্মরণ কর যখন ইব্রাহিম বলল, ‘হে আমার রব, আপনি এ শহরকে নিরাপদ করে দিন এবং আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে মূর্তি পূজা থেকে দূরে রাখুন।’ (সূরা ইব্রাহিম : আয়াত ৩৫)। পাশাপাশি তিনি তার সন্তানদের ব্যাপারেও দোয়া করেন যে, তাদেরকেও যেন আল্লাহ তায়ালা নামাজ পড়ার তাওফিক দান করেন। ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে আমার রব, আমাকে নামাজ কায়েমকারী বানান এবং আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও, হে আমাদের রব, আর আমার দোয়া কবুল করুন।’ (সূরা ইব্রাহিম : আয়াত ৪০)।

আল্লাহ তায়ালা এই দোয়া কবুল করেন। হজরত ইসমাঈল (আ.) তার উম্মতকে নামাজের তাগিদ দিতেন। (সূরা মারইয়াম : আয়াত ৫৫)। কোরআনে কারীমে যেসব ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে, তাতে জানা যায়, হজরত শুআইব (আ.) এর উম্মতের মধ্যেও নামাজ ছিলো। এমনকি তারা তাকে মাঝেমধ্যে ভর্ৎসনাও করতো। এ ব্যাপারে আল্লাহ বলেন, ‘তারা বলল, হে শুআইব, তোমার নামাজ কী তোমাকে এই নির্দেশ প্রদান করে যে, আমাদের পিতৃপুরুষগণ যাদের ইবাদাত করতো, আমরা তাদের ত্যাগ করি? অথবা আমাদের সম্পদে আমরা ইচ্ছামতো যা করি তাও (ত্যাগ করি?) তুমি তো বেশ সহনশীল সুবোধ!’ (সূরা হূদ : আয়াত ৮৭)। হজরত লূত (আ.), হজরত ইসহাক (আ.) ও হজরত ইয়াকুব (আ.) এবং তাদের বংশধরদের মধ্যেও কোরআনের ভাষ্য অনুযায়ী নামাজের নির্দেশনা ছিলো। ইরশাদ হচ্ছে, ‘আর তাদের আমি নেতা বানিয়েছিলাম, তারা আমার নির্দেশ অনুসারে মানুষকে সঠিক পথ দেখাতো। আমি তাদের প্রতি সৎকাজ করার, নামাজ কায়েম করার এবং জাকাত প্রদান করার জন্য ওহী প্রেরণ করেছিলাম। আর তারা আমারই ইবাদত করতো। (সূরা আম্বিয়া : আয়াত ৭৩)।

হজরত মূসা (আ.) ও হজরত হারূন (আ.) এবং তাদের জাতি বনী ইসরাঈলকে নামাজের নির্দেশ দেয়া হয়। আল্লাহ বলেন, ‘আর আমি মূসা ও তার ভাইয়ের কাছে ওহী পাঠালাম যে, ‘তোমরা তোমাদের কওমের জন্য মিসরে গৃহ তৈরি কর এবং তোমাদের গৃহগুলোকে কিবলা বানাও আর নামাজ কায়েম কর এবং মুমিনদের সুসংবাদ দাও।’ (সূরা ইউনুস : আয়াত ৮৭)। কোরআনে কারীমে হজরত যাকারিয়া (আ.) এর একটি ঘটনার আলোকপাত করতে গিয়েও বলা হয়েছে যে, তিনি তখন মিহরাবে নামাজ পড়ছিলেন। ইরশাদ হচ্ছে, ‘অতঃপর যখন সে মেহরাবের মধ্যে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করছিলো তখন ফেরেশতারা তাকে সম্বোধন করে বলেছিলো, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাকে ইয়াহইয়া সম্বন্ধে সুসংবাদ দিচ্ছেন, তার অবস্থা এই হবে যে, সে আল্লাহর একটি বাক্যের সত্যতা প্রকাশকারী হবে, নেতা হবে, স্বীয় প্রবৃত্তিকে দমনকারী হবে এবং সৎ কর্মশীলগণের মধ্যে নবী হবে।’ (সূরা আলে ইমরান : আয়াত ৩৯)।

এদিকে, হজরত ঈসা (আ.) এর পক্ষ হতে যখন দুগ্ধপোষ্য বয়সে মু’জিযা হিসেবে কথোপকথন করানো হয়, সেই সময় একটি উক্তি এমনও ছিলো যে, আল্লাহ আমাকে নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হচ্ছে, ‘আর যেখানেই আমি থাকি না কেন তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন এবং যতোদিন আমি জীবিত থাকি তিনি আমাকে নামাজ ও জাকাত আদায় করতে আদেশ করেছে।’ (সূরা মারইয়াম : আয়ত ৩১)।

মোটকথা, যে জাতির কাছেই ওহি পৌঁছেছে, তাদেরই ঈমানের পাশাপাশি নামাজেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অবশ্য এটা জরুরি নয় যে, তাদেরও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ দেয়া হয়েছে। কিংবা এই উম্মতের নামাজের ধরন ও প্রকৃতির মতোই তাদের নামাজ হতে হবে, এমন বাধ্যবাধকতা নেই।

আসিম ইবনে হুমাইদ আস-সুকুনী (রহ.) সূত্রে বর্ণিত, তিনি মুআয ইবনে জাবাল (রা.)-কে বলতে শুনেছেন, আমরা ‘এশার সলাতের জন্য নবী (সা.) এর প্রতীক্ষায় ছিলাম। তিনি আসতে এতোটা বিলম্ব করলেন যে, কেউ কেউ ধারণা করল, হয়তো তিনি বের হবেন না। আবার কেউ এরূপ মন্তব্য করল যে, হয়তো তিনি (ঘরে) নামাজ আদায় করে ফেলেছেন। আমাদের এসব আলোচনার এক পর্যায়ে নবী (সা.) বের হয়ে এলেন। অতঃপর লোকেরা যা কিছু বলাবলি করছিল, তা তাঁকেও বলল। তিনি বললেন, তোমরা এই (এশার) নামাজ বিলম্বে আদায় করবে। কারণ এ নামাজের মাধ্যমে অন্য সকল জাতির ওপর তোমাদের মর্যাদা দান করা হয়েছে। তোমাদের পূর্বে কোনো জাতি এ নামাজ আদায় করেনি। (সুনানে আবি দাউদ : হাদীস নং ৪২১)।

উম্মতে মুহাম্মাদীর ব্যাপারেও এমনটি বলা যায় না যে, মিরাজের ঘটনার পূর্বে নামাজ ফরজ ছিলো না; বরং পবিত্র কোরআনের ভাষ্য দ্বারা বুঝা যায়, ঈমানের পর মুসলমানদের ওপর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে ফরজের বিধান আরোপ করা হয়েছিল, তা ছিল দীনের দাওয়াত ও নামাজ। কেননা সূরায়ে আলাকের শুরুর আয়াত অবতীর্ণের পর সর্বপ্রথম অবতীর্ণ হয় সূরায়ে মুদ্দাসসির। (তাফসীরে খাযেন : ৪/৩৬২; সহীহ বুখারী : হাদীস নম্বর ৪৯২৬)। এখানেও দীনের পথে আহ্বানের পাশাপাশি নামাজেরও উৎসাহ দেয়া হয়। ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে বস্ত্রাবৃত! উঠ, অতঃপর সতর্ক করো। আর তোমার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করো।’ (সূরা মুদদাসসির : আয়াত ১-৩)।

প্রথম আয়াতে রাসূল (সা.)-কে সম্বোধন করা হয়েছে। দ্বিতীয় আয়াতে সতর্ক করা হয়েছে অর্থাৎ দাওয়াতের নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং তৃতীয় আয়াতে আল্লাহর মহত্বের অর্থাৎ নামাজের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তখন দুই রাকাত পড়া হতো সূর্যোদয়ের পূর্বে, আর দুই রাকাত সূর্যাস্তের পূর্বে। মুহাদ্দিসগণ এবং ইতিহাসবিশারদগণ এ ব্যাপারে একমত যে, অতঃপর মিরাজের ঘটনার পর থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়। (আত-তামহীদ লিইবনে আবদিল বার : ৮/৩৫)।

আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রথম অবস্থায় দুই দুই রাকাত করে নামাজ ফরজ করা হয়েছিল। অতঃপর নবি (সা.) যখন হিজরত করলেন, ওই সময় নামাজ চার রাকআত করে দেয়া হয়। এবং সফরকালে আগের অবস্থা অর্থাৎ দুই রাকাত বহাল রাখা হয়। (বুখারী : ৩৯৩৫; মুসলিম : ৬৮৫)। আরেক হাদীসে এসেছে, উরওয়াহ (রহ.) বলেন, অবশ্য আয়েশা (রা.) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহর রাসূল (সা.) এমন মুহূর্তে আসরের নামাজ আদায় করতেন যে, সূর্যরশ্মি তখনো তাঁর হুজরার মধ্যে থাকত। তবে তা ওপরের দিকে উঠে যাওয়ার পূর্বেই। (বুখারী : ৫২২; মুসলিম : ৬১১)।

এভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হয় এবং নামাজের সময় সুনির্ধারিত হয়। নামাজের বিভিন্ন কাজে শুরুতে সহজতা ছিলো। যেমন কথোপকথন নিষিদ্ধ ছিলো না। পরে সেটা নিষিদ্ধ হয়। মাসবূক অর্থাৎ যে জামাতে কয়েক রাকাত নামাজ পায়নি, সে নিজ মন মতো তার ছুটে যাওয়া নামাজ পড়তে পারতো। ইমামের আনুগত্যের প্রতি খেয়াল রাখতো না। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ইমামের আনুগত্য আবশ্যক করে দেয়া হয়। মোটকথা, এই নামাজ দীনের এতো গুরুত্বপূর্ণ বিধান যে, সেটা আল্লাহ তায়ালা রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে ঊর্ধ্বকাশে তুলে নিয়ে সেখানে উম্মতে মুহাম্মাদীর জন্য উপহার দেন।

নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে হাদিসে এসেছে: জারীর ইবনে ‘আবদুল্লাহ্ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (সা.) এর নিকট নামাজ আদায়, জাকাত প্রদান এবং প্রত্যেক মুসলমানকে নসীহত করার বায়আত গ্রহণ করেছি। (বুখারী : ৫৩৪)। আবূ জামরাহ দুবায়ী (রহ.) বলেন, আমি ইবনে আব্বাস (রা.)-কে বললাম। তিনি বললেন, আবদুল কায়সের প্রতিনিধিদল রাসূলুল্লাহ্ (সা.) এর কাছে এসে বলল, আমাদের এবং আপনাদের মাঝখানে মুযার গোত্রের মুশরিকরা আছে। সে কারণে আমরা সম্মানিত মাস (আশহুরে হুরুম) ব্যতীত আর কোনো সময় আপনার কাছে আসতে পারি না। কাজেই আমাদের সংক্ষিপ্ত কিছু বিষয়ের হুকুম দিন, যার ওপর আমল করলে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করব এবং আমরা যাদের রেখে এসেছি তাদেরও এ পথে আহবান জানাতে পারব। নবী (সা.) বললেন, আমি তোমাদের চারটি বিষয়ের হুকুম করছি।

আর চারটি বিষয় থেকে নিষেধ করেছি। আমি তোমাদেরকে হুকুম দিচ্ছি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার। আর তোমরা জান কী, আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা কাকে বলে? তা হলো, সাক্ষ্য দেয়া যে আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই, নামাজ কায়েম করা, জাকাত দেয়া, গনীমতের মালের এক পঞ্চমাংশ দেয়া। তোমাদের চারটি বিষয় হতে নিষেধ করছি, লাউয়ের খোল দিয়ে তৈরি পাত্রে, খেজুর গাছের মূল খোদাই করে তৈরি পাত্রে, আলকাত্রা ইত্যাদি দিয়ে প্রলেপ দেয়া পাত্রে, এবং মাটির সবুজ ঘটিতে তোমরা পান করবে না। (বুখারী : ৭৫৫৬)। রাসূল (সা.) ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ অংশসমূহের আলোচনা করতে গিয়ে বলেছেন, ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি। এখানেও তিনি তাওহীদের সাক্ষ্যের পর সর্বপ্রথম নামাজ কায়েমের নির্দেশ দেন। তিনি নামাজের তাৎপর্যের বর্ণনা দিতে গিয়ে এটাকে ঈমানের স্তরে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেছেন, যে নামাজ ছেড়ে দিল, সে যেন কুফরি করলো। (তিরমিযী : ২৬২১)।

সালিম ইবনে আবুল জাদ (রহ.) বলেন, এক ব্যক্তি বলেন, মিসআর বলেছেন, আমার ধারণা, সে ব্যক্তি খুযাআ গোত্রীয়, যদি আমি নামাজ পড়াতাম তাহলে প্রশান্তি পেতাম। উপস্থিত লোকজন নারাজ হলো। তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, হে বিলাল! নামাজ কায়েম করো। আমরা এর মাধ্যমে স্বস্তি লাভ করতে পারবো। (আবু দাউদ : ৪৯৮৫)। আরেক হাদীসে এসেছে : সাবরা ইবনে মাবাদ (রা.) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সাত বছর বয়সে বালকদের নামাজ শিখাও এবং দশ বছরে পৌঁছলে নামাজ আদায়ের অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য দৈহিক শাস্তি দাও। (তিরমিযী : ৪০৭)। নবীজীর (সা.) শিক্ষা হচ্ছে, ছোটো ছেলেমেয়েদের ওপর যদিও নামাজ ফরজ নয়, কিন্তু তাদের অভ্যস্থ করে তোলার জন্য শুরু থেকেই প্রস্তুত করে তোলা হতো।

ইবাদতের ক্ষেত্রে নামাজ এমন বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল যে, এমন বৈশিষ্ট্য অন্য কোনো ইবাদতের নেই। যেমন নামাজ ছাড়া অন্যান্য ইবাদত নির্দিষ্ট একটি শ্রেণির ওপর ফরজ; অন্যদের ওপর নয়। জাকাত ফরজ হয় সম্পদশালীদের ওপর; গরিবদের ওপর নয়। রোজা সুস্থদের ওপর ফরজ; অসুস্থদের ওপর নয়। তদ্রুপ হজ ফরজ হওয়ার জন্য সুস্থতার পাশাপাশি সামর্থ্যবান হওয়াও আবশ্যক। যে সুস্থ নয়, সামর্থ্যবানও নয়, তার ওপর হজ ফরজ নয়। ধনীদের ওপর কোরবানি ফরজ; দরিদ্রদের ওপর নয়। কোনো এলাকায় যদি জিহাদ ফরজ হয়, তবে তা কেবল পুরুষ ও যুবকদের জন্য ফরজ; নারী ও বৃদ্ধদের ওপর নয়। অথচ নামাজ এমন ইবাদত, যা সুস্থ-অসুস্থ, যুবক-বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ, দুর্বল-শক্তিশালী, ধনী-নির্ধন, মুসাফির-মুকিম নির্বিশেষে সবার ওপর ফরজ।

নামাজ এত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত যে, এর মাধ্যমে আল্লাহর একত্ববাদ ও দাসত্বের অনন্য কৃতিত্ব ফুটে ওঠে। নামাজী ব্যক্তি ‘আল্লাহু আকবার’ তাকবীর দ্বারা তার নামাজ শুরু করে থাকে। কিবলার দিকে হাত উঠিয়ে ইশারায় শিরক ও গাইরুল্লাহর বড়ত্বকে অস্বীকার করে। অতঃপর একজন দাসানুদাসের মতো অত্যন্ত বিনীতভাবে উভয় হাত বেঁধে দাঁড়ায়। চোখ দুটিও এমনভাবে বিনম্র থাকে, যেমন একজন আসামী বাদশাহর দরবারে দৃষ্টি উপরে তোলার সাহস করে না। মুখে থাকে আল্লাহর প্রশংসা ও স্ততিবাক্য। দাসত্বের ও বিনম্ররতার পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে কখনো কোমর ঝুঁকায়, আবার কখনো কপাল ঠেকায় জমিনে। এ সময় তার জবানে থাকে আল্লাহর জিকির। কখনো তাকবীর বলে, আবার কখনো প্রার্থনা করে। কখনোবা নিজ কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চায়। তার শরীরের কোনো অংশ মুক্ত থাকে না। সে তেমনই করে যেমন আল্লাহর রাসূল করেছেন। সে তেমনই বলে যেমন আল্লাহর রাসূল বলেছেন। নামাজে তার সমুদয় কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় আল্লাহর রাসূলের সুন্নাহ অনুসারে। এই আমলকে রাসূল (সা.) তাঁর চোখজুড়ানো আমল বলে আখ্যায়িত করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি নামাজের মাধ্যমে তার চোখের শীতলতা লাভ করতে পারলো না, তার মতো দুর্ভাগা আর কেউ নেই।