সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৭ ১৪৩২   ২২ শাওয়াল ১৪৪৬

বাংলায় কথা বলে রোবট ‘লি’

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১১:৫৬ এএম, ২৩ এপ্রিল ২০১৯ মঙ্গলবার

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ তরুণ গবেষক আবিষ্কার করলেন ‘লি’ নামে পায়ে হাঁটা রোবট। ৪ ফুট ১ ইঞ্চি উচ্চতার রোবটটির ওজন ৩০ কেজি।

সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিমিয়ের সময় রোবটটি প্রদর্শন করা হয়।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন রোবটটি বাংলায় কথা বলার পাশাপাশি মানুষের মতো চলাচল করতে পারে। এছাড়া হাত ও পা নাড়ানো এবং অঙ্গভঙ্গি করতে পারে রোবটটি।

এর আগে শনিবার আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক রোবটটি উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনকালে রোবটটি প্রতিমন্ত্রীকে ডান হাত উঁচু করে স্যালুট দিয়ে সম্মান জানায় ও হেঁটে দেখায়।

সরকারের আইসিটি ডিভিশনের ইনোভেশন ফান্ডের ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে রোবটটি তৈরিতে সময় লেগেছে প্রায় তিন বছর। এটিকে দেশের প্রথম পায়ে হাঁটা রোবট বলে দাবি করছেন উদ্ভাবকরা।

রোবটটির নামকরণ করা হয় বাংলা স্বরবর্ণ থেকে হারিয়ে যাওয়া লিপি ‘লি’ থেকে, যা দেখতে ৯-এর মতো ছিল। এ বর্ণটিকে স্মরণে রাখতে রোবটটির নামকরণ করা হয়েছে রোবট ‘লি’। এর নামকরণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিন সুলতানা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী নওশাদ সজীবের নেতৃত্বে ‘ফ্রাইডে ল্যাব’ নামে পাঁচজনের একটি টিম রোবটটি উদ্ভাবন করেন। ফ্রাইডে ল্যাবের সদস্যরা হলেন- আর্কিটেকচার বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান রুপক, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাইফুল ইসলাম, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মোহাম্মদ সামিউল হাসান ও একই বিভাগের জিনিয়া সুলতানা জ্যোতি।

এছাড়া গত তিন বছর সাজিদ, শান্ত, খাইরুল, শোভন, সোহান, জান্নাত সহ আরো অনেকেই তাদের সঙ্গে কাজ করেছে বলে জানান ফ্রাইডে ল্যাবের সদস্যরা। পাঁচ সদস্যের টিম ফ্রাইডে ল্যাবের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল

আবিষ্কারক টিমের প্রধান নওশাদ সজীব বলেন, রোবটটি দেখতে মানুষের মত। রোবটটির মুখে রয়েছে মানুষের মতো দুটি চোখ, চোখের পাতা ও ঠোঁটসহ অন্যান্য অঙ্গ। এটি মানুষের মতো হাঁটতে ও বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারে। এছাড়া বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে যেকোনো প্রশ্নের উত্তরও দিতে পারে। রোবটটিকে বাসা, বাড়ি বা অফিসে ব্যবহার করা হয় এমন সব ভাষা শেখানো হয়েছে। এটিকে দেশের প্রথম পায়ে হাঁটা রোবট বলে দাবি করেন নওশাদ।

টিমের সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, শাবিতে এর আগের তৈরি রোবট ‘রিবো’ এর সঙ্গে বর্তমান ‘লি’ এর পার্থক্য হচ্ছে ‘লি’ হাঁটতে পারে। রোবটকে হাঁটানোর জন্য অনেক দামি মোটর প্রয়োজন। কিন্তু আমরা কম বাজেট পেয়েছি। আরো বাজেট পেলে উন্নত মানের রোবট তৈরি করতে পারব।

টিমের আরেক সদস্য মোহাম্মদ সামিউল হাসান বলেন, রোবটটি যদি ভালোভাবে হাঁটতে পারে তাহলে যেকোনো সেক্টরে কাজে লাগাতে পারব। ইন্ডাস্ট্রি, ট্রাফিক কন্ট্রোল কিংবা অফিসসহ যেকোনো জায়গাতে মানুষের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। ভবিষ্যতে রোবট মানুষের বাসা-বাড়ি অফিসে বিভিন্ন কাজে দেখা যাবে। আর এটিকে আরো শক্তিশালী করতে হলে আরো উন্নতমানের মোটর প্রয়োজন।