বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নুসরাত হত্যা মামলা তদন্তে সন্তুষ্ট হাইকোর্ট

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৪:১৩ পিএম, ২৮ এপ্রিল ২০১৯ রোববার

ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির হত্যার ঘটনা এখন পর্যন্ত যেভাবে তদন্ত হচ্ছে, তাতে সন্তুষ্ট হাইকোর্ট। বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ নুসরাত হত্যা তদন্তে সন্তুষ্টির কথা জানান। মামলটি তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

রোববার গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার এ তথ্য জানান। ওই ঘটনা তদন্তে বিচারিক কমিশন চেয়ে রিট উপস্থাপনের পর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন উচ্চ আদালত।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। রিটের পক্ষে ছিলেন ইউনুছ আলী আকন্দ।

আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, সবকিছু মিলিয়ে পিবিআই কাজ সন্তোষজনক বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এখন পর্যন্ত সবকিছু সুষ্ঠুভাবে চলছে। যে তথ্য আছে, আশা করা যায় দ্রুত চার্জশিট আসবে। পিবিআইকে সবরকমের স্বাধীনতা দেয়া আছে।

আকন্দ বলেন, আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, পিবিআই যথাযথ তদন্ত করছে। নুসরাত যে মাদরাসায় পড়তো, ওই মাদরাসার কমিটির বিরুদ্ধে একটি সম্পূরক আবেদন দিয়েছি। এরইমধ্যে কমিটি বাতিল হয়েছে। বাতিল হলেই চলবে না, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন করেছি।

গত ১৭ এপ্রিল ওই ঘটনা অনুসন্ধানে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী আকন্দ। ওই আবেদনে নুসরাতকে রক্ষায় অবহেলাকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, ঘটনা অনুসন্ধানে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন, মামলা দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, নুসরাতের পরিবারের জন্য যথাযথ ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চাওয়া হয়। এছাড়া মামলাটির যথাযথ তদন্ত র‌্যাবের কাছে হস্তান্তরের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে রুল জারির আর্জি করা হয়।

গেল ২৭ মার্চ ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাঁচদিন পর নুসরাতের মৃত্যু হয়। 

ওই ঘটনায় তার বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে মামলায় গ্রেফতার নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহমেদ, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, আবদুর রহিম ওরফে শরিফ, ইফতেখার হোসেন রানা, এমরান হোসেন মামুন, মহিউদ্দিন শাকিল, হাফেজ আবদুল কাদের ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ওই মাদরাসার সহ-সভাপতি রুহুল আমিন।