শনিবার   ১৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ২ ১৪৩১   ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শঙ্কামুক্ত তারা

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০২:০১ পিএম, ৪ মে ২০১৯ শনিবার

একুশে পদকপ্রাপ্ত নন্দিত কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দী বর্তমানে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের এমআইসিইউতে চিকিৎসাধীন। টানা ১৮ দিন রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন থাকার পর ৩০ এপ্রিল সিঙ্গাপুর নেয়া হয় গুণী এই শিল্পীকে। সেখানে নেয়ার চার দিনের মাথায় শুক্রবার চোখ মেলেছেন সুবীর নন্দী।

আরেক কিংবদন্তি অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান ২৬ এপ্রিল (শুক্রবার) রাতে অসুস্থবোধ করলে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর হঠাৎ করেই তার রেচন প্রক্রিয়ায় জটিলতা দেখা দেয়। শনিবার তার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয় এবং রোববার সকালে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু মঙ্গলবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আবারো লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।  তার শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলে গতকাল সকালে লাইফ সাপোর্ট খুলে দেয়া হয়। শুক্রবার দুপুরের এ তথ্য জানান ডা. রবিউল হালিম।

এদিকে, সুবীর নন্দীর মেয়ে ফাল্গুনী নন্দী বলেন, শুক্রবার সকালে চিকিৎসকেরা আমাকে বলেছেন, বাবুর (বাবা সুবীর নন্দীকে বাবু বলেই ডাকেন) জ্বর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এমআরআই করার কথা রয়েছে। সবার কাছে বাবুর জন্য দোয়া চাই। 

বাংলাদেশে সুবীর নন্দীর চিকিৎসার বিষয়টি সমন্বয় করেছেন জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছেন তিনি। গতকাল দুপুরে সামন্ত লাল সেন বলেন, ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুবীর নন্দীর মস্তিষ্কের কাজ করা নিয়ে ভীষণ টেনশনে ছিলাম। শুনলাম, ব্রেন আস্তে আস্তে কাজ করছে। চোখ মেলেছেন। পরিচিতজনদের চিনতে পারছেন এবং কান্নাকাটি করছেন। তার মানে, সুবীর নন্দীর আবেগ-অনুভূতি কাজ করছে। 

এর আগে সুবীর নন্দীকে দ্রুত সিঙ্গাপুরে নেয়ার জন্য নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নিয়ে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সামন্ত লাল সেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা শেষে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সুবীর নন্দীর ব্যাপারে আলোচনা হয়। তিনি তার চিকিৎসার সব দায়িত্ব নিয়েছেন। 

সুবীর নন্দী গেল ১২ এপ্রিল পরিবারের সবাইকে নিয়ে মৌলভীবাজারে আত্মীয়ের বাড়িতে যান। সেখানে একটি অনুষ্ঠান ছিল। ঢাকায় ফিরতে ট্রেনে ওঠার জন্য বিকালে মৌলভীবাজার থেকে শ্রীমঙ্গলে আসেন তারা। ট্রেনেই অসুস্থ হয়ে পড়লে সুবীর নন্দীকে নিয়ে পরিবারের সদস্যরা ঢাকার বিমানবন্দর স্টেশনে নেমে যান। ১৪ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রাখা হয়। 

অন্যদিকে, শুক্রবার বেলা ১১টায় এটিএম শামসুজ্জামানের লাইফ সাপোর্ট খুলে দেয়ার পর এখন স্বাভাবিকভাবে নিশ্বাস নিতে পারছেন। তাকে স্বাভাবিক খাবার দেয়া হচ্ছে। তবে চিকিৎসকেরা বরেণ্য এ অভিনেতাকে ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। এমনটাই জানিয়েছেন তার মেজো মেয়ে কোয়েল আহমেদ। 

গত বৃহস্পতিবার শোনা গেছে, উন্নত চিকিৎসার জন্য এটিএম শামসুজ্জামানকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন তার পরিবারের সদস্যরা। এ ব্যাপারে কোয়েল আহমেদ বলেন, মনে হচ্ছে তার প্রয়োজন হবে না। কারণ এখানেই বাবার ভালো চিকিৎসা হচ্ছে। আর চিকিৎসায় তিনি সাড়া দিচ্ছেন। তার অবস্থার উন্নতি হয়েছে।

বর্তমানে ৭৮ বছর বয়সী এটিএম শামসুজ্জামান আসগর আলী হাসপাতালে  অধ্যাপক রাকিব উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।