মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মাদকাসক্তদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ

যুবায়ের আহমাদ

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৮:৪৪ এএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার

কল্যাণের ধর্ম ইসলামে নেশা ও মাদক সম্পূর্ণ হারাম। মাদক প্রসঙ্গে সুস্পষ্টভাবে পবিত্র কোরআনে আয়াত নাজিল করে আল্লাহতালা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া, মূর্তিপূজার বেদি ও ভাগ্য নির্ণয় করার শরাব তো কেবল ঘৃণার বস্তু, শয়তানের কাজ। তাই তোমরা সেগুলো বর্জন কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। শয়তান তো এ-ই চায় যে, মদ ও জুয়ার দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্র“তা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করবে এবং তোমাদের আল্লাহর স্মরণ ও সালাত থেকে বিরত রাখবে। সুতরাং তোমরা কি নিবৃত্ত হচ্ছ।’ (সূরা মায়েদা-৯০, ৯১)। 

উল্লি­খিত আয়াতে আল্লাহতায়ালা মাদককে ঘোষণা করেছেন ঘৃণ্য ও বর্জনীয় বস্তু হিসেবে। সুতরাং নাম যা-ই হোক না কেন, সব ধরনের মাদকই হারাম ঘৃণ্য। বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে একটি হাদিসে। 

আবু মূসা আশ’আরী (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে (আবু মূসাকে গভর্নর নিযুক্ত করে) ইয়েমেনে পাঠিয়েছেন। তখন তিনি ইয়েমেনে তৈরি করা হয় এমন কতিপয় শরাব সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ওইগুলো কী কী? আবু মূসা (রা.) বললেন, তা হলো বিত্ত ও মিশ্র শরাব। বর্ণনাকারী সা’ঈদ (রহ.) বলেন, আমি আবু বুরদাহকে জিজ্ঞাসা করলাম, বিত্ত কী? তিনি বললেন, বিত্ত হলো মধু থেকে গ্যাজানো রস আর মিশ্র হলো যবের গ্যাঁজানো রস। (সা’ঈদ বলেন) তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সব নেশা উৎপাদক বস্তুই হারাম। (বোখারি)। 

মাদক গ্রহণ অন্যতম শীর্ষ কবিরা গুনাহ। যারা মাদক গ্রহণ করে আর যারা মাদকের ব্যবসা করে সবাই আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে অভিশপ্ত। পরকাল তো ধ্বংস হবেই, আল্লাহর অভিশাপ নিয়ে কেউই দুনিয়াতেও শান্তি পাবে না। 

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : ‘মদ, তা পানকারী, পরিবেশনকারী, বিক্রেতা, ক্রেতা, উৎপাদক ও শোধনকারী, যে উৎপাদন করায়, সরবরাহকারী এবং যার জন্য সরবরাহ করা হয় এদের সবাইকে আল্লাহ লা’নত করেছেন।’ (আবু দাউদ)। 

মাদক সেবনকারী কিংবা মাদক ব্যবসায়ীরা নিজেদের যতই চালাক কিংবা ক্ষমতাধর মনে করুক আল্লাহর অভিশাপ নিয়ে চূড়ান্তভাবে তারা সব ক্ষেত্রেই ব্যর্থ হবে। বাহ্যিকভাবে ক্ষমতা কিংবা কৌশলে দুনিয়ার আদালতে ফাঁকি দিলেও পরকালের আদালতে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে তাদের নিশ্চিতভাবে।

লেখক : জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কারি ও খতিব, বাইতুশ শফীক মসজিদ, বোর্ডবাজার (আ. গনি রোড), গাজীপুর।