শনিবার   ৩০ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৫ ১৪৩১   ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পায়রা বন্দর ঘিরে ভাগ্য খুলছে লাখো মানুষের

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১২:৫৫ পিএম, ১১ মে ২০১৯ শনিবার

পায়রা সমুদ্রবন্দর ঘিরে উপকূল এলাকার লাখ লাখ মানুষের ভাগ্য খুলছে। পদ্মা সেতু আর পায়রা বন্দর চালু হওয়ার পর এখানে যে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ শুরু হবে, তাতে ব্যাপকভাবে লাভবান হবে এসব মানুষ। ২০১১ সালে সংশোধিত পদ্মা সেতু প্রকল্পের কার্যক্রম শুরুর পরপরই পদ্মার পশ্চিমপাড়ে পরিবর্তনের হাওয়া লাগে।

এ সঙ্গে ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর এ পরিবর্তনে নতুন মাত্রা যোগ হয়। জানা গেছে, এরই মধ্যে পদ্মার পশ্চিমপাড় থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা-পায়রা বন্দর পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশে জমি কিনে রেখেছেন উদ্যোক্তারা। এসব জমিতে কেউ করবেন গার্মেন্ট, কেউ শিল্পকারখানা, আবার গোডাউন করার পরিকল্পনা করেছেন অনেকে। অনেকে আবাসন (হাউজিং) করার জন্য বিশাল আয়তনের জমি কিনে ভরাটও করেছেন। 

তাদের একজন বরিশালের সাইফুল আজম শাহিন বলেন, ‘পায়রা বন্দরকে কেন্দ্র করে বরিশাল থেকে পায়রা-কুয়াকাটা পর্যন্ত আগামীতে ব্যাপক শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। এখানে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। বরিশাল হবে শিল্প-অর্থনৈতিক    অঞ্চল।’ এসব বিবেচনায় ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তিনি বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশে নলছিটির দপদপিয়ায় ২ একর জমি কিনে ভূমি উন্নয়ন করেছেন। এখন প্লট আকারে বিক্রির প্রস্তুতি নিয়েছেন। সম্প্রতি কৌতূহলবশত পায়রা সমুদ্রবন্দর দেখতে গিয়েছিলেন বরিশালের উদীয়মান ব্যবসায়ী নূর হোসেন মিরন। পায়রা বন্দর দেখার পাশাপাশি আগামীতে বন্দরকেন্দ্রিক ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য মহাসড়কের পাশে জমিও খোঁজ করেন তিনি।

মিরন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগোপযোগী সিদ্ধান্তে পায়রা বন্দরের কারণে বরিশাল থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশের জমিজমা বেচাকেনা হয়ে গেছে। বলতে গেলে কোথাও ফাঁকা জমি নেই। উদ্যোক্তারা বন্দরের সুবিধা পেতে আগেভাগেই জমি কিনেছেন। শিল্পোদ্যোক্তারা এগিয়ে আসায় জমির দামও বহুগুণ বেড়েছে।’ 

কলাপাড়ার বাসিন্দা তুহিন মৃধা জানান, ‘পায়রা বন্দরের কারণে কলাপাড়ায় অনেক উন্নয়নকাজ হচ্ছে। এ কারণে জমির মূল্য বৃদ্ধিসহ সব দিক দিয়ে এলাকার লোকজন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। আগে যে জমি ৩০ হাজার টাকা শতাংশ ছিল, এখন সেই জমি ক্ষেত্রবিশেষ ৩ লাখ টাকা করে শতাংশ হয়েছে।’ পায়রা সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর এম. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘একটা সমুদ্রবন্দরকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় শিল্প-ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। বন্দর ছাড়া যেমন শিল্প চলে না, তেমন শিল্প ছাড়াও বন্দর চলে না।

 শিল্প ও বন্দর একে অন্যের পরিপূরক। তাই বন্দরের সুবিধা পেতে আগামী কয়েক বছরে এই এলাকায় শত শত গার্মেন্ট, শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। এতে এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের ভাগ্য খুলে যাবে।’ ২০২৩ সালে বন্দর চালুর আগেই বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে শিল্পপ্রতিষ্ঠান করার জন্য উদ্যোক্তারা এরই মধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন এফবিসিসিআইর পরিচালক বরিশাল চেম্বারের সভাপতি মো. সাইদুর রহমান রিন্টু।