সন্তানের জন্য ‘দুধ চুরি’, সেই বাবার পাশে দাঁড়াতে চায় স্বপ্ন
নিউজ ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০১:৩৮ পিএম, ১২ মে ২০১৯ রোববার
রাজধানীর মালিবাগের হোসাফ টাওয়ারে একটি মোবাইলের দোকানে সেলসম্যানের কাজ করতেন তিনি। হঠাৎ চাকরি চলে যায়। তিন মাসের বেকারত্বে পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে শিশুসন্তানের খাবার (দুধ) কেনার টাকাও থাকে না পকেটে। একপর্যায়ে গত শুক্রবার (১০ মে) রাত আনুমানিক ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে সুপার শপ ‘স্বপ্ন’র খিলগাঁও শাখা থেকে দুধ নিয়ে পালাতে গিয়ে ধরা পড়েন তিনি। এরপর তাকে পুলিশে সোপর্দ করলে জানা যায় আসল ঘটনা। পরে চুরি করা দুধের দাম পরিশোধ করে ওই বাবাকে ছেড়ে দেন পুলিশ কর্মকর্তা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ ঘটনার বর্ণনা করে একটি পোস্ট দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) খিলগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) জাহিদুল ইসলাম।
কথিত এই ‘চোর’ বাবার কাহিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি চেইনশপ স্বপ্নের নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসিরের নজরে আসে। তার নির্দেশে ওই বাবা ও সন্তানের দায়িত্ব নেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে স্বপ্ন কর্তৃপক্ষ। তবে সামাজিক অবস্থানের কথা চিন্তা করে পুলিশ ও স্বপ্ন কর্তৃপক্ষ ওই ব্যক্তির নাম-পরিচয় প্রকাশে রাজি হয়নি।
শনিবার (১১ মে) সন্ধ্যায় স্বপ্নের হেড অব মার্কেটিং তানিম করিম বলেন, ‘হৃদয়বিদারক এই ঘটনার কথা জেনে আমাদের প্রতিষ্ঠান সেই বাবার পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদি ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায় তবে আমাদের প্রশাসন নিয়ম মেনে তাকে চাকরি দেওয়ার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে। প্রতিষ্ঠানের পলিসি অনুযায়ী যে পদে তাকে পদায়নের সুযোগ রয়েছে আমরা তাকে সেখানেই কাজ দেবো।’
তিনি জানান, ঘটনা জানার পর আমাদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ওই বাবাকে আগামী এক মাস তার সংসার পরিচালনার জন্য সব ধরনের খাবারসহ অন্যান্য সামগ্রী দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘যে পুলিশ কর্মকর্তা এই ঘটনার সাক্ষী ছিলেন, আমরা তার কাছ থেকে ওই বাবার মোবাইল ফোন নম্বর নিয়ে যোগাযোগ করেছি। আগামীকাল (রবিবার, ১২ মে) স্বপ্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ওই বাবার চাকরির সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) খিলগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘চুরির কারণ শুনে আমার খুব খারাপ লাগে। ঘটনাটি খুবই হৃদয়বিদারক। পরে নাম-পরিচয় লিখে রেখে আমি ওই বাবাকে ছেড়ে দিয়েছি। যতটুকু বুঝেছি তিনি খুব করুণ অবস্থায় ছিলেন। অন্যকিছু নয়, শুধু দুধের প্যাকেট চুরি করেছিলেন, সেটা তার সন্তানের জন্যই।’
তিনি বলেন, ‘তাকে আমার অফিসে আসতে বলেছি। এ বিষয়ে অনেক জায়গা থেকে মানুষ ফোন করেছে ওই বাবাকে সহযোগিতা করার জন্য।’