প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাক্রমে বড় পরিবর্তন
শিক্ষা ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ১২:৪২ পিএম, ২৩ মে ২০১৯ বৃহস্পতিবার
প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক (দ্বাদশ) স্তরের শিক্ষাক্রমে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। এরই মধ্যে শিক্ষাক্রম পরিমার্জনের কাজ শুরু করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। ২০২১ সাল থেকে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠ্যবই দেয়া শুরু হবে। এই পরিবর্তনে দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা গুরুত্ব পাবে।
সর্বশেষ ২০১২ সালে প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাক্রম পরিবর্তন করা হয়েছিল। প্রায় সাত বছর পর আবারো শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার। তবে জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার কথা থাকলেও বিদ্যমান পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ধরেই এই স্তরের শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন করা হচ্ছে।
শিক্ষাক্রমের পরিবর্তনের কাজটি করছে এনসিটিবি। সেখানকার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাক্রম পরিমার্জনের প্রক্রিয়া গত বছরের শেষ দিকে শুরু হয়। আর মাধ্যমিক স্তরের (মাদ্রাসাসহ) কাজটি এ বছরের প্রথম দিকে শুরু হয়।
বর্তমানে প্রাথমিক স্তরে সব মিলিয়ে পাঠ্যবই ৩৩টি এবং মাধ্যমিকে ৭১টি। প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত মোট শিক্ষার্থী ৪ কোটি ৪০ লাখ।
জানা গেছে, প্রাথমিকের শিক্ষাক্রম পরিবর্তনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট সহযোগিতা করছে। এই স্তরের শিক্ষাক্রম পর্যালোচনার জন্য শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের একদল শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশের ৪৫টি বিদ্যালয়ে টানা তিন মাস কাজ করেন। এরই মধ্যে প্রাথমিকের শিক্ষাক্রম পর্যালোচনার প্রতিবেদনও তৈরি করা হয়েছে।
এনসিটিবির একজন কর্মকর্তা জানান , টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) দক্ষতা অর্জনের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমও হবে দক্ষতাভিত্তিক। যেমন একজন শিক্ষার্থী ইংরেজিতে কতটা বলতে পারল বা লিখতে পারল, সেটার ওপর বেশি জোর দেয়া হবে। এমনিভাবে অন্যান্য বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা অর্জন কীভাবে সম্ভব, তা বলা হবে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমে। এ ছাড়া যুগের চাহিদা অনুযায়ী অন্যান্য বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
অন্যদিকে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাক্রম পর্যালোচনার জন্য ১৮টি জেলার ৩৬টি উপজেলার ২০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বেছে নেয়া হয়। পর্যালোচনার কাজে যুক্ত ব্যক্তিরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে ওই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পরিচালনা কমিটির সদস্যসহ স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। তারা বর্তমান শিক্ষাক্রমসহ বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন। মাধ্যমিকের তথ্য সংগ্রহের কাজ এ মাসের প্রথম দিকে শেষ হয়েছে। এখন তথ্য বিশ্লেষণের কাজ চলছে। এর ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। এরপর পরিমার্জনের কাজটি হবে।
এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান জানান, আগামী বছরের মার্চের মধ্যে শিক্ষাক্রম পরিমার্জনের কাজটি শেষ করা হবে। এরপর পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমের ভিত্তিতে পরের বছর (২০২১) প্রাথমিক স্তরের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ শ্রেণির বই দেয়া হবে। ২০২২ সালে প্রাথমিকের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের সপ্তম, নবম ও একাদশ শ্রেণির বই দেয়া হবে নতুন শিক্ষাক্রমের ভিত্তিতে। এরপর ২০২৩ সালে পঞ্চম, অষ্টমসহ অন্য শ্রেণিগুলোর বই দেয়া হবে নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে।