তারাই ব্যর্থ আবার তারাই সফল
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৯:৫২ এএম, ২৬ মে ২০১৯ রোববার
বলিউডের অনেক পুরনো নায়ক আছে যারা প্রত্যেকে নতুন রূপে হাজির হয়েছে পরিচালনায়। তবে যখন তারা সিনেমায় নায়ক রূপে ছিলেন তখন প্রায় ছবিতে ফ্লপের খাতায় নাম লেখাতেন। এই কারণে সেই গ্লানি মুছতে অন্য পেশা বেছে নিয়েছেন এই তারকারা। আজ ডেইলি বাংলাদেশের পাঠকদের জানাবো এমনই কিছু ফ্লপ তারকার বিবরণ, যারা এই প্ল্যাটফর্মে কিছু করতে না পেরে বেছে নিয়েছেন অন্য প্ল্যাটফর্ম। তবে এটা সত্যি যে, যখনই তারা নির্মাণে এসেছেন, তখনই তারা বিস্তর সাফল্যও পেয়েছেন।
আরবাজ খান
আরবাজ খান হলেন একজন ভারতীয় অভিনেতা, পরিচালক এবং চলচ্চিত্র প্রযোজক, যিনি হিন্দি চলচ্চিত্রের তার কাজের জন্য সুপরিচিত। তিনি ১৯৯৬ সালে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশের পর থেকে অনেক প্রধান চরিত্রে এবং সহকারী চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তবে সেখানে বেশ একটা ভালো করতে পারেননি এই অভিনেতা। এরপর তিনি নিজের চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা আরবাজ খান প্রোডাকশন নির্মাণ করেন এবং ২০১০ সালে তার বড় ভাই সালমান খানকে নিয়ে ‘দাবাং’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে নির্মাণ ও প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ছবিটি সর্বকালের সর্বোচ্চ ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রের তালিকায় প্রবেশ করে। এতে তিনি শ্রেষ্ঠ জনপ্রিয় চলচ্চিত্রকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও লাভ করেন। এরপর ‘দাবাং’-এর জনপ্রিয়তায় সিকুয়েল ‘দাবাং ২’ পরিচালনা করেছেন আরবাজ নিজেই।
রাকেশ রোশন
রাকেশ রোশনেরও শুরুটা হয়েছিল একজন ভারতীয় অভিনেতা হিসেবে। তিনি ১৯৭০ ও ১৯৮০ এর দশকে কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তবে অভিনেতা হিসেবে তিনি মূলত সঞ্জীব কুমার ও রাজেশ খান্নার অভিনীত চলচ্চিত্রে পার্শ্ব ভূমিকায় কাজ করেছেন। পরে তিনি ১৯৮৭ সাল থেকে পরিচালনার মাধ্যমে খ্যাতি অর্জন করেন। অভিনয়ে ফ্লপ হলে পরিচালনায় তিনি নিজেকে বেশ সুপরিচিত করতে সক্ষম হন। চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে তার প্রথমদিকের উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো নাট্যধর্মী ‘খুদগর্জ’(১৯৮৭), ‘খুন ভরী মাঙ্গ’ (১৯৮৮), হাস্যরসাত্মক-নাট্যধর্মী ‘কিষেণ কানাইয়া’ (১৯৯০), প্রতিশোধ-নাট্যধর্মী ‘করণ-অর্জুন’ (১৯৯৫)।
এরপর ২০০০ এর দশকে রাকেশ রোম্যান্টিক সিনেমা ‘কহো না পিয়ার হ্যায়’ (২০০০), বিজ্ঞানকল্পকাহিনী নির্ভর চলচ্চিত্র ‘কোই মিল গয়া’ ও ‘কৃষ’ চলচ্চিত্রের ‘কৃষ ১,২ ও ৩’ পরিচালনা করেন। এই সব ছবিতে নায়ক হিসেবে দেখা গেছে নিজের ছেলে ঋত্বিক রোশনকে। তবে এই পরিচালক মূলত অভিনেতা হিসেবে একটি আক্ষেপের নাম মাত্র। সুদর্শন হওয়ার পরও তারকাবহুল ‘মোহাব্বাতে’ ছাড়া তার ক্যারিয়ারে আর কোনো প্রাপ্তি নেই। শিশুচরিত্র দিয়ে সুনাম যা কুড়িয়েছেন, নায়ক হয়ে তার সব খুঁইয়েছেন। পরবর্তীতে তিনি দু’টো সিনেমা পরিচালনা করেন। একটা যশ ফিল্মসের ব্যানারে ‘প্যায়ার ইম্পসিবল’। আরেকটা হলো ‘রোড-সাইড রোমিও’। অ্যানিমেশন এই সিনেমাটি পরিচালনার জন্য রীতিমত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। এই কারণে বলা যায় অভিনয়ে যতটা ব্যর্থ তিনি, পরিচালনায় ততটা সফল এই তারকা।
আশুতোষ গোয়ারিকার
আশুতোষ গোয়ারিকারের শুরুও কিন্তু অভিনয় দিয়ে। ১৯৮৪ সালে ‘হোলি’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। এরপর ‘নাম’ (১৯৮৬), ‘চমৎকার’ (১৯৯২) কিংবা ‘কাভি হা কাভি না’ (১৯৯৩)– সিনেমাগুলোতে কাজ করেছেন। তবে একটি ছবিতেও নিজেকে পরিচিত করাতে পারেননি এই ব্যর্থ নায়ক। পরে ১৯৯৩ সালে পরিচালক হিসেবে ‘পেহলা নেশা’ করার পর ১৯৯৫ সালে আসে তার আরেকটি নির্মাণ ‘বাজি’। এরপর একে একে ‘লগান’, ‘স্বদেশ’, ‘যোধা আকবর’ নির্মাণ করেন তিনি। এমনকি এই প্ল্যাটফর্মে ‘লগান’ ছবিটি তাকে অস্কার অবধি নিয়ে গিয়েছিল।
পূজা ভাট
ভারতের জনপ্রিয় পরিচালক মহেশ ভাট কন্যা ও আলিয়া ভাটের বড় বোন পূজা ভাটও এক সময় নায়িকারূপে এসেছিলেন বলিউডে। তার ক্যারিয়ারে ‘সড়ক’ ও ‘দিল হ্যায় কি মানতা নেহি’র মত সিনেমা আছে। তবে এই সব ছবিতে কিছু দেখাতে না পারলেও পরে পরিচালনায় এসে ‘পাপ’, ‘হলিডে’ ও ‘জিসম টু’ নির্মাণ করে হয়েছেন আলোচিত। এরপর থেকে পরিচালনাকেই তিনি পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
সুভাষ ঘাই
সুভাষ ঘাই, তাকে চেনেন না এমন দর্শক খুব কম আছেন। যদিও তিনি নায়ক হিসেবে সুপরিচিত নন। তিনি মূলত বলিউডের অসংখ্য হিট সিনেমার নির্মাতা; সেসব বলে শেষ করা যাবে না। এর মধ্যে রয়েছে, ‘খলনায়ক’, ‘তাল’, ‘পরদেশ’, ‘ইকবাল’ প্রভৃতি। তবে, তার ক্যারিয়ার প্রথম যখন অভিনেতা হিসেবে শুরু হয়, তখন তিনি ছোট খাট চরিত্র ছাড়াও ৭০-এর দশকের ‘উমাঙ’ ও ১৯৭৬ সালের ‘গুমরাহ’ ছবিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন। সেসবে স্থায়ী আসন গড়তে না পেরে ১৯৭৬ সালে ‘কালিচরণ’ সিনেমা দিয়ে পরিচালনায় নিজের নাম লেখান।