শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৫ ১৪৩১   ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৮:৩৫ এএম, ২৮ মে ২০১৯ মঙ্গলবার

ফেনীর সোনাগাজীর সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। যৌন হয়রানির অভিযোগ বিষয়ে ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে জিজ্ঞাসাবাদের ঘটনা ভিডিওতে ধারণ এবং তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়েছিল।

সোমবার (২৭ মে) দুপুরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলায় মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবেদন দাখিল করে। অন্যদিকে মামলার বাদী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। পরে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসলাম জগলুল হোসেন ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

 

এদিন দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে প্রতিবেদনটি দাখিল করেন পিবিআইয়ের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রীমা সুলতানা। ট্রাইব্যুনালের পেশকার শমীম আহমেদ প্রতিবেদনটি গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ১২৩ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। এর মধ্যে মূল প্রতিবেদন ১৩ পৃষ্ঠার। বাকি ১১০ পৃষ্ঠা রয়েছে আনুষাঙ্গিক বর্ণনা। ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, সেগুলোর সত্যতা উঠে এসেছে এই প্রতিবেদনে।

সোনাগাজীর মাদরাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি অভিযোগ দিতে আসার পর তাকে আপত্তিকর প্রশ্ন করা ও ভিডিও ধারণ করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে গত ১৫ এপ্রিল সোনাগাজী থানার প্রত্যাহার হওয়া ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। আবেদন গ্রহণ করে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসলাম জগলুল হোসেন মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

মামলার এজাহারে থেকে জানা যায়, গত ২৭ মার্চ নুসরাতকে থানায় নিয়ে যান ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। সেখানে তিনি নিয়ম বহির্ভূতভাবে নুসরাতকে জেরা করতে থাকেন। ওই জেরার সময় ভিডিও ধারণ করেন। পরবর্তী সময়ে ফেসবুক ও ইউটিউবে তা ছড়িয়ে দেন। ওই সময় মোয়াজ্জেম হোসেন অত্যন্ত অপমানজনক এবং আপত্তিকর ভাষায় প্রশ্ন করেন নুসরাতকে। একপর্যায়ে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ওই ভিকটিমের শ্লীলতাহানিও করে। ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন যা করেছেন, তা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।

 

ওই ঘটনায় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারা মামলা করা হয়। একইসঙ্গে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার আবেদন জানান বাদি।

এর আগে, গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ রুমে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। কারাগারে থেকেই নুসরাতের পরিবারকে মামলা তুলে নিতে চাপ দিতে থাকেন সিরাজ। তবে মামলা তুলে না নিলে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় অধ্যক্ষের সহযোগীরা। এপ্রিলের ১০ তারিখ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় নুসরাতের।