ঈদে ঢাকা-গাজীপুর-নারায়ণগঞ্জ ছাড়ছে দেড় কোটি মানুষ
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৯:৩৭ এএম, ২ জুন ২০১৯ রোববার
এবারের ঈদুল ফিতরে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ছাড়ছে প্রায় দেড় কোটি মানুষ (১ কোটি ৪৭ লাখ)। এর মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ ঢাকা জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বাড়ি ফিরবে ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ।
এছাড়া গাজীপুর থেকে যাবে ২৫ লাখ ৫০ হাজার মানুষ। আর ১১ লাখ ৫০ হাজার মানুষ যাবে নারায়ণগঞ্জ থেকে। এই বিপুলসংখ্যক ঘরমুখী যাত্রীর ৫৫ শতাংশ সড়কপথে ও ২৫ শতাংশ যাবে নৌপথে। বাকি ২০ শতাংশ যাবে রেলপথে।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির ঈদপূর্ব এক বার্ষিক প্রতিবেদনে এ পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংগঠনগুলো এ সংক্রান্ত ‘পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজ’ সংরক্ষণ না করায় তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে প্রতিবছর ঈদের আগে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় এবং এতে প্রতিবেদনটিও ‘শতভাগ তথ্য-নির্ভর কিংবা বস্তুনিষ্ঠ’ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির মতে, প্রতি ঈদে আনুমানিক ৫০ শতাংশ মানুষ ঢাকা মহানগরী ছেড়ে যায়। গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ শহর ছাড়ে ৩০ শতাংশ মানুষ। এই হিসেবে এবার ঈদে এক কোটি মানুষ ঢাকা শহর ছাড়ছে আর গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ শহর ছাড়ছে যথাক্রমে ১৯ লাখ ৫০ হাজার ও ৭ লাখ ৫০ হাজার মানুষ।
এছাড়া ঢাকা দক্ষিণ, ঢাকা উত্তর, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ- চারটি সিটি করপোরেশনের বাইরে এ তিন জেলার অন্যান্য স্থান থেকে আরও ২০ লাখ মানুষ ঈদে ঘরমুখী হয়। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকার ১০ লাখ, গাজীপুরের ৬ লাখ ও নারায়ণগঞ্জের ৪ লাখ মানুষ। সব মিলিয়ে তিন জেলার এক কোটি ৪৭ লাখ (প্রায় দেড় কোটি) মানুষ এবার ঈদযাত্রায় শামিল হচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে সংগৃহীত তথ্য এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঈদপূর্ব পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এ পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে বলে জাতীয় কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ে, নৌ ও সড়ক পরিবহন সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, গণপরিবহন নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এবং ব্যক্তিপর্যায়ের গবেষকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে বেসরকারি এই সংগঠনের প্রতিবেদনে বলা হয়, আসন্ন ঈদুল ফিতরে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ থেকে ৮০ লাখ ৮৫ হাজার মানুষ সড়কপথে ও ৩৬ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ নৌপথে ঘরমুখী হবে। বাকি ২৯ লাখ ৪০ হাজার মানুষ যাবে রেলপথে। এই হিসেবে ঈদে ঘরমুখী মানুষের ৫৫ শতাংশ সড়ক, ২৫ শতাংশ নৌ ও ২০ শতাংশ রেলপথ ব্যবহার করবে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বরাত দিয়ে জাতীয় কমিটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১১ সালের আদম শুমারি অনুযায়ী ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) জনসংখ্যা যথাক্রমে এক কোটি ৬ লাখ ২৭ হাজার ১৭ এবং ৭৫ লাখ ৫৮ হাজার ২৫। দুটি করপোরেশন মিলিয়ে ঢাকা মহানগরীর মোট জনসংখ্যা এক কোটি ৮১ লাখ ৮৪ হাজার ৪১ এবং সম্মিলিত আয়তন ২৭০ বর্গকিলোমিটার।
তবে জীবন-জীবিকার তাগিদে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ঢাকামুখী প্রবণতার কারণে গত নয় বছরে রাজধানীর জনসংখ্যা অন্তত দুই কোটি। একই কারণে ঢাকার পার্শ্ববর্তী গাজীপুর সিটি করপোরেশন (জিসিসি) ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (এনসিসি) জনসংখ্যা বেড়ে যথাক্রমে ৬৫ লাখ ও ২৫ লাখ হয়েছে। সব মিলিয়ে তিন শহরের বর্তমান লোকসংখ্যা দুই কোটি ৯০ লাখ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে বলেন, ঈদে স্বজনদের সান্নিধ্য-প্রত্যাশীরা গত কয়েকদিন ধরে বিচ্ছিন্নভাবে ঘরমুখী হতে শুরু করলেও আনুষ্ঠানিক ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে ৩১ মে শুক্রবার থেকে এবং এই যাত্রা চলবে ৫ জুন বুধবার (সম্ভাব্য ঈদের দিন) দুপুর পর্যন্ত।