শনিবার   ০৯ নভেম্বর ২০২৪   কার্তিক ২৪ ১৪৩১   ০৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সিনেমার সেটে আগুন, হিরোইনকে বাঁচালেন ‘রিয়েল লাইফ হিরো’

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১০:৩১ এএম, ৯ জুন ২০১৯ রোববার

সিনেমা ‘মাদার ইন্ডিয়া’। অভিনেত্রী নার্গিস , তার ছেলের চরিত্রে অভিনয় করছেন সুনীল দত্ত। গ্রামের খড়ের গাদায় আগুন লেগেছে। জ্বলছে গ্রাম। সেই আগুনের ভিতর দিয়ে ছুটে আসছেন সিনেমার প্রধান অভিনেত্রী। ক্যামেরায় যখন এই টেক নেয়া হচ্ছে তখন হঠাৎ করেই হিতে বিপরীত। বাতাসের গতি আচমকা পাল্টে যায়। নিমেষে আগুন ছড়িয়ে পড়ে সেটে। 

পলকে আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। প্রধান অভিনেত্রী আটকা পড়ে গিয়েছেন আগুনের বৃত্তে। হইচই পড়ে যায় ইউনিটে। কেউ সাহস পান না তাকে উদ্ধার করার। এমন সময় নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আগুনের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েন ছবির অন্যতম প্রধান অভিনেতা। বাঁচান নায়িকাকে। নিজে আহত হন। হাসপাতালে যেতে হয় তাকে। যে সিনেমায় মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন নার্গিস ও ছেলের ভূমিকায় তার রিয়েল লাইফ স্বামী সুনীল দত্ত।

১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর দেশপ্রেমমূলক ছবি তৈরির হিড়িক পড়ে বলিউডে। প্রযোজক-পরিচালক মেহেবুব খান পরিকল্পনা করেন তিনি দেশমাতৃকার রূপ তুলে ধরবেন রূপকের মাধ্যমে। তিনি যখন ভারতীয় নারীর আত্মত্যাগ ও মহিমা তুলে ধরতে নার্গিস ছাড়া কারও কথা ভাবতেই পারেননি। সেই সময় হিন্দি ছবির জগতে শীর্ষস্থানীয় নায়িকা নার্গিস। স্বাভাবিকভাবেই তাই ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র রাধার ভূমিকায় তার নামই প্রস্তাবিত হয়। ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৫৭ সালের ২৫ অক্টোবর।

 

মেহেবুব খানের এই ছবি শুধু নার্গিসের ক্যারিয়ারে সর্বশ্রেষ্ঠ কাজই নয়, হিন্দি ছবির শতবর্ষের ইতিহাসেরও এক মাইলফলক। ঘটনাচক্রে সুনীল দত্ত ছবিতে অভিনয় করলেও বিশেষ লাইম লাইট পাননি। নার্গিস একাই সব নিয়ে গিয়েছিলেন। দর্শকের ভালোবাসা থেকে শুরু করে পুরস্কার সবই পেয়েছিলেন নার্গিস। বয়ে আনে প্রভূত সম্মান ও সাফল্য। 

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কোনো পুরস্কারই প্রায় বাদ ছিল না। তবু আগুন লাগার সেই ঘটনা সুনীল দত্তকে রিয়েল লাইফ হিরোর জায়গা দিয়েছিল। আর গতকাল ছিলো সেই রিয়েল লাইফ হিরোর জন্মবার্ষিকী।