শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১   ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নর্তকীদের কাপড় খুলতে চড়াও ৫০০ পুরুষ!

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১০:৪৩ এএম, ১১ জুন ২০১৯ মঙ্গলবার

ঈদ মানেই আনন্দ। এটি বছরে দুইবারই আসে। ঈদ এলেই চিরচেনা শহর যেন অচেনা হয়ে যায়। বিভিন্ন দেশে কিন্তু ঈদের আমেজে পরিবর্তিত হয় পুরো দৃশ্যপট। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে অধিকাংশ মানুষই যেন একত্রিত হয়ে যায়। 

ঈদ আসলে ভিড় জমতে থাকে বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে। এই দিনে মানুষ একটু বেশি বিনোদন চায়। পুরো বছরে আনন্দ নিয়ে ঘোরাঘুরির মত এই দুটি দিনই থাকে, সে দিনে আনন্দ নিবে এটা বেশ স্বাভাবিক। তাই বলে আনন্দ নিতে গিয়ে অসভ্যতা কিন্তু কারো কাম্য নয়।  
 
বলছিলাম ভারতের এমন এক ঈদের অনুষ্ঠানের কথা, যাকে কেন্দ্র করে অসভ্যতা ছড়িয়ে পড়লো পুরো বিশ্বজুড়ে। যেখানে নারীদের রীতিমতো পণ্য মনে করে জামাকাপড় খুলে নাচার জন্য বাধ্য করা হয়। এমনকি নারীদের মারধরের মতো অভিযোগও উঠল সাম্প্রতিক সময়ে। আর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের আসামের কামরূপ জেলার ছয়গাঁওয়ে। 

এমনিতেই কামরুপ নিয়ে নানা ধরণের যৌনতার গল্প আগে থেকে প্রচলিত আছে। তবে এটি একটি সম্পূর্ণ নতুন খবর। ঘটনা হলো, ঈদের পর শনিবার ছয়গাঁওয়ে এলাকার মানুষের মনোরঞ্জনের স্বার্থে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে অনুষ্ঠান দেখতে হাজির হয়েছিলেন প্রায় কয়েকশো দর্শক।  

পরিকল্পনা অনুযায়ী অনুষ্ঠানটি শুরুতে বেশ ভালোই চলছিল। নাচগানও ঠিক মত হচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ-ই মাঝপথে প্রায় ৫০০ জনেরও বেশি পুরুষ উত্তেজিত হয়ে পড়ে। তারা নাচ দেখতে দেখতে হঠাৎ এমন আচরণ শুরু করে। স্টেজে তখন নারীদের একটি দল নৃত্য পরিবেশন করছিলেন। এই নৃত্য কোন সাধারণ নৃত্য নয়, এটি ছেলেদের উত্তেজিত করার মতই নৃত্য ছিল। তাই আচমকা ওই নারীদের পোশাক খুলে নাচ করার দাবি তোলে স্টেজে থাকা ৫০০ জন পুরুষ। 

এদের মধ্যে কেউ কেউ এতটা উত্তেজিত হয়ে যায় যে, তারা সোজা স্টেজে উঠে পড়ে। তারপর নারীদের জামাকাপড় ধরে টানাটানি শুরু করে দেয়। পরে বেহাল অবস্থা দেখে অনেকটা ভয় পেয়ে যায় নারীরা। এরপর কোনভাবে সম্ভ্রম বাঁচিয়ে ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয় তারা। 

এর আগেও অবশ্য অনেকটা দখল গেছে তাদের উপরে। তবে এক পর্যায়ে গাড়িতে চড়ে এলাকা ছাড়তেও সক্ষম হয় ওই নারীরা। কিন্তু গন্ডগোল কিন্তু এখানে থেমে যায়নি। পুরুষদের উত্তেজনা এতটা বেড়ে গিয়েছিল যে, ওই নারীদের গাড়িতে উঠে যাওয়ায় পরপরই ৫০০ জন পুরুষ সম্মিলিতভাবে তাদের গাড়ির উপর হামলা চালায়। পাথর ছোঁড়া হয় সে গাড়িতে। এতে যানবাহনটি সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হলেও নারীদের কেউই তেমন আহত হননি। পরিশেষে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় তারা।

এদিকে, ঘটনার পর ছয়গাঁও থানায় গিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজকরা অভিযোগ দায়ের করেন। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে এরই মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের একজনের নাম শাহরুখ খান ও সুবাহান খান। অভিযুক্তরা কোচবিহার জেলা থেকে এসেছিল বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। তবে সূত্রের খবর বলছে অনেক চড়া দামে টিকিট বিক্রি করা হয়েছিল এই অনুষ্ঠানের। তা সত্ত্বেও অনুষ্ঠানটিতে ছিল না কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তাই ঘটনার সুস্থ তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।