শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১   ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

একাকিত্বে ভুগছেন আকরাম-কাসেমী!

নিজস্ব প্রতিবেদক 

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৫:১৫ পিএম, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ বুধবার

 জেলা ও মহানগর বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের র্শীষ নেতাকর্মীদের সহযোগিতা না পেয়ে একা হয়ে পড়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী ও এসএম আকরাম। একদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের অসহযোগিতা অন্যদিকে হামলা-মামলার কারণে গত দুইদিন যাবত কোন প্রচারণা নেই এই দুই প্রার্থীর।

নারায়ণগঞ্জের তিনটি আসনে বিএনপির তিন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হলেও ফতুল্লা সিদ্ধিরগঞ্জ আসনে বিশ দলীয় জোটের শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীকে মনোনয়ন দেয়া হয়। অন্যদিকে সদর-বন্দর আসনে নির্বাচনকালীন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দল নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এসএম আকরামকে মনোনয়ন দেয়া হয়। এসএম এই আসনটিতে আওয়ামীলীগের সাবেক সাংসদ ছিলেন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই দুই প্রার্থী মনোনয়ন পাবার পর থেকেই বিএনপির নেতাকর্মীরা চুপসে যান। ফলে দুই প্রার্থী তাদের কোন সহযোগিতা পাচ্ছেন না। বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নির্বাচনী মাঠে নামাতে এই দুই প্রার্থী তাদের বাড়ি বাড়ি পর্যন্ত গিয়েছেন। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের পক্ষে নির্বাচনী মাঠে নামেননি, শুধু আশ্বস্থ করেছেন। অথচ প্রার্থীরা ভেবেছিলেন, মান অভিমান যতই থাকুক, নির্বাচনী প্রতীক ধানের শীষ হওয়াতে নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপির বিশাল কর্মীবাহিনীকে সাথে পাবেন। ধানের শীষের পক্ষে দলীয় স্বার্থে হলেও বিএনপির বিশাল কর্মীবাহিনীরা নামবেন। কিন্তু সে আশায় গুড়ে বালি!

সূত্রমতে, এসএম আকরাম নিজ বলয়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে সদর ও বন্দরের কয়েকটি স্থানে নির্বাচনী গণসংযোগ চালিয়েছেন। প্রথম দুইদিন প্রচারণায় আকরামের সাথে ছিল মহানগর বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম, সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর কালাম অসুস্থতার অজুহাতে  আকরামের সাথে আর প্রচারণায় নামেননি। 

এদিকে আকরাম নিজ উদ্যোগে প্রচারণা চালালেও বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অঙ্গসংগঠনের কেউ আলাদাভাবে জোটের প্রার্থীর পক্ষে কোন প্রচারণা চালাতে দেখা যায়নি। আকরামও হামলা-মামলার ভয়ে প্রচারনা থেকে নিজেকে অনেকটা গুটিয়ে নিয়েছে তিনি। দুইদিন যাবত বন্ধ রেখেছেন প্রচারণা।

অন্যদিকে একেবারেই প্রচারণায় নেই ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের প্রার্থী মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীর পক্ষে বিএনপির কোন নেতা। সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমূর আলম খন্দকারের বাড়ি পর্যন্ত গিয়ে তোষামোদ করেও কাসেমী তাদের নির্বাচনী মাঠে নামাতে পারেননি। কাশিপুর ইউনিয়নে দুইদিন প্রচারণা চালালেও সেখানে কোন বিএনপির কোন শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ছিলেন না। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদ ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শাহ্ আলমও কাসেমী বিমুখ হয়ে আছেন।

এদিকে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি পারভেজ আহমেদ কাসেমীর সাথে নির্বাচনী কাজে থাকবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এবং কয়েকদিন পারভেজকে নিয়ে কাসেমী নির্বাচনী প্রচারনা চালিয়েছেন। কিন্তু গত ২৪ ডিসেম্বর বেলা পৌনে ২টায় কাসেমী তাকে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ এনে সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় তার সাথে ছিলে পারবেজ আহমেদ। কিন্তু সংবাদ সম্মেলন করে নামার পর প্রেসক্লাবের নিচ থেকে পারভেজ আহমেদকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। বর্তমানে অজানা ভয়ে নিরাপত্তাহীনতার অজুহাতে প্রচার- প্রচারনা থেকে বিরত রয়েছে ঐক্যফ্যন্টের প্রার্থী মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী।

সব মিলিয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতাদের পাশে না পেয়ে অনেকটাই একা হয়ে পড়েছেন মুফতি কাসেমী ও এস এম আকরাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিএনপির নেতাকর্মীরা মাঠে না নামলে এই দুই প্রার্থীর নসীবে কি আছে তা টের পাওয়া যাবে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের ফলাফলে।