বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পশ্চিমবঙ্গে হাসপাতালে অচলাবস্থা, দু’দিনে ২৮ রোগীর মৃত্যু

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১২:৫৪ পিএম, ১৪ জুন ২০১৯ শুক্রবার

চিকিৎসকদের কর্মবিরতী পালণের ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে পশ্চিম বঙ্গের চিকিৎসা ব্যবস্থা। এনআরএস হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যটির চিকিৎসকেরা কর্মবিরতী পালণ করায় কার্যত অচল হয়ে পড়েছে হাসপাতালগুলো। এরই প্রেক্ষিতে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ থাকায় গেল ৪৮ ঘণ্টায় ২৮ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে হাসপাতাল চত্বরে।

রাজ্যের একাধিক হাসপাতালে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এনআরএসের পাশাপাশি কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের পরিস্থিতিও ক্রমশ জটিল হয়ে উঠেছে। একইপথে এগোচ্ছে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।

বিশেষ করে জরুরি বিভাগ খোলা না থাকায় একের পর এক রোগীর মৃত্যু নিয়ে ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। অনেকে অভিযোগ করছেন, হাসপাতালে রোগীমৃত্যু স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে এখানে প্রায় ১০ থেকে ১২ জন রোগীর মৃত্যু হয়।

তবে জরুরি বিভাগের পরিষেবা বন্ধ থাকায় এখানে গেল ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ২৫ জনেরও বেশি রোগীর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল সুপার জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ১৫ এবং বুধবার আরও ১৩ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। যাদের মধ্যে ৪ জন নবজাতক। বৃহস্পতিবার আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।

বুধবারের মতো বৃহস্পতিবারও হাসপাতালের বহির্বিভাগ বন্ধ রয়েছে। হাসপাতালটিতে অনেক দূর থেকে রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। বৃহস্পতিবার সকালে অনেকে হাসপাতালে এসে দেখেন বহির্বিভাগ বন্ধ। টিকিট কাউন্টারেরও দরজা খোলেনি।

তারপর কাউন্টার এবং বহির্বিভাগ খোলার দাবিতে রাস্তা অবরোধ শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই খুলে দেয়া হয় বহির্বিভাগের মূল ফটক। তবে চিকিৎসকরা বহির্বিভাগের বাইরে গিয়ে কাজ শুরু করেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায় সেই পরিষেবাও।

একই ঘটনা ঘটেছে বর্ধমান, বাঁকুড়া ও মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজেও। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে বহির্বিভাগ খুলে পরিষেবা শুরু হয়। কিন্তু, কিছুক্ষণ পর জুনিয়র চিকিৎসকরা এসে বহির্বিভাগ থেকে অন্যান্য চিকিৎসকদের বের করে নিয়ে যায়। তারপর থেকে চিকিৎসা সেবা বন্ধ।

মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জেনারেল ফিজিশিয়ান বিভাগের টিকিট দেয়া সত্ত্বেও রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়নি। টিকিট কেটে রোগীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা এসে লাইনে দাঁড়িয়েও কোনো সাড়া পাননি। এখানেও জুনিয়র চিকিৎসকরা বহির্বিভাগ বন্ধ করে দেন।

এদিকে চিকিৎসকদের বিক্ষোভের কারণে রোগীদের দুর্দশা কাটাতে চিকিৎসকদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। 

বৃহস্পতিবার কলকাতার প্রধান সরকারি হাসপাতাল সফরের সময় দেয়া এক বক্তৃতায় এ আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া তিনি হুশিঁয়ারী উচ্চারণ করেও বলেছেন, যদি আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা হাসপাতালে ফিরে না যান, তবে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া সহ পুলিশি ঝামেলাতেও পড়তে হবে।