দক্ষতা বিবেচনায় সেনা সদস্যদের পদোন্নতির নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৮:১৩ এএম, ১৭ জুন ২০১৯ সোমবার
সেনাবাহিনীতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস, নেতৃত্ব ও পেশাগত দক্ষতা, শৃঙ্খলা, সততা ও আনুগত্য বিবেচনায় নিয়ে পদোন্নতি দিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেনাবাহিনীকে সবসময় জনগণের পাশে থাকার আহ্বান জানান তিনি।
রোববার ঢাকা সেনানিবাসে সেনাসদর নির্বাচন পর্ষদ-২০১৯ এর সভায় সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব নির্দেশনা দেন।
সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের পদোন্নতির লক্ষ্যে রোববার থেকে শুরু হয় সেনাসদর নির্বাচন পর্ষদ, চলবে পাঁচদিন। পর্ষদে কর্নেল থেকে ব্রিগেডিয়ার এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল থেকে কর্নেল পদে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত হবে।
প্রধানমন্ত্রী সকালে সেনাসদরে পৌঁছলে তাকে স্বাগত জানান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এর সচিব সাজ্জাদুল হাসান, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনা সদস্যদের মনোবল বাড়াতে নানামূখী পদক্ষেপ নিয়েছে বর্তমান সরকার। আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। সেনা সদস্যদের দেশপ্রেম, সততা ও আনুগত্য বজায় রেখে দায়িত্ব পালনের আহ্বানও জানান শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী আশা করেন গণতন্ত্র সুসংহত রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে, সুশৃঙ্খল ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর ১৯টি অভ্যুত্থানের ঘটনা তুলে ধরেন।
১৯৮১ সালে নির্বাসিত জীবন থেকে দেশে ফেরার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যখন দেশে ফিরলাম তখন বলেছিলাম ওই আত্মঘাতি অবস্থা আমরা চাই না। দেশের সবক্ষেত্রে শান্তি চাই। মনোবল ছিল বলেই দেশে ফিরেছিলাম। মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসই আমার মূল শক্তি।
বর্তমানে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা আমাদের অর্জন।
১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর করা প্রতিরক্ষা নীতির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার দূরদৃষ্টি ছিল। দেশের সেনাবাহিনী কেমন হবে সেই চিন্তাতেই তিনি নীতিমালা তৈরি করেছিলেন। ফোর্সেস গোল ২০৩০ ওই নীতিমালার ভিত্তিতেই প্রণয়ন করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় বিভিন্নখাতে উন্নয়ন চিত্র তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধীদলে থাকার সময়ই তিনি দেশের উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করেছিলেন। কোন খাতে কি ধরনের উন্নয়ন করা হবে পরিকল্পনাতে সেসব বিষয় ছিল।
আগামী অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে দশমিক ২০ ভাগ হবে। পরবর্তীতে দুই অংকে নিয়ে যাব। মেগা প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন হলে প্রবৃদ্ধি আরো বাড়বে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রবৃদ্ধি যখন বাড়ে তখন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে তার সুফল পায় সাধারণ মানুষ। মানুষ ধীরে ধীরে দারিদ্র্যসীমা থেকে বেরিয়ে আসছে। তিনি বলেন, পাঁচ কোটি মানুষ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আছে। নারীর ক্ষমতায়নে অগ্রগামী। এবার ওআইসি সম্মেলনে নারীর ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে আমাদের মূল্যায়ন হয়েছে। প্রশংসাও করা করেছে।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সেনাবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারনী পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত এ পর্ষদের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর ভবিষ্যৎ জ্যেষ্ঠ নেতৃত্বের জন্য যোগ্য ও দক্ষ অফিসাররা সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে পদোন্নতি পাবেন