বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চাকরি হারালেন ‘চুমু দেয়া’ সেই ডাক্তার!

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৯:২৮ এএম, ১৮ জুন ২০১৯ মঙ্গলবার

ব্রণের জন্য রাজধানীর ধানমন্ডি পপুলার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে তরুণীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে ওই চিকিৎসককে না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 

 

একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তরুণীর গালে ব্রণ দেখতে গিয়ে চিকিৎসক চুমু দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। ওই তরুণী ও চিকিৎসকের কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড এরইমধ্যে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই রেকর্ড অনুযায়ী, মেয়েটি যখন তার গালে চুমু দেয়ার কারণ জানতে চান, তখন পুরুষ কণ্ঠে একজন বলেন, গালে ইনফেকশন আছে কি-না, এটা বুঝতে তিনি চুমু দিয়েছেন। 

অভিযুক্ত চিকিৎসক হলেন চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ এবং লেজার কসমেটিক সার্জন শওকত হায়দার। এই ঘটনায় পপুলার হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগও করেন ভুক্তভোগী তরুণী।

 

সোমবার দুপুরে পপুলার হাসপাতালের মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান অচিন্ত্য কুমার নাগ এ তথ্য জানান।

অচিন্ত্য কুমার নাগ বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তিনি অবশ্যই আর এখানে কন্টিনিউ করবে না, তাকে চেম্বারে বসতে দেয়া হবে না।

তিনি জানা, ওই চিকিৎসক সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার দু’দিন পপুলারে বসতেন। যারা ফুলটাইম এখানে বসেন, তিনি তাদের মতো না।

জানা যায়, ডাক্তার দেখিয়ে বাসায় ফিরে ওই তরুণী অভিযুক্ত ডাক্তারের কাছে ফোন করে তার কৃতকর্মের কারণ জানতে চাইলে ডা. শওকত বলেন, ‘ওটা কিছু না, ইনফেকশন আছে কি না দেখছিলাম।’
 

পরে তরুণী বলেন, ‘এমন তো আমি কখনো দেখিনি, ইনফেকশন আছে কিনা সেটা কোনো ডাক্তার কি ঠোঁট দিয়ে চেক করে?’ এ সময় ডাক্তার শওকত হায়দার ওই তরুণীকে বলেন, ‘দুঃখিত’।

ওই তরুণী জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ত্বকে ব্রণের সমস্যা নিয়ে পরিচিত একজনের রেফারেন্সে প্রথমবার পপুলার হাসপাতালের ওই ডাক্তারের কাছে যান তিনি। পরবর্তীতে চিকিৎসার প্রয়োজনে আরো কয়েকবার প্রায় বাবার বয়সী ডাক্তারের কাছে যান তিনি।

সর্বশেষ গত শনিবার দুপুরে ওই তরুণী ডা. শওকতকে জানান তার ত্বকের সমস্যা আবার বেড়েছে, রাতে তিনি চেম্বারে বসবেন কি না? এ সময় ওই ডাক্তার চেম্বারেই আছেন জানিয়ে মেয়েটিকে তখনই যেতে বলেন।

পরে ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে ওই তরুণী জানতে চান তার সমস্যার কোনো স্থায়ী সমাধান আছে কিনা। এ সময়  ডা. শওকত বলেন, যদি তিনি চায় তবে একটা ইনজেকশন দেয়া যেতে পারে। তবে ইনজেকশনটি কোমরে দিতে হবে। মেয়েটির ইতস্ততভাব দেখে ওই ডাক্তার তাকে বলেন, কাপড়ের ওপর দিয়েই ইনজেকশন দেয়া যাবে।

 

মেয়েটি তার অভিযোগে জানায়, ইনজেকশন দিতে রাজি হয়ে পেসেন্ট টেবিলে শুইলে ওই ডাক্তার মেয়েটির বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতে থাকেন। মেয়েটি প্রতিবাদ করলে তিনি বলেন, কোথায় ইনজেকশন দিলে ভালো হয় তা চেক করে দেখছিলেন তিনি।

পরে ওই তরুণী সেই ইনজেকশন হাতেই দিতে বলেন। ওই তরুণী অভিযোগ করেন, ডাক্তার ইনজেকশন দেয়ার পর তুলা দিয়ে চেপে না ধরে না তার জামার ভিতর হাত ঢুকিয়ে দেন। এ অবস্থায় মেয়েটি তাড়াতাড়ি সরে এসে ডাক্তারের ফিস দিয়ে চেম্বার থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। এ সময় সেই ডাক্তার আরেকবার তার গালের ইনফেকশনটি দেখতে চান। গাল দেখার ছলে ডা. শওকত ওই তরুণীকে চুম্বন করেন।