বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অবহেলিত নবাব সিরাজউদ্দৌলা, সযত্নে মীর জাফরের কবর

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১২:০২ পিএম, ২২ জুন ২০১৯ শনিবার

বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা স্বাধীনতা রক্ষায় পলাশীর যুদ্ধে তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হন। সেনাপতি মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে ২৩ জুন ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত হন নবাব সিরাজউদ্দৌলা।

পলাশীর যুদ্ধে তার পরাজয় ও মৃত্যুর পরই ভারতবর্ষে ১৯০ বছরের ইংরেজ-শাসনের সূচনা হয়। রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার শাসনভার গ্রহণ করে।

সিরাজউদ্দৌলা তার নানা নবাব আলীবর্দী খান-এর কাছ থেকে ২২ বছর বয়সে ১৭৫৬ সালে বাংলার নবাবের ক্ষমতা অর্জন করেন।

 

মৃত্যুর পরেও এই বীর নবাবের প্রতি যথাযথ সম্মান দেখানো হচ্ছে না। চরম অবহেলা ও অযত্নে রয়েছে তার সমাধিস্থল। অন্যদিকে ব্রিটিশদের সঙ্গে আঁতাত করা মীর জাফর, তার তিন স্ত্রী এবং বংশধরদের কবরস্থান বেশ সংরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের অবহেলার কারণেই এমন অবস্থা।

১৭৫৭ সালে ইংরেজদের সঙ্গে গোপন চুক্তি করে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করে ক্ষমতায় আসেন মীর জাফর। তার মৃত্যুর পর তিন স্ত্রী ও ১১০০ বংশধরকে মুর্শিদাবাদের জাফরাবাদে কবর দেয়া হয়। তার কবরস্থানটি অত্যন্ত সুরক্ষিত। দর্শনার্থীদের ভারতীয় ১৫ টাকা টিকিট কেটে সেখানে প্রবেশ করতে হয়, প্রবেশপথটিও যথেষ্ট সুরক্ষিত। সেখানে সার্বক্ষণিক দেখভাল ও নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে লোকজন।

অপরদিকে, সিরাজউদ্দৌলা ও তার নানা আলীবর্দি খাঁসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের সমাধিস্থলটি অনেকটাই অবহেলিত ও অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। দেখভালের কোনো লোকজন না থাকায় সেখানকার প্রবেশের দরজা-জানালা ভেঙে গেছে। দেয়ালের পলেস্তার খসে শ্রীহীন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

 

এছাড়া সিরাজউদ্দৌলার সমাধি দেখতে যাওয়ার জন্য ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থাও নেই। এখনও নৌকায় ভাগীরথী নদী পার হয়ে সেখানে যেতে হয়। তবে সিরাজের সমাধিস্থলে প্রবেশে কোনো টিকিট কাটতে হয় না। সেখানকার গাইডদের ৪০ থেকে ১০০ টাকা দিয়েই বিস্তারিত ইতিহাস জানতে পারেন দর্শনার্থীরা।

মুর্শিদাবাদের জাফরাগঞ্জে সিরাজউদ্দৌলাকে যে স্থানে হত্যা করা হয়, সে স্থানটিও রয়েছে বেহাল অবস্থায়। সেখানকার প্রধান গেটটি পড়ে রয়েছে অযত্ন আর অবহেলায়। নেই কোনো তত্ত্বাবধায়ক বা নিরাপত্তারক্ষী। শুধু একটি সাইনবোর্ডে প্রবেশ নিষেধ লিখেই দায়িত্ব পালন করেছে কর্তৃপক্ষ।