রোববার   ২০ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৬ ১৪৩২   ২১ শাওয়াল ১৪৪৬

‌‘স্মার্টফোন ও ই-কমার্সের ভ্যাট প্রত্যাহার দাবি যৌক্তিক’

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১১:৩৫ এএম, ২৪ জুন ২০১৯ সোমবার

 

প্রস্তাবিত বাজেটে ই-বাণিজ্যে সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। আবার ইন্টারনেট ব্যবহার এবং ই-বাণিজ্য বৃদ্ধিতে শীর্ষ মাধ্যম আমদানিকৃত স্মার্টফোনে ১০ শতাংশের পরিবর্তে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। বর্ধিত এ ভ্যাট এবং শুল্ক ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে বলে মনে করে বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ)।

রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের অডিটোরিয়ামে বিআইজেএফ আয়োজিত ‘২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট : তথ্যপ্রযুক্তি খাত নিয়ে পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ মন্তব্য করেন।

সভায় বলা হয়, স্মার্টফোনে ১০ শতাংশের পরিবর্তে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। বর্ধিত এ ভ্যাট এবং শুল্ক ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠনের দাবিকে যৌক্তিক মনে করে ই-বাণিজ্যে ভ্যাট প্রত্যাহার এবং আমদানিকৃত স্মার্টফোনে শুল্ক আগামী দুই বছরের জন্য ১৫ শতাংশ করা যেতে পারে। ই-কমার্স, রাইড শেয়ারিং, কম্পিউটার ও হার্ডওয়্যার খাতে দেশীয় উদ্যোক্তাদের সুরক্ষায় বাজেটে সুস্পষ্ট ঘোষণা থাকা প্রয়োজন বলেও মনে করে সংগঠনটি।

 

প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ সালের বাজেটে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ১৫ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা বরাদ্দের সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে আইসিটি বিভাগের জন্য বরাদ্দ হয়েছে এক হাজার ৯২০ কোটি টাকা। যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। যেখানে ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার বছর ২০১০ সালে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ ছিল ৫০০ কোটি টাকারও কম।

বিআইজেএফ মনে করে, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এ বরাদ্দ ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। তবে এ খাতের উন্নয়নে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

বিআইজেএফ সভাপতি মোজাহেদুল ইসলাম ঢেউয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাধারণ সম্পাদক হাসান জাকির। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিআইজেএফ সহ-সভাপতি নাজনীন নাহার, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সোহাগ, সাংগঠনিক সম্পাদক হাছিব রহমান, কোষাধ্যক্ষ এনামুল করিম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জান্নাতুল ইসলাম রাহাদ এবং নির্বাহী সদস্য মিজানুর রহমান সোহেল ও রাহিতুল ইসলাম রুয়েল।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ২০১০ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে তথ্যপ্রযুক্তি অগ্রাধিকার প্রদানের মাধ্যমে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আইসিটির চারটি বিষয়কে অগ্রাধিকার ক্ষেত্র হিসেবে ধরা হয়। এগুলো হচ্ছে সরকারের দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতে ই-গভর্নেন্স; মানবসম্পদ উন্নয়নে ই-শিক্ষা; দেশীয়/বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে ই-বাণিজ্য এবং সরকারের সেবাসমূহ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ই-সেবা।

 

বিআইজেফের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, বাজেটকে কর্মসংস্থানমুখী করার যে উদ্যোগগুলোর কথা বলা হয়েছে তা যথাযথভাবে পালন করা হোক। ২০২১ সাল নাগাদ আইসিটি খাতে ২০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হওয়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানমুখী উদ্যোগ নিতে হবে। উদ্ভাবন ও গবেষণা ছাড়া জাতি সামনে এগোতে পারে না। এবারের বাজেটে উদ্ভাবন ও গবেষণার ওপর জোর দেয়ার কথাও বলা হয়েছে। গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার।

এবারের বাজেটে ব্লকচেইনের মতো নতুন প্রযুক্তিতে মনোযোগ দেয়ার কথা বলা হয়েছে। নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের এ উদ্যোগ ইতিবাচক। প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট সেবা সুলভ মূল্যে পৌঁছাতে হবে। সাশ্রয়ী দামে মোবাইল ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে প্রয়োজনে এ খাতে ভর্তুকি দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সাইবার নিরাপত্তায় ক্ষেত্রে আরো যুগোপযোগী ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।