রিফাত হত্যায় ১৩ জন শনাক্ত, দেশত্যাগ ঠেকাতে অ্যালার্ট জারি
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০২:৩২ পিএম, ২৮ জুন ২০১৯ শুক্রবার
বরগুনায় প্রকাশ্যে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত ১৩ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন, আসামিদের কেউ যাতে দেশত্যাগ করতে না পারে, সেজন্য দেশের সব বিমানবন্দর, স্থলবন্দর ও নৌ-বন্দরে অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। রিফাত হত্যাকাণ্ডে এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
শুক্রবার দুপুরে পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ইতিহাস ও ঐতিহাসিক ভবন সংরক্ষণ এবং পরিবেশ উন্নয়ন কাজের শুভ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। তারা যে দলেরই হোক, এটা নিশ্চিত থাকেন সবাই ধরা পড়বে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের পুলিশ এবং গোয়েন্দা সসদস্যরা অত্যন্ত দক্ষ। আমাদের নজর এড়িয়ে কেউ পার পায়নি। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট, তাদের অধিকাংশই ধরা পড়েছে। বাকি যে কয়েকজন আছে তারা অচিরেই ধরা পড়বে।
মন্ত্রী আরো বলেন, ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তখনো বলেছি- আমরা কাউকে ছাড় দেব না। সেখানে দেখেছেন আমাদের দলের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত তাদেরকেও আমরা ছাড় দেয়নি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সুশাসন সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছেন। তাই আপনারা যারা সন্দেহ করছেন কেউ কেউ দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলে ছাড় পাবে তা ভুল ধারণা।
পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ইতিহাস ও ঐতিহাসিক ভবন সংরক্ষণ এবং পরিবেশ উন্নয়ন কাজের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। ছবি- ডেইলি বাংলাদেশ
রিফাত হত্যার আসামিরা যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে, সেজন্য আগের দিনই সীমান্তে সতর্কতা জারির নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) সোহেল রানা শুক্রবার সেই নির্দেশনা জারির কথা জানান।
তিনি বলেন, ঘটনাটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতার তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এআইজি সোহেল রানা বলেন, বরগুনা জেলা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই, সিআইডি, র্যাব এবং ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিট আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে কাজ করছে। আশা করছি, সব আসামিকে শিগগিরিই আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
সকালে পুলিশ সদরদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আসামিরা যেন দেশত্যাগ করতে না পারে, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সব বিমানবন্দর, স্থলবন্দর ও নৌ-বন্দরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আসামিদের বিষয়ে কারও কাছে কোনো তথ্য থাকলে তা পুলিশকে জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে সদর দফতরের পক্ষ থেকে।
গত বুধবার সকালে স্ত্রী আয়েশাকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান রিফাত। কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে নয়ন, রিফাত ফরাজীসহ দুই যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে তারা। রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুতেই হামলাকারীদের থামানো যায়নি। তারা রিফাত শরীফকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন রিফাত শরীফকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়।