প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর: রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনাসহ ৮ চুক্তি
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৮:২৬ এএম, ২৯ জুন ২০১৯ শনিবার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি আটটি চুক্তি সই হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন।
প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ দিনের চীন সফর উপলক্ষে শুক্রবার (২৮ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যকার কৌশলগত সম্পর্কের আলোকে দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে চীনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন।
শেখ হাসিনা চীনের ডালিয়ানে ২ জুলাই অনুষ্ঠেয় ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের গ্রীষ্মকালীন সভায় অংশগ্রহণ করবেন। ৪ জুলাই চীনের প্রধানমন্ত্রী লি চেচিয়াংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে এবং ৫ জুলাই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের চেয়ারম্যান লি ঝ্যাংসু’র সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠক রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারকে মদত দিচ্ছে চীন— এটা আসলে বিশ্বাস করি না। চীনের একটি অবস্থান আছে। তারা আমাদের সাহায্য করছে এবং আমাদের সমর্থন দিয়েছে। চীন বারবার বলেছে— রোহিঙ্গারা তাদের দেশে ফেরত যাক। চীন আরো বলেছে, দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ভিত্তিতে সমস্যার সমাধান করুন। আমরা সেই পথেই আছি। তাদের সঙ্গে আমাদের কোনও ঝগড়া নেই। নিরাপত্তা পরিষদে চীনের ভেটোর বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের অন্য কোনও উদ্দেশ্য থাকতে পারে।
চীনকে কী বার্তা দেবে বাংলাদেশ, জানতে চাইলে আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা বলবো এরা (রোহিঙ্গারা) মিয়ানমারের লোক এবং এই বিরাট জনগোষ্ঠী এখানে যদি অনেক দিন থাকে, তবে একটি অনিশ্চয়তা তৈরি হবে এবং গোটা অঞ্চলের উন্নয়ন ব্যাহত হতে পারে।
বিগত দিনগুলোতে যারা আমাদের বিরোধিতা করেছিল তারা অনেকে আমাদের পক্ষে চলে এসেছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন বা রাশিয়া এখন আমাদের পক্ষে জোরালো কথা বলছে। এমনকি ভারতও।
বিআরআই’র বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা দেশের স্বার্থে কাজ করি এবং ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি অনুসরণ করি। সবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো। কারও সঙ্গে শত্রুতা নেই। আমরা বেল্ট অ্যান্ড রোডে প্রথমেই যোগদান করেছি। এটাতে আমাদের কোনও অসুবিধা হয়নি।
ড. মোমেন বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ৮টি বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ও সমাঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে। এগুলো হচ্ছে, ‘এক্সপানসন অ্যান্ড স্ট্রেনদিং অব পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক আন্ডার ডিপিডিসি এরিয়া প্রজেক্ট’ শীর্ষক প্রকল্পে সরকারি কনসেশনাল ঋণ চুক্তি, ‘এক্সপানসন অ্যান্ড স্ট্রেনদিং অব পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক আন্ডার ডিপিডিসি এরিয়া প্রজেক্ট,’ শীর্ষক প্রকল্পে প্রিফেরেনসিয়াল বায়ারস ক্রেডিট ঋণ চুক্তি, ‘পাওয়ার গ্রিড নেটওয়ার্ক স্ট্রেনদেনিং প্রজেক্ট আন্ডার পিজিসিবি’ শীর্ষক প্রজেক্টে ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি, দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক এবং কারিগরি সহযোগিতা বিষয়ে চুক্তি, বিনিয়োগ-সংক্রান্ত সহযোগিতামূলক ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনে সমাঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, ইয়ালু ঝ্যাংবু-ব্রক্ষ্মপুত্র নদীর জলবিষয়ক তথ্য বিনিময়ে সমাঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং সাংস্কৃতিক ও পর্যটন সংক্রান্ত বিষয়ে সমাঝোতা স্বারক স্বাক্ষর।