বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইসিসি’র তদন্তের ঘোষণা প্রত্যাখ্যান মিয়ানমার সেনাবাহিনীর

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০১:৪৯ পিএম, ২৯ জুন ২০১৯ শনিবার

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিপীড়নের ঘটনা তদন্তে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। একইসঙ্গে, জড়িতদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সরকার ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করছে বলেও দাবি করেছেন দেশটির সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জ মিন তুন।

রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের বিতাড়ন ও তাদের হত্যা নির্যাতনে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইসিসি’র পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করার ঘোষণার একদিনের মাথায় তা প্রত্যাখ্যান করল মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

বার্তা সংস্থা এএফপিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জ মিন তুন বলেন, রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিষয়ে ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মিয়ানমার সরকার। আর এটিকে আইসিসি'র সম্মান জানানো উচিৎ। রোহিঙ্গাদের ওপর যারা নির্যাতন চালিয়েছিল মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করছে বলেও দাবি করেন তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গা নিধন শুরুর পর বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা। এসময় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ধর্ষন ও গণহত্যার অভিযোগ উঠে। গণহত্যা প্রকাশের জন্য রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া ১০ রোহিঙ্গা হত্যায় শাস্তি পাওয়া সাতজন সৈনিককেও মুক্তি দেয়া হয়েছিল।

ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব জুরিস্টের পক্ষে এশিয়া প্যাসিফিক ডিরেক্টর ফ্রেডেরিক রাভস্কি বলেন, আইসিসির হস্তক্ষেপ "সম্পূর্ণ উপযুক্ত" ছিল। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের গণহত্যায় আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ন্যায়বিচার প্রদানের ক্ষেত্রে মিয়ানমার সেনাবাহিনী সম্পূর্ণরূপে অনিচ্ছুক।

এদিকে ২০১৭ সালে রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যা ও নির্যাতনের জন্য মিয়ানমারকে যে কোন মূল্যে জবাবদিহিতার আওতায় আনার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার বেনোয়া প্রিফতেন। বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, মিয়ানমারকে বিচারের আওতায় আনতে কাজ করে যাবে কানাডা।

বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডীয় হাইকমিশনার বেনোয়া প্রিফতেন বলেন, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর যে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে তা ভুলে গেলে চলবেনা। আমরা যদি এটি ভুলে যাই তাহলে অন্য কোথাও আবার এ ধরনের ঘটনা ঘটবে। মিয়ানমার এ ধরনের অপকর্ম করে পার পেয়ে গেলে সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য এটি মোটেই মঙ্গলজনক হবে না।

এদিকে, রোহিঙ্গা গণহত্যা ও জাতিসংঘ সনদ লঙ্ঘনের অভিযোগে মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে বিচারের মুখোমুখি করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আদালতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কানাডার ৩৪ সিনেটর ও ১শ'র বেশি মানবাধিকার সংগঠন। কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের কাছে পাঠানো যৌথ চিঠিতে, রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিষয়ে আইসিসি যাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয় সে জন্য কানাডাকে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।