কাজের গতি বেড়েছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৭:৩৭ এএম, ৩০ জুন ২০১৯ রোববার
প্রথমবারই এমপি হয়ে মন্ত্রী হন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। মন্ত্রী হয়েই নিয়েছেন নানা উদ্যোগ। ফলে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি অনেক বেড়েছে। বর্তমানে অন্যান্য অনেক মন্ত্রণালয়ের চেয়ে তুলনামূলক এ মন্ত্রণালয়টিতে কাজের গতি অনেক বেশি।
ভবন নির্মাণের জন্য আগে নকশা পাশ করাতে গেলে ১৬টি ধাপ অতিক্রম করতে হত। এতে করে সময় লাগতো বেশি। এছাড়া দুর্ভোগ ও হয়রানির নানা অভিযোগও ছিল। এরই মধ্যে ১৬টি ধাপের ১২টি ধাপই বাতিল করে দিয়েছেন মন্ত্রী। বর্তমানে নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে অতিক্রম করতে হয় মাত্র ৪টি প্রয়োজনীয় ধাপ।
এদিকে, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র ও নির্মাণ অনুমোদন কার্যক্রম এখন থেকে অনলাইনেই করা যাচ্ছে। স্বচ্ছতা আনার ভিত্তি হিসেবে গত ২ মে রাজউকে শুরু হয় দ্রুত সেবা পাওয়ার এ যুগান্তকারী পরিবর্তন। ফলে টেবিলে টেবিলে ধরনা দিতে হচ্ছে না কাউকে। বাসায় কিংবা যেকোনো জায়গায় বসে সহজেই অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে নকশা অনুমোদনের ছাড়পত্র।
সম্প্রতি বনানীর এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মন্ত্রী। বিভিন্ন ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে নানা লুকোচুরি হলেও প্রকাশ্যেই এ প্রতিবেদন ঘোষণা করেন শ ম রেজাউল করিম।
এ তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, এফআর টাওয়ারের নকশা অনুমোদনে বিধি লঙ্ঘন ও নির্মাণের ক্ষেত্রে ত্রুটি-বিচ্যুতি ছিল। শুধু তাই নয়, অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে ভবনটির ১৯ থেকে ২৩ তলা। আর এসব অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন খাদেমসহ অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী।
এজন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আলাদা মামলা করা হবে। আর ১৬ থেকে ১৮ তলা পর্যন্ত অনুমোদনের ক্ষেত্রে আইনি ত্রুটি থাকায় সংশ্লিষ্টদের শাস্তির আওতায় আনার ঘোষণাও দেন মন্ত্রী।
এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেদনে যাদের নাম এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এফআর টাওয়ারের অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িত রাজউকের কর্মকর্তাসহ যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আমরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখব। যারা অবসরে গেছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রযোজ্য প্রক্রিয়ায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া যারা এখনো কর্মরত আছেন তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে পরিপূর্ণভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যাতে জানতে পারে তদন্তের নামে লুকোচুরি করা হয় না। এজন্য সত্যকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বা রাজউক চেপে রাখেনি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, সেটা শুধু মুখে নয়, কথায় কথায় নয়- কাজে প্রমাণ করছি।
এদিকে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাজউকের ২৪টি পরিদর্শন দল বহুতল ভবন পরিদর্শন করে ১ হাজার ৮১৮টি ভবনে অনিয়ম পেয়েছে। এসব ভবন মালিকেরা অনেকেই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রভাবশালী বলে জানা গেছে। প্রতিবেদন সংগ্রহ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে রাজউককে নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী।
এছাড়া অনুমোদিত নকশা ও বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ফাঁকা জায়গা, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ও গ্যারেজ ছাড়া কোনো ভবন নির্মাণ করতে না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন গণপূর্তমন্ত্রী। সব মিলিয়ে শ ম রেজাউল করিমের নানা উদ্যোগে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি বেড়েছে।