নিন্দুকেরা আমার বয়সের ভুল তথ্য প্রচার করছে: জয়া
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ১১:০৯ এএম, ১ জুলাই ২০১৯ সোমবার
জয়া আহসানের বয়স কত? এই প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায় হারহামেশা। আজ এই অভিনেত্রীর জন্মদিন হওয়ার কারণে অনেকেই প্রশ্ন করছেন, কত বছরে পা দিলেন জয়া? আবার অনেকেই উইকিপিড়িয়া ও গুগলের তথ্য টেনে বলছে, ৪৭ বছরে পা দিয়েছেন তিনি।
তবে জয়ার মতে, শুধু জন্মদিনই নয়, তার পারিবারিক তথ্যও ভুলভাবে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপস্থাপিত হচ্ছে।
কয়েক মাস আগে জয়া ফেসবুকে লিখেন, অনেকেই বিভিন্ন পত্রপত্রিকা/উইকিপিডিয়ার তথ্যসূত্র টেনে আমার বয়স নিয়ে বেশ চর্চা করছেন। বলা হচ্ছে, আমার বয়স নাকি ৪৬! গুজব-গুঞ্জন আমি বরাবরই খাবারের লবণের মতো উপভোগ করেছি। দু-একজন সমবয়সী কিংবা আমার চেয়ে বয়সে বড় শ্রদ্ধাভাজন কয়েকজন অভিনেত্রী নিজেদের অধিকার মনে করে গণমাধ্যমে আমার বয়সের ভুল তথ্য নিয়ে চর্চা করেছেন—বিষয়টি মজার। এত দিন উপভোগ করেছি, তবে খুব সম্ভবত আমার চুপ থাকাটায় অনেকে ‘মৌনতা সম্মতির লক্ষণ’ হিসেবে ধরে নিয়েছেন। নিন্দুকেরাও আমার বয়সের ভুল তথ্য প্রচার করছেন, আনন্দ পাচ্ছেন!
অভিনয়ের সঙ্গে বয়সকে গুলিয়ে ফেলা প্রসঙ্গে জয়া আহসান বলেন, একজন শিল্পীর প্রকৃত পরিচয় হওয়া উচিত তার কাজে। ৪৬ কিংবা ৫৬ কিংবা তার চেয়েও বেশি বয়স হলেই অভিনেত্রীরা কাজের অযোগ্য কিংবা তারুণ্যদীপ্ত চরিত্রে অভিনয় করতে পারবেন না—এমন ধারণা বিশ্বের কোনো চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিই পোষণ করেন না। তাই ব্যক্তি জয়া আহসানের যে বয়স, তা নিয়ে আমি এতটুকু বিচলিত নই।
আজ ১ জুলাই, তার জন্মদিন। এ দিনে ভক্ত, স্বজন ও বন্ধুবান্ধব সবার শুভেচ্ছায় সিক্ত এই অভিনেত্রী। নিজের বিভিন্ন তথ্য নিয়ে জয়া আহসান বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে, আমার আরো দুই বোন ও এক ভাই রয়েছে। প্রকৃত তথ্য হচ্ছে আমরা দুই বোন ও এক ভাই। বলা হয়, আমার বাড়ি ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ায়, কিন্তু প্রকৃত তথ্য হচ্ছে গোপালগঞ্জ। শুধু তাই নয়, আমার বাবার নামও লেখা হয় আলী আহসান সিডনী। প্রকৃত তথ্য- অভিনেতা জিতু আহসানের বাবা প্রখ্যাত অভিনেতা সৈয়দ আলী আহসান সিডনী। আমার বাবা ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এ এস মাসউদ।
একসময় ছোটপর্দায় ছিল জয়ার উপস্থিতি। নাটক ও বিজ্ঞাপনের মডেল হয়ে জয় করে নিয়েছিলেন দর্শকের হৃদয়। ধীরে ধীরে নিজের ক্যারিয়ার পাকাপোক্ত করেছেন তিনি। পেয়েছেন সাফল্য। অনেকেরই হয়তো অজানা, অভিনয় শুরুর আগে জয়া নাচ ও গানের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি ছবি আঁকা শিখেছিলেন।
জয়া আহসানের প্রথম সিনেমা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘ব্যাচেলর’। এটি মুক্তি পায় ২০০৪ সালে। এরপর বড় পর্দায় দীর্ঘ বিরতি দিয়ে নূরল আলম আতিক পরিচালিত ‘ডুবসাঁতার’ ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। এরপর নাসির উদ্দীন ইউসুফ পরিচালিত ‘গেরিলা’ ছবিতে অভিনয় করে নতুন করে সবার নজর কাড়েন জয়া। এই ছবিতে অভিনয় করে প্রথমবারের মতো পান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তার অভিনীত ‘বিলকিস’ চরিত্রটি হয় ব্যাপক প্রশংসিত। এছাড়া ‘বিসর্জন’ সিনেমাতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে জয়া আহসান ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।
জয়া আহসানের প্রথম প্রযোজনা ‘দেবী’। এটি মুক্তি পেয়েছিল গত বছরের ১৯ অক্টোবর। হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন অনম বিশ্বাস। ১০৩ মিনিট দৈর্ঘ্যের ছবিটিতে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, জয়া আহসান, শবনম ফারিয়া, ইরেশ যাকের, অনিমেষ আইচ প্রমুখ। দ্বিতীয় চলচ্চিত্র হতে যাচ্ছে ‘ফুরুৎ’। ছবিটি নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে।
সম্প্রতি জয়া আহসান চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ‘অলাতচক্র’ চলচ্চিত্রে। নন্দিত সাহিত্যিক আহমদ ছফার বিখ্যাত উপন্যাস থেকে নির্মিত এই সিনেমায় তায়েবা চরিত্রে অভিনয় করবেন তিনি। ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাসটির পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করছেন হাবিবুর রহমান। এটি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ তথা বাংলা ভাষায় নির্মিত প্রথম থ্রিডি ছবি। এছাড়া সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে অতনু ঘোষের 'বিনি সুতোয়' ছবির ফার্স্ট লুক পোস্টার, যেখানে আছেন ছবির দুই প্রধান পাত্র-পাত্রী ঋত্বিক চক্রবর্তী ও জয়া আহসান। ছবিতে শাড়ি, চশমা, টিপে শান্ত বাঙালি নারীর চেহারায় দেখা গেছে বাংলাদেশি অভিনেত্রীকে। তার প্রায় মেকআপহীন চেহারা দারুণ পছন্দ করেছে দর্শকরা।
জয়া আহসানের মুক্তিপ্রাপ্ত সর্বশেষ সিনেমা ‘কণ্ঠ’। গত ১০ মে কলকাতার প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি মুক্তি পায়। এতে জয়া একজন স্পিচ থেরাপিস্টের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। ছবির অন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন শিবপ্রসাদ মুখার্জী ও পাওলি দাম। সেখানকার দর্শকের কাছে জয়ার অভিনয় প্রশংসিত হয়। শুধু তাই নয়, এই সিনেমার ট্রেলার দেখে বলিউড অভিনেতা ঋষি কাপুর টুইটারে লিখেছেন, ‘অভিভূত!’