অর্ধশতাধিক দেশে মাছ রফতানি করছে বাংলাদেশ
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ১২:২১ পিএম, ১ জুলাই ২০১৯ সোমবার
পৃথিবীর অর্ধশতাধিক দেশে বাংলাদেশ মৎস্য ও মৎস্যজাতপণ্য রফতানি করছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, রাশিয়া ইত্যাদি বাংলাদেশের মৎস্য ও মৎস্যপণ্যের প্রধান আমদানিকারক দেশ। ২০১৮-২০১৯ সালের মে পর্যন্ত বাংলাদেশ হতে বিভিন্ন দেশে প্রায় ৬৮ হাজার ৬৫৫ মেট্টিক টন মৎস্য ও মৎস্য পণ্য রফতানি করে প্রায় তিন হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা রাজস্ব অর্জিত হয়েছে। এর মধ্যে ৩১ হাজার ১৫৮ মেট্টিক টন চিংড়ি রফতানি করে ২ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা এবং ৩৫ হাজার ১৪৮ মেট্টিক টন ফিনফিস রফতানি করে ৮৯৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা রাজস্ব অর্জিত হয়েছে।
রোববার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে কুড়িগ্রাম-১ এর এমপি মোঃ আছলাম হোসেন সওদাগরের প্রশ্নের জবাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোঃ আশরাফ আলী খান খসরু এসব তথ্য জানান।
ফেণী-২ এর এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রশ্নের জবাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোঃ আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, বাংলাদেশ আজ মৎস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মাছের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টনের বিপরীতে মোট উৎপাদন হয়েছে ৪২ লাখ ৭৭ হাজার মেট্টিক টন। দেশকে খাধ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করবার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং বাস্তবায়িত হচ্ছে। দেশের জিডিপির তিন দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপি’র প্রায় এক-চতুর্থাংশের বেশি (২৫.৩০%) মৎস্যখাতের অবদান। আর পরিসংখ্যান ব্যুরো হিসাবে দৈনিক মাথাপিছু ৬০ গ্রাম মাছ চাহিদা বিপরীতে গ্রহণের পরিমাণ ৬২.৫৮ শতাংশ। ফলে মাথাপিছু মাছ চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশ মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
ভোলা-২ এর এমপি আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোঃ আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, দেশের মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মৎস্য অধিদফতর এবং বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১৪টি উন্নয়ন প্রকল্প ও রাজস্ব খাতের আওতায় চলতি বছরের মে পর্যন্ত মোট ২২৮ মেট্টিন টন এবং উন্নয়ন প্রকল্প হতে মোট ৬০ মেট্টিক টন পোনামাছ অবমুক্ত করা হয়েছে। মা ইলিশ রক্ষায় প্রধান প্রজনন মৌসুমে মোট ২২ দিন প্রজনন এলাকাসহ সারা দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, বিপণন ও পরিবহন বন্ধে জনসচেতনা সৃষ্টি এবং আইন বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
নাটোর-২ এর এমপিদের প্রশ্নের জবাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোঃ আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, সারাদেশের জলমহালসমূহ ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন। জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০০৯ অনুযায়ী ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব জেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা ও উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির। গত ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত ১৬ লাখ ২০ হাজার মৎস্যজীবী-জেলের নিবন্ধন ও ডাটাবেইজ প্রস্তুত এবং ১৪ লাখ ২০ হাজার জেলের মাঝে পরিচয়পত্র বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।
আর ১৯৬-৯৭ অর্থবছর ৩৫ কোটি ১২ লাখ ২৪ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে এবং ক্রমপুঞ্জিতভাবে ২৪ কোটি ৯৭ লাখ ৮৯ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম-৪ আসনের এমপি দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত ৯ বছরে গভীর সমুদ্র হতে ২৯ কোটি ৬৭ লাখ ২৬৭ মে.টন মঃস্য আহরিত হয়েছে। তিনি জানান, বাংলাদেশ আজ মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্কার প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য আহরণে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে।