কনজেনিটাল অ্যাড্রেনাল হাইপারপ্লাসিয়া
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ১২:২১ পিএম, ২ জুলাই ২০১৯ মঙ্গলবার
কনজেনিটাল অ্যাড্রেনাল হাইপারপ্লাসিয়া একটি জীনগত রোগ, যাতে কর্টিসোল (অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হরমোন) তৈরির এনজাইমগুলোর কোনো একটির অনুপস্থিতি থাকে।
ফলশ্রুতিতে এনজাইম তৈরির চাহিদা বেড়ে যায় এবং অস্বাভাবিক হরমোন তৈরি হয়। এটি মোটেও বিরল রোগ নয়। আমেরিকায় প্রতি দশ থেকে পনর হাজার মানুষের মধ্যে একজন ক্লাসিক্যাল কনজেনিটাল অ্যাড্রেনাল হাইপারপ্লাসিয়ায় আক্রান্ত। প্রতি ১০০ থেকে ২০০ ক্লাসিক্যাল কনজেনিটাল অ্যাড্রেনাল হাইপারপ্লাসিয়ার ক্ষেত্রে একজন ননক্লাসিক্যাল রোগী থাকতে পারে।
কনজেনিটাল অ্যাড্রেনাল হাইপারপ্লাসিয়ার লক্ষণ নির্ভর করে কোনো এনজাইমটি ঘাটতি ও এর ফলে কোন হরমোনটি বেশি তৈরি হচ্ছে তার ওপরে। এ উপস্বর্গ মানার মধ্যে বালিকাদের পুরুষালি যৌনাঙ্গ বা অস্বাভাবিক যৌনাঙ্গসহ পুরুষ যৌন হরমোন আধিক্যের লক্ষণ, অসম্পন্ন পুরুষালি অঙ্গ এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে যৌনাঙ্গের অস্বাভাবিকতা বা মহিলা যৌন হরমোনের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।
বালক বালিকা উভয়ের ক্ষেত্রেই শরীর থেকে লবণ বেরিয়ে যাওয়া জনিত কারণে দূর্বলতা দেখা দেয়। যৌনাঙ্গের অস্বাভাবিকতা বালিকাদের ক্ষেত্রে বেশি প্রকট হয়। কিন্তু বালকদের ক্ষেত্রেও তা থাকে। কারো কারো ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধিকাল বিলম্বিত হয়, উচ্চ রক্তচাপও কারো কারো থাকে। কনজেনিটাল অ্যাড্রেনাল হাইপারপ্লাসিয়ায় আক্রান্ত বালক বা বালিকার দৈহিক লক্ষণ কি হবে, তা প্রধানত নির্ভর করে এ রোগটির ধরণের ওপর।
জন্মের সময়ই এর লক্ষণ থাকে। যদি ভালোভাবে দৃষ্টি দেওয়া যায়, তাহলে এক, দুই বা তিন দিনের নবজাতকের দেহে এ রোগের লক্ষণ পাওয়া যেতে পারে। প্রথমত: যৌনাঙ্গের আকার আকৃতি সম্পর্কে একটু ভালোভাবে নজর দিতে হবে। ক্লাসিক্যাল কনজেনিটাল অ্যাড্রেনাল হাইপারপ্লাসিয়া হলে অতি দ্রুত লক্ষণ দেখা দিবে। অর্থাৎ যে কোনো বয়সেই কিছু শারীরিক লক্ষণ থাকতে পারে। কিন্তু ননক্লাসিক্যাল কনজেনিটাল অ্যাড্রেনাল হাইপারপ্লাসিয়া হলে লক্ষণ দেখা দিবে কয়েক বছর বয়স হবার পর।
কনজেনিটাল অ্যাড্রেনাল হাইপারপ্লাসিয়ার রোগীদের একই সঙ্গে আরো কিছু হরমোন জনিত রোগ থাকতে পারে। যার লক্ষণ একই সঙ্গে দেখা দিবে। এর মাঝে আছে অ্যাড্রেনাল ইনসাফিসিয়েন্সি টাইপ ১ ডায়াবেটিস। হাইপারথায়রয়েডিজম এসএলই ইত্যাদি।
শারীরিক লক্ষণ দেখা দেবার পর যদি বাবা-মা দ্রুত হরমোন বিশেষজ্ঞের সরনাপন্ন হন, তবে আশাব্যাঞ্জক ফলাফল পাওয়া যেতে পারে। চিকিৎসক রোগী বা রোগীটির শারীরিক কাঠামো পরীক্ষা নিরীক্ষার পর কিছু ল্যাবরেটরি পরীক্ষার সাহায্য নিয়ে থাকেন। এর মধ্যে জেনেটিক টেস্ট, হরমোনের পরীক্ষা, পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম, রক্তে লবণের পরীক্ষা ইত্যাদি থাকে।
ক্লাসিক্যাল অ্যাড্রেনাল হাহপারপ্লাসিয়া যেহেতু অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঘটে থাকে, তাই এ পরীক্ষাটিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে এটিকে সকল শিশুর জন্য স্ক্রিনিং টেস্ট হিসাবে করতে বলা হয়েছে। এ রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে স্টেরয়েড হরমোন ব্যবহার করা হয়। যেটি নির্দিষ্ট পরিমাণে নির্দিষ্ট সময়ে ব্যবহার করা উচিত। সকল রোগীকে নিয়মিত ফলোআপ ও মনিটরিং এর আওতায় রাখতে হবে।