শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১   ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় আদা চা

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০১:০৬ পিএম, ২ জুলাই ২০১৯ মঙ্গলবার

আদা মূলত এশিয়া অঞ্চলে জন্মানো একটি রাইজোম জাতীয় উদ্ভিদ। আদা গাছের মূলে থাকা বিশেষ তেল বিভিন্ন চিকিৎসার কাজে ব্যবহার হচ্ছে। শুধু তাই নয়, আধুনিক যুগের ডাক্তার, গবেষক, বিজ্ঞানীদের দ্বারা এর ঔষধি গুণাগুণ প্রমাণিত হয়েছে। আদার সক্রিয় উপাদানগুলোর মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো জিনজারোলস এবং শোগাওলস। চা তৈরির সময় আদা ব্যবহার করলে এ শক্তিশালী উপাদান দুইটি চায়ের সাথে মিশে যায়। তাই আদা চায়ের পুষ্টি গুণাগুন আপনার স্বাস্থ্যে আনতে পারে নাটকীয় পরিবর্তন! আসুন জেনে নেই আদা চা পানের স্বাস্থ্য উপকারিতা-

বমি বমি ভাব দূর হয়: বমি বমি ভাব দূর করতে আদা একটি অপ্রতিদ্বন্দী উপাদান! পাশাপাশি গর্ভবতী মহিলাদের মর্নিং সিকনেস উপশমেও এটি বেশ ভালো কাজ করে। ডাক্তাররা এজন্য প্রায়ই গর্ভবতী মহিলাদের আদা গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কারণ গর্ভাবস্থায় এটি খাওয়া নিরাপদ এবং কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। অন্যদিকে কেমোথেরাপীর রোগীদেরও একটি প্রধান সমস্যা হলো বমি, তাদের জন্যও আদা বেশ উপকারে আসে বলে ডাক্তাররা জানান। চায়ের মাধ্যমে সহজেই এসব রোগী আদার রস গ্রহণ করতে পারেন এবং পেতে পারেন যন্ত্রণা থেকে মুক্তি। অনেকেরই সড়কপথে ভ্রমণের সময় বমি হয়ে থাকে। তাদের জন্যও আদা চা এনে দিতে পারে স্বস্তি!

ব্যথা থেকে মুক্তি: শরীরচর্চার পর অনেকেই শরীরের বিভিন্ন মাংসপেশীতে ব্যথা অনুভব করেন। এখন থেকে শারীরিক কসরৎ হোক নির্ভাবনায়, কারণ আদায় থাকা প্রদাহ-নিরোধী উপাদান মাসল পেইন থেকে দেয় দীর্ঘ সময়ের জন্য উপশম। এই রাইজোমটি পেইনকিলার হিসেবেও দারুণ কাজ করে। এজন্য প্রতিদিন আদা খাওয়া জরুরি। তাই দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় আদা চা অন্ত্রভুক্ত করে নিলে নিশ্চিন্তে মাসল পেইনের যন্ত্রনা থেকে পাওয়া যায় স্থায়ী মুক্তি!

 

প্রদাহ নিরোধে: আদা একটি শক্তিশালী এন্টি-ইনফ্লামেটরি হিসেবে পরিচিত। আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ, আলজেইমারসহ বিভিন্ন জটিল রোগের সাথে জড়িত হলো প্রদাহ। দেহে প্রবেশকারী কোনো জীবাণুর সংক্রমণের বিরুদ্ধে আমাদের শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাকে সদা সক্রিয়। কিন্তু কোনো সংক্রমণের উপস্থিতি না থাকা সত্ত্বেও যদি আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় থাকে তবেই ঘটে বিপত্তি। দেহের নিজস্ব ও প্রয়োজনীয় টিস্যু তখন প্রতিরক্ষাতন্ত্র দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখনই শুরু হয় প্রদাহ। কিছু কিছু খাবার যেমন- ট্রান্স ফ্যাট, সয়াবিন তেল, রেড মিট ইত্যাদি প্রদাহের যন্ত্রণা আরো বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু আদা এর বিপরীত। প্রদাহের বিরুদ্ধে আদা বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে। তাই প্রদাহ জনিত জটিল রোগব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে খাদ্যাভ্যাসে আদা চা রাখতেই পারেন।

রক্তে শর্করার পরিমাণ কমায়: ডায়বেটিস আক্রান্ত রোগী ও যাদের ডায়বেটিস হবার সম্ভাবনা রয়েছে তাদের জন্য আদা চা হতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক ওষুধ। গবেষণায় দেখা যায় আদা রক্তে ১২ শতাংশ পর্যন্ত ব্লাড শ্যুগার কমিয়ে দিতে সক্ষম!

স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়: রক্ত পাতলা করতে আদার রয়েছে বিশেষ ভূমিকা। তাই রক্তনালীতে অযাচিত ক্লট জমতে বাধা দেয় এটি। যার ফলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বহুলাংশে লাঘব হয়।

 

পিরিয়ড ব্যাথা কমাতে: পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে অধিকাংশ মহিলা তলপেট ও কোমড়ে প্রচণ্ড বেদনা অনুভব করেন, যা নিয়ে প্রাত্যহিক জীবনযাপন করা তাদের পক্ষে অসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। গবেষণায় দেখা যায়, এর উপশমে ইবুপ্রোফেন ও মেনেফেমিক এসিড জাতীয় ওষুধের তুলনায় আদা অনেক ভালো কাজ করে। তাই যেসব মহিলা মাসিকের সময় অসহনীয় ব্যথায় ভোগেন, তাদের জন্য আদা চা হতে পারে একটি অনন্য ওষুধ!