চীনা সরকারবিরোধী আন্দোলনে উত্তাল হংকং
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ১০:৩৫ এএম, ৩ জুলাই ২০১৯ বুধবার
ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে হংকং। বিতর্কিত প্রত্যর্পণ আইন বাতিলের দাবিতে গেল মাসে আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়েছিল হংকং। গতকাল সোমবার ছিল চীনের কাছে হংকং হস্তান্তরবার্ষিকী। এই দিবসটি উপলক্ষে সোমবার সকাল থেকেই রাজপথে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে হংকংয়ের হাজার হাজার গণতন্ত্রকামী মানুষ।
এদিন বিক্ষোভকারীরা হংকং শহর দীর্ঘ সময় ধরে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে তারা পার্লামেন্টের সামনে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ দেখায়। শতশত বিক্ষোভকারী কালো পোশাক পরে এবং কালো মুখোশে মুখ ঢেকে প্রতিবাদে সামিল হয়। তাদের মাথায় ছিল কালো টুপি। বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী হঠাৎ লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের কাচের দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ নামানো হয়েছিল। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর হংকং পুলিশ বিক্ষোভকারীদের থেকে পার্লামেন্ট পুনরুদ্ধার করে।
দীর্ঘ দেড়শো বছর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনে থাকার পর লিজ চুক্তির মেয়াদ শেষে ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই অঞ্চলটি চীনের কাছে ফেরত দেওয়া হয়েছিল। এদিন সেই প্রত্যর্পণ দিবসের ২২ বছর পূর্তিতে আন্দোলনে নামেন গণতন্ত্রকামী মানুষ। বর্তমানে হংকং চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হলেও ২০৪৭ সাল পর্যন্ত অঞ্চলটির স্বায়ত্তশাসনের নিশ্চয়তা রয়েছে। কিন্তু সেই আইনকে উপেক্ষা করে জুন মাসে হংকংয়ের বর্তমান চীনাপন্থী শাসক ক্যারি ল্যাম একটি প্রত্যর্পণ বিল আনেন। অপরাধী প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত প্রস্তাবিত ওই বিলের বিপক্ষে হংকং জুড়ে গণবিক্ষোভ শুরু হয়।
গণতন্ত্রকামী মানুষের দাবি, বেইজিংয়ের শাসক কমিউনিস্ট দলের কাজে আদৌ সন্তুষ্ট নন হংকংয়ের মানুষ। অভিযোগ, শাসক কমিউনিস্টদের কাছে মানবাধিকারের কোনো মূল্য নেই। তাই কোন অপরাধীকেই চীনের হাতে তুলে দেওয়া ঠিক হবে না। তাছাড়া এই প্রত্যর্পণ বিল পাস হলে হংকংয়ের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে চীনের হস্তক্ষেপের সুযোগ আরও বাড়বে। সেক্ষেত্রে স্বায়ত্তশাসনের অধিকার অর্থহীন হয়ে দাঁড়াবে। এই জনবিরোধী বিল বাতিল করার দাবিতে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখান হংকংয়ের সাধারণ মানুষ।
এদিকে, দেশটির পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তাড়াছা, আইনসভা ভবন ঘিরে থাকা বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করেছে। লাখ লাখ বিক্ষোভকারী লেজিসলেটিভ কাউন্সিল বা লেজকো ভবনের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করার সময় দাঙ্গা পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ও মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে।
এ ব্যাপারে গার্ডিয়ান জানিয়েছে, হংকংয়ের চীনপন্থি নেতাদের সহায়তায় চীন দেশটির স্বাধীনতা ও সংস্কৃতি কেড়ে নিতে পারে আশঙ্কাতেই আসলে এই আন্দোলন এমন রূপ নিয়েছে।