বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১   ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সাফল্যের কারণেই অপরাধবোধ ও অশান্তি বাড়ে!

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০২:৫৬ পিএম, ৩ জুলাই ২০১৯ বুধবার

সফল মানুষের বিপদ পদে পদে! অনেকেই ভাবতে পারেন, সফল মানুষ মানেই চিরসুখী? সব উদ্বেগের ঊর্ধ্বে? একেবারেই তা নয়। চাটুকারদের দৌলতে সাফল্য মাথায় চড়ে গেলে তো কথাই নেই।

মানুষ তখন ভাবতে শুরু করেন, তিনি সব জানেন, সব বোঝেন। সব কিছুতে শেষ কথা সফল বলে তিনিই বলবেন। কিন্তু যখন তা হয় না, মরিয়া হয়ে কাজ হাসিল করার চেষ্টা শুরু করেন। 

মনোবিদের মতে, ‘সাফল্যকে মাথায় চড়তে দেবেন না, কারণ এ কোনো চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নয়। আজ সফল আছেন, কাল নাও থাকতে পারেন। তখন কিন্তু আর কেউ ফিরে তাকাবে না আর আপনি বিপর্যস্ত হবেন শরীরে-মনে। কাজেই সাফল্যের আনন্দ উপভোগ করার পাশাপাশি তার সমস্যাগুলোও বোঝার চেষ্টা করুন ও কীভাবে তার সমাধান করবেন, তা বুঝে নিন।’

সাফল্যের সমস্যা

সাফল্যের জায়গাটি ধরে রাখতে যা যা করতে হয়, তাতে ভাল মতো মানসিক চাপ হতে পারে, হঠাৎ সফল হলে তো বিশেষ করে।

১. সময়ের অভাবে দরকারি কাজ জমতে থাকে৷ মন বিক্ষিপ্ত হয়।

 

২. দূরত্ব বাড়ে কাছের মানুষদের সঙ্গে৷ তখন বোঝা না গেলেও দুর্বল মুহূর্তে গ্রাস করে একাকিত্ব৷

৩. নিজেকে শ্রেষ্ঠ মনে হয়৷ মনে হয় অন্য সবাইও তাই ভাবুক৷ তার প্রভাব পড়ে সম্পর্কে, কাজের জায়গাতেও।

৪. চাটুকারদের মনে হয় বন্ধু৷ ফলে আসল বন্ধুরা হারিয়ে যেতে শুরু করে।

৫. অন্যের প্রবল ঈর্ষার চাপে দিশেহারা হতে হয়।

৬. স্বামী/স্ত্রী বন্ধুত্বের হাত বাড়াতে না পারলে সম্পর্কে ভাঙন ধরে।

৭. চাপ কমাতে ঘুমের ওষুধ বা অন্য কোনো নেশার হাতছানি মন ভোলাতে পারে।

৮. নিত্যনতুন সম্পর্ক তৈরি হতে পারে। তার জেরে দেখা দিতে পারে অপরাধবোধ, সংসারে অশান্তি হতে পারে। টান পড়তে পারে ভাবমূর্তিতেও।

সমস্যার সমাধান

১. কাজের প্রতি নিষ্ঠা যেন না কমে। কেরিয়ারের শুরুতে যতখানি সময় এ বাবদ খরচ করতেন, এখনো প্রায় ততটাই করুন। আগে করতেন উপরে ওঠার তাগিদে। এখন করবেন নিজেকে উন্নত করার দায়ে।

২. সাফল্যের পথে কত দূর এগনো সম্ভব, তা বুঝে সীমারেখা টানুন। এর পর বিচার করুন গ্রোথ রেট। গত বছর এ সময় কোথায় ছিলেন আর আজ কোথায় পৌঁছেছেন। 

 

৩. গ্রোথ রেট কমে গেলে ভাবুন কেন এমন হলো। কারণ পেলে সমাধান করুন। 

৪. আত্মীয়–বন্ধুদের বিপদে পাশে থাকার চেষ্টা করুন৷ তারাও প্রয়োজনে আপনার বিপদে পাশে থাকবে।

৫. পরিবারের সঙ্গে যেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন না হয়। মাঝেমধ্যে ফ্যামিলি গেট–টুগেদার করে নিজের অবস্থান যাচাই করে নিন।

৬. সাফল্যের চাপে নিজের আনন্দের জায়গাগুলেঅকে হারিয়ে ফেলবেন না। গান শোনা, বেড়ানো, বই পড়া, প্রিয় মানুষদের সঙ্গে সময় কাটানো। কেরিয়ারের নিম্নগতির সময় যার সাহায্যে ভাল থাকতে পারবেন।

৭. পা যেন মাটিতে থাকে। প্রতি মুহূর্তে নিজের দোষ-ত্রুটি, ভাল-মন্দ খুঁজে শুধরে নেয়ার মনোভাব থাকলে পতনের আশঙ্কা কম।

৮.কে আসল বন্ধু আর কে চাটুকার সেটা বোঝাও জরুরি। চোখ–কান খোলা রেখে চলুন। সাফল্যে যেন মাথা ঘুরে না যায়৷