বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

যার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করতে মন্ত্রী-শিল্পপতিরা ছিল পাগল

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১০:৪৪ এএম, ৫ জুলাই ২০১৯ শুক্রবার

নাম ছিল তার মাতা হারি। পেশায় ছিলেন মক্ষিরাণী। তার রূপের ঝলকে যে কউ কাত হয়ে পড়তেন। আর তার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, জেনারেল ও শিল্পপতিরা উন্মুখ হয়ে থাকতেন।

একশ বছর আগেই গুলি করে হত্যা করা হয় মাতা হারির নামে ইউরোপের ওই নারীকে। আর এ নারীই ছিলেন ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত গুপ্তচর।

ইউরোপের রাজধানীগুলো বিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে ছিল মাতা হারির জন্য পাগল। মন্ত্রী থেকে শুরু করে শিল্পপতি, সেনাধ্যক্ষরা ছিলেন তার জন্য পাগল। তবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে সরকারি গোয়েন্দারা বুঝতে পারেন, ওই নারীকে গুপ্তচর হিসেবে রাখলে মন্দ হয় না। তাকে গুপ্তচর বানোনো হয়। 

 

জার্মানির গুপ্তচর হিসেবে মাতা হারি কাজ করেছেন। যদিও তার প্রকৃত নাম নাম মার্গারেট জেল। জন্ম নেদারল্যান্ডে, ১৮৭৬ সালে।

যুদ্ধের সময় বিপইত্ত বেঁধে যায় জার্মান সামরিক কর্মকর্তা আরনল্ড ভন কাল্লের পাঠানো একটি টেলিগ্রামে। কারণ, ওই টেলিগ্রাম ফরাসি গোয়েন্দারা ধরে ফেলে। 

তাতে লেখা ছিল, 'এজেন্ট এইচ টুয়েন্টিওয়ান' নামে একজনের কথা। গোয়েন্দাদের কাছে এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে এজেন্ট এইচ টুয়েন্টিওয়ান আসলে মাতা হারির। ফলে সুন্দরী ওই নারীকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়।

১৫ অক্টোবর সকালে প্যারিসের সেন্ট লাজার কারাগার থেকে তাকে একটি সামরিক গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় শহরের উপকণ্ঠে শ্যাতো দু ভিসেনেস এলাকায়। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন দু'জন নান আর তার আইনজীবী।

 

সেখানে মাটির দেয়ালের সামনে একটি খুঁটি পোঁতার পর মাতা হারিরকে দাঁড় করানো হয়। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় ৪১ বছরের মাতা হারির পরনে ছিল লম্বা কোট আর মাথায় ছিল চওড়া কিনারওয়ালা ফেল্টের টুপি। মাতা হারি ওই সময় তার চোখ বাঁধতে দেননি। এক হাত বাঁধার পর অন্য হাত দিয়ে নিজের আইনজীবীকে বিদায় জানান।

এরপর মাতা হারিরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। সেনাদের বন্দুকের গুলির শব্দের পরপরই মাতা হারির হাত বাঁধা অবস্থায় ঢলে পড়েন। এরপর একজন সেনা কর্মকর্তা রিভলভার হাতে মাতা হারির মাথায় একটি গুলি করেন।

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর কেউ তার মরদেহ নিতে আসেনি। কাজেই মরদেহ দিয়ে দেয়া হয় প্যারিসের মেডিকেল স্কুলে। যেন ছাত্রদের কাটাছেঁড়ার প্রশিক্ষণে ব্যবহার করা যায় হারির মরদেহ।

তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দৃশ্যের একটি ছবিও আছে। তবে অনেকেই বিশ্বাস করেন না যে, এ ছবি সে সময়ের।