মাদক খাইয়ে গাড়ির মধ্যে ধর্ষণ অভিনেত্রীকে!
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৩:২৪ পিএম, ৫ জুলাই ২০১৯ শুক্রবার
আপাতত স্বস্তি আদিত্য পাঞ্চোলির। একটি ধর্ষণের মামলায় মঙ্গলবার মুম্বাই সিটি সিভিল সেশন কোর্ট তাকে অন্তর্বর্তী জামিন দেয়। পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ১৯ জুলাই। এক অভিনেত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে সম্প্রতি আটক করা হয় তাকে।
বলিউডের প্রথম সারির ওই অভিনেত্রী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, ১৭ বছর বয়সে তিনি ধর্ষিতা হন। বুধবার সেই মামলার শুনানিতে আদিত্যর আইনজীবী বলেন, ১৫ বছর পর এই অভিযোগ করার কোনো অর্থ হয় না।
মুম্বইয়ের ভরসোভা থানায় আড়াই পাতার একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বলিউডের প্রথম সারির এই অভিনেত্রী। সেখানে তিনি অভিযোগ করেছেন, ২০০৪ সালে অনেক স্বপ্ন নিয়ে মুম্বাইয়ে পা রাখেন। বয়স ছিল ১৭ বছর। মেয়েদের একটি হোস্টেলে থাকতেন। সেই বছরই তার পরিচয় হয় আদিত্যর সঙ্গে। তখন তার বয়স প্রায় ৩৮। বিবাহিত আদিত্যর তখন দু’টি সন্তান ছিল। এমনকি তার মেয়ে ওই অভিনেত্রীর বয়সী।
অভিনেত্রী লিখেছেন, সেই সময় আদিত্য পাঞ্চোলির সঙ্গে একটি পার্টিতে যান। একটি পাণীয় খাওয়ার পরই তার ঝিমুনি শুরু হয়। পার্টি শেষ হওয়ার পর আদিত্য পাঞ্চোলি তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। সেই মতো তারা দু’জনে গাড়িতে ওঠেন। ইয়ারি রোডের কোনো একটি জায়গায় গাড়ি থামিয়ে দেন আদিত্য। এরপর ধর্ষণ করেন অভিনেত্রীকে। এমনকি সেই অবস্থায় অভিনেত্রীর ছবিও তুলে রাখেন আদিত্য। ছবি তুলে রাখার বিষয়টি তিনি জানতেনও না।
পরের বার যখন দু’জনের দেখা হয়, আদিত্য অভিনেত্রীকে বলেন তাদের স্বামী-স্ত্রীর মতো সম্পর্কে থাকা উচিত। অভিনেত্রী তাকে বলেন, আদিত্য তার বাবার বয়সী। তিনি এমন একজনকে বিয়ে করতে চান যে তার বয়সের। তারপরই আদিত্য তাকে গাড়িতে ধর্ষণ করার পর যে ছবিগুলি তুলে রেখেছিলেন সেগুলি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করতে থাকেন। বলেন, ছবিগুলি সবাইকে দেখিয়ে দেবেন। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তিনি তখন অল্প বয়সী, মুম্বাইয়ে কাউকে চিনতেন না। সেই সুযোগ নেন আদিত্য।
অভিনেত্রী তার অভিযোগে আরো জানিয়েছেন, ২০০৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তাকে বিভিন্ন জায়গায় রেখেছিলেন আদিত্য। প্রতিবার অভিনেত্রীর অজান্তে পানীয়র সঙ্গে মাদক মিশিয়ে ধর্ষণ করতেন আদিত্য। ছবিও তুলে রাখতেন পরে ব্ল্যাকমেল করার জন্য। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে একবার পুলিশে অভিযোগ জানাতে যাচ্ছিলেন অভিনেত্রী। রাস্তায় অটোরিক্সা আটকে অভিনেত্রীকে মারধর করেন অদিত্য। এক পথচারী তাকে উদ্ধার করেন আদিত্যর হাত থেকে। সেই সময় অভিনেত্রীর সঙ্গে সিনিয়র পুলিশ অফিসার বিপিন বিহারীর সঙ্গে দেখা হয়। তাকে বিষয়টি জানান। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।
এরপর অভিনেত্রী বাড়ি পরিবর্তন করেন। কিন্তু ২০০৬-২০০৭ সালে নাগাদ ভরসোভাতে একটি ফ্ল্যাট কেনার পরও নিস্তার মেলেনি আদিত্যর হাত থেকে। সেখানেও পৌঁছে যান আদিত্য। এমনকি ডুপ্লিকেট চাবি বানিয়ে নেন। একদিন ঘরে সব জিনিসপত্র ভাঙচুর করে সব চাবি কেড়ে নিয়ে অভিনেত্রীকে তালা বন্ধ করে চলে যান অদিত্য।
এরপর যখন অভিনেত্রী ধীরে ধীরে পরিচিতি পেতে শুরু করেন, বলিউডে পায়ের তলার মাটি শক্ত হয়, তখন ফের ব্ল্যাকমেল করতে আরম্ভ করে আদিত্য। পুরনো সেই সব ছবির কথা তুলে ফের টাকা দাবি করতে শুরু করেন।
অভিনেত্রী ভরসোভা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন আদিত্যর বিরুদ্ধে। গত ১২ মে আদিত্যর বয়ান রেকর্ড করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আপাতত ১৯ জুলাই পর্যন্ত আদিত্যকে গ্রেফতার না করার কথা বলেছে আদালত।