নতুন ডেঙ্গুতে বাড়ছে মৃত্যুর ঝুঁকি
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০২:০৮ পিএম, ৬ জুলাই ২০১৯ শনিবার
দেশে নতুন ধরনের ডেঙ্গু গত বছর থেকেই দেখা দিয়েছে। তবে প্রথম বছরে এর প্রকোপ কম থাকলেও দ্বিতীয় অর্থাৎ চলতি বছরে এসে এ সেরোটাইপ-৩ (শক সিনড্রোম) ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সম্প্রতি এ টাইপের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে খোদ রাজধানীতেই বেশ কয়েকজন মারা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. এ কে এম শামসুজ্জামান ডেঙ্গু সংক্রান্ত এ তথ্যের সত্যতা স্বীকার করেছেন।
তিনি জানান, এতদিন বাংলাদেশে ডেঙ্গু সেরোটাইপ-১ ও সেরোটাইপ-২-এর প্রকোপ ছিল। প্রথমটি সাধারণ ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু। দ্বিতীয়টি ঝুঁকিপূর্ণ হেমোরেজিক (রক্তক্ষরণ) ডেঙ্গু। তবে এবার সেরোটাইপ-৩ (শক সিনড্রোম) ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি।
এছাড়া ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু রোগী দ্বিতীয়বার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে হেমোরেজিক ডেঙ্গু দেখা দেয় জানিয়ে তিনি বলেন, এ ধরনের রোগীর ক্ষেত্রে শরীরের ভেতর বা বাইরে রক্তক্ষরণ হয়।
তিনি বলেন, গত বছর থেকে ডেঙ্গুর নতুন ধরন (সেরোটাইপ-৩) দেখা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে রোগীদের ইন্টারনাল রক্তক্ষরণের পাশাপাশি শক সিনড্রোম দেখা দেয়। এটা শুরুতেই জানা না গেলে রোগীদের মৃত্যুঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়।
নতুন ধরনের ডেঙ্গুতে যেসব উপসর্গ দেখা দেয় তা হলো, শ্বাস-প্রশ্বাসে অসুবিধা হওয়া, শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বেড়ে যাওয়া, ত্বক শীতল হয়ে যাওয়া, অবিরাম অস্বস্তি, ত্বকের ভেতরের অংশে রক্তক্ষরণের কারণে ত্বকের ওপরের অংশে লাল ছোপ সৃষ্টি হওয়া। এছাড়া বমি, মল কিংবা প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, প্রচণ্ড পেটব্যথা ও অনবরত বমি হওয়া, নাক ও দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ ও অবসাদ ইত্যাদি।
কোনো ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর এমন উপসর্গ দেখা দিলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন অধ্যাপক ডা. এ কে এম শামসুজ্জামান।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও নিয়ন্ত্রণ কক্ষের রেকর্ড অনুযায়ী, এ বছর জানুয়ারিতে ৩৮ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৮, মার্চে ১৭, এপ্রিলে ৫৮, মে’তে ১৯৩, জুনে ১ হাজার ৬৯৯ এবং গত তিন দিনে ২৫৪ জন রোগীসহ চলতি বছর এ পর্যন্ত মোট ২ হাজার ২৭৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন তিনজন।