স্বাধীনতার ইতিহাস ছড়িয়ে দিতে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৮:৩৮ এএম, ৭ জুলাই ২০১৯ রোববার
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার ইতিহাস প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। সেই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সোনার বাংলা গড়ার প্রক্রিয়ায়ও অবদান রাখতে হবে মুক্তিযোদ্ধাদের।
তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারাই জাতির সূর্য সন্তান, আর স্বাধীনতা বাঙালির জাতীয় জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন।
শনিবার ঢাকায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনষ্টিটিউট মিলনায়তনে দেশ বরেণ্য কৃতি সন্তান মুক্তিযোদ্ধা, সেক্টর কমান্ডার, শিল্পী ও গুণিজনদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
স্পিকার বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারাই জাতির সূর্য সন্তান, আর স্বাধীনতা বাঙলীর জাতীয় জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন। ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনেন ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মিঞা মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান।
স্পিকার বলেন,বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক এবং অবিচ্ছেদ্য। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন আপোষহীন নেতা। দীর্ঘ ২৩ বছর অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে গিয়ে বারংবার কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে নির্বাসিত হয়েছেন, তবুও মাথা নত করেননি। জনগণের মুক্তির লক্ষ্যে লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে ছিনিয়ে এনেছিলেন বাংলার স্বাধীনতা। বাংলাদেশকে উপহার দিয়েছেন বিশ্ব সেরা অনন্য সংবিধান। কারও দান কিংবা অনুকম্পা নয়, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলার এই স্বাধীনতা। জনগণের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠাই ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির মূল দর্শন।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে নারী মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানও অনস্বীকার্য। স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস নব প্রজন্মকে জানাতে হবে, তবেই তারা মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপস্থিতিতে যুগ যুগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার ইতিহাসের ধারণ ও লালন করে গৌরবময় স্বাধীনতাকে সমুজ্জ্বল রাখতে পারবে।
ড. শিরীন শারমিন বলেন,বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়ন তথা ক্ষুধা, দারিদ্র ও বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তার চৌকস নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। এরই মধ্যে বাংলাদেশ নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। ২০২৪ সালের মধ্যে পরিপূর্ণ উন্নয়নশীল দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ তথা অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের মাধ্যমে সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়াই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রধান লক্ষ্য।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে অত্যন্ত আন্তরিক। ২০১৯-২০ অর্থ বছরের বাজেটে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা বৃদ্ধি তারই প্রতিফলন। ভবিষ্যতেও মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে যথাযথ পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) হেলাল মোর্শেদ খান,বীর বিক্রম,সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত)কে এম শফিউল্লাহ বীর উত্তম,নাট্য সংগঠক রামেন্দু মজুমদার, অধ্যাপক ড. ইনামুল হক, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের কল্যাণ ও পূনর্বাসন বিষয়ক মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন মিয়া, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাধীন বাংলা মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় ফাউন্ডেশনের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা এ বি এম সুলতান আহমেদ।
অনুষ্ঠানে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সন্মাননা দেয়া হয়। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছ থেকে সম্মাননা গ্রহণ করেন সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান,সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত))কে এম শফিউল্লাহ বীর উত্তম,নাট্য সংগঠক রামেন্দু মজুমদার, অধ্যাপক ড. ইনামুল হক, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সংগীত শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল ও রায়ান বিন মুরাদ।
এছাড়া সংগঠনের পক্ষ থেকে স্পিকারকে ক্রেস্ট উপহার ও উত্তরীয় পরিয়ে দেয়া হয়।