রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ফের অগ্নিসংযোগ
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ১০:২৬ এএম, ৭ জুলাই ২০১৯ রোববার
মিয়ানমারের সংঘাতপূর্ণ প্রদেশ রাখাইনে ফের স্থানীয়দের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। শুক্রবার প্রদেশটির রাথেডং ও আমিয়েত তাং টাউনশিপের স্থানীয় বাসিন্দারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম রেডিও ফ্রি এশিয়া জানায়, বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের সময় বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। তবে হামলার শিকার ব্যক্তিরা রোহিঙ্গা কিনা নির্দিষ্ট করে তা উল্লেখ করা হয়নি।
এদিকে, বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার চাপে কক্সবাজারের আশ্রয় শিবিরের অবস্থা সংকটপূর্ণ ও মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এরমধ্যেই, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার বিষয়ে তদন্ত শুরু করতে একটি প্রস্তাব পাস করেছে নেদারল্যান্ডসের পার্লামেন্ট।
রাখাইনে দু’সপ্তাহ আগে নিরাপত্তার অজুহাতে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়ার পর থেকে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে আসছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। শুক্রবারও আরাকান আর্মির সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলি হয়। এরপরই মিয়ানমার সেনারা রাথেডং ও আমিয়েত তাং এলাকায় নির্বিচারে স্থানীয়দের ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে জানায় সেখানকার বাসিন্দারা।
গোলাগুলি ও গ্রামে অগ্নিসংযোগের বিষয়টি রেডিও ফ্রি এশিয়াকে নিশ্চিত করেছেন রাথেদাং ও পোন্যাগ্যুনের সংসদ সদস্য খিন মং। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামের এক শিক্ষক জানান, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এখনো হতাহতের খবর পাওয়া না গেলেও বাস্তুচ্যুত হয়ে অনেকে খোলা আকাশের নিচে জীবন যাপন করছে। পালিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে আরো অনেকে। তবে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দাবি আরাকান আর্মির ছোঁড়া বোমা থেকেই আগুনের ঘটনা ঘটেছে।
একইরকমভাবে ২০১৭ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। তবে রোহিঙ্গাদের চাপে পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি কক্সবাজারের আশ্রয় শিবিরের অবস্থা অত্যন্ত সংকটপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সেখানকার পরিস্থিতি ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। শুক্রবার জেনেভায় সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার মুখপাত্র বলেন, বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার চাপে পরিবেশ বিপর্যয় ও ভূমিধ্বস ঠেকাতে আশ্রয় কেন্দ্রের ২শ হেক্টর জমিতে বনায়ন করবে জাতিসংঘ।
এরমধ্যেই, রোহিঙ্গা গণহত্যায় মিয়ানমারকে দায়ী করে এর উন্মুক্ত তদন্তে ডাচ পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব পাস করা হয়েছে। নেদারল্যান্ডসের নিম্নকক্ষে পাস হওয়া ঐ প্রস্তাবে সরকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধে আদালতে তদন্ত শুরুর বিষয়েও আহ্বান জানান পার্লামেন্ট সদস্যরা।