ইসলামে সন্তানের অধিকার
নিজস্ব প্রতিবেদন
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৩:১২ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার
দুধপান করানো-
মাতার ওপর দায়িত্ব হলো দু’ বছর সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো। আর পিতার দায়িত্ব হলো মাতার জন্য এরূপ দুগ্ধদানের যথাযোগ্য ব্যবস্থা করা। ছয় মাস বয়স থেকেই শিশুকে অন্যান্য (শক্ত ও নরম মিশ্রিত) খাদ্য গ্রহণে অভ্যস্ত করতে হবে যেন দু’বছরের মধ্যে তাকে বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করা যায়, কেননা আল্লাহ তাআলা বলেন, “যে সকল মায়েরা, দুধপান করানোর সময়টি পূর্ণ করতে চায়, তারা তাদের সন্তানদেরকে পূর্ণ দু’বছর বুকের দুধ খাওয়াবে আর পিতার ওপর দায়িত্ব হলো যথাবিধি তাদের (মা ও শিশুর) ভরণপোষণ করা।” (সূরা বাকারা- ২৩৩)
সৎ সন্তান গড়া-
মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, “হে বিশ্বাসীগণ! তোমারা নিজেদেরকে এবং পরিবারকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা কর।” (সূরা তাহরীম- ৬)
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমাদের সন্তানদের বয়স ৭ বছর হলে তাদেরকে নামাজ আদায়ের আদেশ কর। আর ১০ বছর বয়স হলে তাদেরকে শাসন করবে এবং তাদের বিছানা পৃথক করে দিবে।” (সুনানে আবু দাউদ- ১/১৩৩)
সন্তানদেরকে দৈহিক, আত্মিক, মানসিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী, স্বাবলম্বী ও সম্মানিত রুপে গড়ে তোলা পিতা-মাতার মূল দায়িত্ব। প্রথম যে বিষয়টি সন্তানদের মাঝে গড়ে তুলতে হবে তা হলো সততা ও ধার্মিকতা। তারা ইসলামের সঠিক বিশ্বাস, কর্ম ও আচরণ শিখবে ও পালন করবে। স্বার্থপরতা, ধোঁকাবাজী, মুনাফিকী, বক-ধার্মিকতা সৃষ্টি, অকল্যাণ ইত্যাদি যে সকল বিষয় আল্লাহ তাআলা নিষেধ করেছেন তা ঘৃণা করাবে এবং বর্জন করবে।
কর্মঠ সন্তান গড়া-
সন্তান প্রতিপালনের ক্ষেত্রে অন্যতম বিষয় হলো তাদেরকে শক্তিশালী রূপে গড়তে হবে। ঈমানের শক্তি, মনের শক্তি, দেহের শক্তি সকল দিক থেকেই শক্তিশালী হয়ে গড়ে উঠবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, শক্তিশালী মুমিন আল্লাহর কাছে দূর্বল মুমিনের চেয়ে শ্রেষ্ঠতর ও প্রিয়তর। (সহীহ মুসলিম- ৪/২০৫২)
আগের পর্ব পড়তে : ইসলামে সন্তানের অধিকার (১ম পর্ব)
খেলাধুলা-
সন্তানদের দৈহিক ও মানসিক বিকাশ ও শক্তি অর্জনের জন্য তাদের শরীর চর্চামূলক খেলাধুলা করাতে ইসলামে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। বিশেষত তীর নিক্ষেপ, ঘোড়ার পিঠে আরোহণ, সাঁতার ইত্যাদি খেলাধুলা বিশেষভাবে নবী (সা.) ও সাহাবীগণ করতেন।
আয়েশা (রা.) বলেন, হাবশীগণ (ইথিওপিয়াবাসী) লাঠি, বল্লম, বর্শা ইত্যাদি নিয়ে খেলা করছিল। উমর (রা.) তাদের এই খেলায় আপত্তি করলে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “উমর! তুমি ওদের খেলতে দাও।” এরপর নবী (সা.) ক্রীড়ায়তদেরকে বলেন, “হে হাবশিগণ! তোমরা খেল, যেন ইহুদি খ্রিস্ট্রানরা জানতে পারে যে, আমাদের ধর্মের মধ্যে প্রশস্ততা আছে। আমি প্রশস্ত দ্বীনে ন্যায়বরণকারীসহ প্রেরিত হয়েছি।” (সহীহ বুখারী- ১/৩২৩, ৩৩৫, সহীহ মুসলিম- ২/৬০৯)
সাহাবি উকবা বিন আমীর (রা.) বলেন, “রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা তীর নিক্ষেপ কর এবং ঘোড়ায় আরোহণ কর, ঘোড়ায় আরোহণ করার চেয়ে তীর নিক্ষেপ করা আমার নিকট বেশি প্রিয়। (সুনানে তিরমিযী- ২/১৭৪, সুনানে নাসায়ী- ৬/২২২)