ইসলামে সন্তানের অধিকার-১
নিজস্ব প্রতিবেদন
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৩:১৪ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার
জগত সংসারে মানুষের প্রিয়তম বস্তু ও হৃদয়ের অন্যতম আনন্দ যেমন সন্তান-সন্তানাদি, আখেরাতের জীবনেও তেমনি মানুষের সাথী ও আনন্দ এই সন্তান-সন্তানাদি। কুরআন কারীমে একাধিক স্থানেঘোষণা করা হয়েছে যে, জান্নাতে মুমিনগণ তাদের সন্তানদের সাহচর্য উপভোগ করবেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন, যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের সন্তান-সন্তানাদি যারা ইমানের বিষয়ে তাদের অনুগামী হয়েছে, তাদের সন্তান-সন্তানাদিকে তাদের সাথে মিলিত করাব এবং তাদের কর্মফল কিছু কম করা হবে না। (সুরা তুর- ২১)
সন্তানদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে সত্যিকারের আনন্দের উৎস বানাতে আমাদের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। এজন্য কুরআন ও হাদীসে সন্তানদের প্রতি পিতা-মাতার কর্তব্য ও দায়িত্ব বিশেষরুপে উল্লেখ করা হয়েছে। সন্তানের প্রতি পিতা-মাতার প্রাথমিক দায়িত্বগুলোর অন্যতম হলো-
জন্মের সাথে সাথে সন্তানের কানে আজান দেওয়া-
সাহাবি আবু রাফে’ রা. বলেন, আমি দেখলাম যে, ফাতিমা রা. যখন হাসানকে জন্ম দিলেন তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) হাসানের কানে নামাজের মতো আজান প্রদান করেন। (সুনানে আবুদাউদ-৪/৩২৮, সুনানে তিরমিযী- ৪/১৭)
তাহনিক করা ও নাম রাখা-
আমাদের সমাজে সন্তানদের “ভাতমুখে” দেওয়ার রীতি আছে। তা ইসলামী রীতি নয়। ইসলামে যে রীতি নবী (সা.) প্রচলন করেছেন তা হলো নবজাতক শিশুর জন্মের কয়েকদিনের মধ্যে কোনো নেককার বুজুর্গের (দাদা, দাদি, নানা, নানি, ইমাম) নিকটে নিয়ে শিশুর মুখের মধ্যে চিবানো খেজুর বা মধু বা অনুরূপ কোনো মিষ্টি খাদ্য দ্রব্য ছোঁয়ানো। একে তাহনীক বলা হয়।
সাহাবী আবু মুসা আশ-আরী রা. বলেন, আমার একটি পুত্র সন্তান জন্মালে আমি তাকে নিয়ে নাবী (সা.) এর কাছে গেলাম। তিনি তার নাম রাখলেন ইব্রাহীম। অতপর খেজুর চিবিয়ে তার মুখে দিলেন এবং তার জন্য দু’আ করে আমার কাছে ফিরিয়ে দিলেন। (সহীহ বুখারী হা- ৭১/১-৫৪৬৭)
আকিকা করা-
জন্মের ৭ম দিনে নবজাতকের শরীরের ময়লা পরিষ্কার করা, চুল কাটা, চুলের ওজনের সমপরিমাণ রৌপ্য দান করা এবং তার পক্ষ হতে মেষ বা ছাগল আকিকা হিসেবে জবেহ করা। কেননা- নবী (সা.) বলেছেন, প্রত্যেক শিশু তার আকীকার বিনিময়ে বন্ধক থাকে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস- ২১/২৮৩৮)
উম্মে কুরয রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, আকিকা ছেলের পক্ষ থেকে সমবয়স্ক দুটি বকরী এবং মেয়ের পক্ষ থেকে একটি বকরী জবেহ করতে হবে। ( সুনানে আবুদাউদ হাদিস- ২১/২৮৩৬)
নবজাতক ছেলে সন্তানের পক্ষ হতে একটি করে বকরী আকীকা করা যাবে। সাহাবী ইরনু আব্বাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) হাসান ও হুসাইন রা. পক্ষ থেকে একটি করে বকরী আকীকা করেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস- ২১/২৮৪১)
খতনা করানো-
ইবনে আব্বাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) হাসান ও হুসাইনের জন্য তাদের আকিকা করেন এবং সপ্তম দিনে খতনা করান। (বাইহাকী শুআবুল ঈমান- ৬/৩৯৪)